পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুবাইয়াত শারমিন রুম্পার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল আবদুর রহমান ওরফে সৈকতের। এই সম্পর্কের ইতি টানতে চেয়েছিলেন সৈকত। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ তৈরি হলে সৈকত তার সহযোগীদের নিয়ে রুম্পাকে সিদ্ধেশ্বরীর সেই বাসার ছাদে নিয়ে যান। এক পর্যায়ে তাকে ওই ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। গ্রেফতারকৃত সৈকতকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এমন সন্দেহ করছে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)।
অন্যদিকে সৈকতকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (সিএমএম) এই আদেশ দেন। এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক শাহ মো. আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আসামি সৈকতকে ঢাকার আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, গত ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী সার্কুলার রোডের ৬৪/৪ বাসার সামনে অজ্ঞাত ২০-২২ বছর বয়সী এক নারী উপুড় অবস্থায় পড়ে ছিলেন। তখন স্থানীয় লোকজন লাশটি ওড়না দিয়ে ঢেকে রাখেন। অজ্ঞাত আসামি ওই নারীকে ঘটনাস্থলের আশপাশের তিনটি ভবনের যেকোনো একটি ভবন থেকে নিচে ফেলে দেন বলে মামলায় বলা হয়। এরপর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
পুলিশ প্রথমে মামলাটি তদন্ত করলেও পরবর্তী সময়ে তদন্তভার ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তকালে অজ্ঞাত ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়। ওই নারীর নাম রুবাইয়াত শারমিন। তিনি স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। আর আসামি সৈকত ওই ইউনিভার্সিটির বিবিএর ছাত্র ছিলেন। সেই সুবাদে শারমিনের সঙ্গে আসামির ভালো সম্পর্ক ছিল বলে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে স¤প্রতি তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। গত ৪ ডিসেম্বর রাতে আসামি সৈকত ও তার সহযোগী অজ্ঞাত আসামিরা শারমিনকে হত্যা করে বাসার ছাদ থেকে ফেলে দেন বলে প্রাথমিকভাবে জোর সন্দেহ করা হচ্ছে। রাষ্ট্রপক্ষে সরকারি কৌঁসুলি হেমায়েত উদ্দিন খান আদালতকে বলেন, এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য আসামি সৈকতকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আব্দুল হামিদ ভূঁইয়া রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, এক সপ্তাহ আগেই আসামির বাবা মারা গেছে। তারও সপ্তাহ খানেক আগে তার চাচা মারা যান। ঘটনার পর ডিবি পুলিশ ফোন করে ডাকলে সৈকত সেখানে উপস্থিত হয়। সে সাদা মন নিয়ে ডিবি অফিসে যায়। অথচ এই ঘটনায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। সদ্য বাবা হারানোর এক সপ্তাহের মধ্যে একটা ছেলের পক্ষে এ ধরনের হত্যাকান্ড ঘটানোর মতো মানসিক অবস্থা থাকাটা অস্বাভাবিক। তাছাড়া এই মেয়ের যন্ত্রণায়ই স¤প্রতি সে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে পড়াশোনার জন্য অন্যত্র ভর্তি হয়েছে। তাছাড়া এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনও নিশ্চিত নয়। এ অবস্থায় তার রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি।
আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে আসামিকে চার দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন।
লাশ উদ্ধার হওয়ার পর রুম্পার পরিচয় জানা গেলে তার সতীর্থ স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, রুম্পা হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আন্দোলনও করছেন শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে শনিবার ৭ ডিসেম্বর রাতে সৈকতকে আটক করে ডিবিতে নেয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রোববার তাকে রমনা থানার মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
রিমান্ড শুনানির জন্য বিকেল তিনটার পরপর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মামুনুর রশিদের আদালতে হাজির করা হয় সৈকতকে। আদালতের এজলাসে তাকে নির্বিকার ও স্বাভাবিক দেখাচ্ছিল। শুনানির আগে আইনজীবীদের প্রশ্নের জবাব দেওয়ার সময় তার মধ্যে কোনো বিষন্নতা ছিল না।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীর এক প্রশ্নের জবাবে সৈকত বলেন, চার-পাঁচ মাস ধরে রুম্পার সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক ছিল। সবশেষ ৪ তারিখ রুম্পার সঙ্গে তার কথা হয়। এরপর আমি বাসায় চলে যাই। এই ঘটনায় আমি জড়িত নই এবং ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না।
গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে ঘটনার দিন গত ৪ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে সৈকতসহ রুম্পা ওই ভবনে প্রবেশ করেন। ঘটনা তদন্তে রুম্পার মোবাইল ফোনের কললিস্ট বিশ্লেষণ করা হচ্ছে বলেও জানান গোয়েন্দারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।