পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ নারী-পুরুষ নির্বিশেষে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে কোন শিশু ও নারী নির্যাতনের শিকার না হয়। কেবল আমাদের দেশে নয়, আমরা উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও দেখেছি যে, শিশু ও নারীদের ওপর নির্যাতন মানসিক রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ছে। তাই নারী-পুরুষ প্রত্যেককেই সচেতন থাকতে হবে, যাতে কোন শিশু ও নারী নির্যাতিত না হয়। বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে যাতে শিশু ও নারীরা সুরক্ষিত থাকে।
গতকাল রাজধানীতে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বেগম রোকেয়া দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত রোকেয়া পদক-২০১৯ বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, মূলত পুরুষরাই নারীদের ওপর নির্যাতন চালায়। তাই তাদের চিন্তা করা উচিত যে, তাদেরও মেয়ে শিশু রয়েছে এবং তাদের সন্তান যদি অন্য কারো দ্বারা নির্যাতিত হয় তাহলে তারা কী করবে। সে কারণেই এ ব্যাপারে সচেতনতা খুবই জরুরি।
নারী পুনর্জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের ১৩৯তম জন্ম এবং ৮৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সারাদেশে বেগম রোকেয়া দিবস পালিত হচ্ছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা। মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার স্বাগত বক্তৃতা এবং রোকেয়া পদক বিরণ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
রোকেয়া পদক গ্রহণকারীদের পক্ষে বেগম সেলিনা খালেক পদক গ্রহণের অনুভূতি প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নারী ও সামাজিক উন্নয়নে তাদের অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিতে পাঁচজন নারীকে রোকেয়া পদক-২০১৯ প্রদান করেন। পদকপ্রাপ্তরা হচ্ছেন বেগম সেলিনা খালেক, অধ্যক্ষ শামসুন নাহার, ড. নূরুন নাহার ফয়জুন্নেছা (মরণোত্তর), মিস পাপড়ি বসু এবং বেগম আখতার জাহান।
শিশু ও নারী নির্যাতন রোধে সরকারের বিভিন্ন আইন প্রণয়নের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের নির্যাতন বন্ধে আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়, এজন্য সচেতনতা আবশ্যক। আমরা আইন করেছি। কিন্তু আইন করলেই সবকিছু হয়ে যায় না। এজন্য শিশু ও নারী নির্যাতন বন্ধে সচেতনতাও প্রয়োজন।
শেখ হাসিনা বলেন, শিশু ও নারী সমাজের কল্যাণে পারিবারিক সহিংসতা প্রতিরোধ আইন, যৌতুক প্রতিরোধ আইন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন এবং নারী উন্নয়ন নীতিমালা ও জাতীয় শিশু উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। আইন প্রণয়নের ফলে সাধারণ মানুষ ও মেয়েদের মাঝে সচেতনতা গড়ে উঠছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করছে। বেগম রোকেয়া চেয়েছিলেন একজন নারী যে কোনো রাষ্ট্রের প্রধান হবেন এবং তিনি পুরুষ ও পরিবার ও সমাজের সঙ্গে তালমিলিয়ে এগিয়ে যাবেন এবং সমান অধিকার ভোগ করবেন। তিনি বলেন, আমরা অন্তত এটা বাস্তবায়ন করেছি এবং আমাদের নারী সমাজ এখন বিজয়ীনীর বেশে অন্ধকার থেকে আলোর পথে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ আজ নারী উন্নয়নে বেগম রোকেয়ার সারথী হয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে- একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অগ্রগতি আমাদের ধরে রাখতে হবে। জনসংখ্যার অর্ধেককে বাদ দিয়ে দেশের কাক্সিক্ষত উন্নয়ন সম্ভব নয়। পুরুষ-নারীর সম্মিলিত প্রয়াসে নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে দেশকে আরো এগিয়ে নিতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষায় নারীদের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেয়েরা এখন পরীক্ষায় ছেলেদের তুলনায় ভাল করছে। কারণ, মেয়েরা তাদের লেখাপড়ায় মনোযোগী।
তিনি বলেন, মেয়েদের মাঝে সৃষ্ট আত্মবিশ্বাস এবং তাদের অভিভাবকরা তাদেরকে আরো লেখাপড়ায় উৎসাহ জোগাচ্ছে। এটা সমাজের বিবর্তন ও পরিবর্তনের জন্য হয়েছে। এটা দেশের জন্য একটা খুব ভালো দিক। শেখ হাসিনা বলেন, ক্রীড়াঙ্গনেও মেয়েরা কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখছে। এ প্রসঙ্গে তিনি নেপালে সাউথ এশিয়ান গেমসে ক্রিকেট ও ভারোত্তলনে মেয়েদের স্বর্ণপদক জয়ের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকবে। আমরা সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা নারী সমাজের উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। বঙ্গবন্ধু সমাজের সকল ক্ষেত্রে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও তাদের অবস্থান সুনিশ্চিত করতে ব্যাপক অবদান রেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে সরকার নারী সমাজের কল্যাণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।