পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ ৮ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থান হানাদারদের কবল থেকে মুক্ত হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সরাইল মুক্ত দিবস ৮ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে দিশেহারা পাকসেনারা পালিয়ে গেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এবং সরাইলের জনতা হাসে বিজয়ের হাসি। ওই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্তিযোদ্ধা-জনতা তৎকালীন মহকুমা প্রশাসকের কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। মুক্তিযুদ্ধে পূর্বাঞ্চলীয় জোনের প্রধান জহুর আহমেদ চৌধুরীর নেতৃত্ব এ অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ চলে।
৬ ডিসেম্বর আখাউড়া সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হওয়ার পর মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ দক্ষিণ দিক থেকে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক দিয়ে এবং মিত্রবাহিনীর ৫৭তম মাউন্টের ডিভিশন আখাউড়া-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেললাইন ও উজানীসার সড়ক দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। পাকবাহিনী পালিয়ে যাওয়ার সময় ৬ ডিসেম্বর রাজাকারদের সহায়তায় শহরের চতুর্দিকে শক্ত অবস্থান নেয়া মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর ওপর হত্যাযজ্ঞ চালায়। ওই দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের অধ্যাপক কেএম লুৎফুর রহমানসহ কারাগারে আটক থাকা অর্ধশত বুদ্ধিজীবী ও সাধারণ মানুষকে চোখ বেঁধে শহরের কুরুলিয়া খালের পাড়ে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাকবাহিনীর সদস্যরা কলেজ হোস্টেল, অন্নদা স্কুল বোডিং, বাজার ও গুদামসহ বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ করে। ৭ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে পাকিস্তানী বাহিনীর সদস্যরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহর ছেড়ে আশুগঞ্জের দিকে পালাতে থাকে। ৮ ডিসেম্বর বিনা বাধায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে প্রবেশ করে স্বাধীনতার বিজয় পতাকা উত্তোলন করে। একই দিন সরাইলে মুক্তিযোদ্ধাদের অব্যাহত আক্রমণে পরাস্থ হয়ে হানাদাররা পালিয়ে যায়। শত্রæমুক্ত হয় সরাইল উপজেলাও।
১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর মুক্ত হয় পটুয়াখালী জেলা। অহংকারের তুলিতে আঁকা এ দিনটিকে পটুয়াখালীবাসী পরম শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় অক্ষয় করে রেখেছে। জেলার মুক্তিযোদ্ধা সূর্য সন্তানরা ২২৬ দিন জীবনবাজী রেখে প্রাণান্তর যুদ্ধ করেছে এই দিনটি অর্জনের লক্ষ্যে। আর তাই জেলাবাসীর কাছে আনন্দ-উদ্বেল ও শোক-বিধুর স্মৃতি বিজড়িত এই দিনটি অত্যন্ত সম্মানিত।
৮ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও মিরপুর উপজেলা হানাদারমুক্ত দিবস। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রামের পর ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর দৌলতপুর হানাদার মুক্ত হয়। এই দিনে দৌলতপুরকে শত্রæ মুক্ত করে থানা চত্বরে বিজয় পতাকা উড়ানোর মধ্য দিয়ে মুক্তিকামী বীর সন্তানেরা। দৌলতপুরকে হানাদার মুক্ত করতে ৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েকশ’ নারী-পুরুষ শহীদ হন। সবচেয়ে বড় যুদ্ধ সংঘঠিত হয় উপজেলার ধর্মদহ ব্যাংগাড়ী মাঠে। এ যুদ্ধে প্রায় সাড়ে ৩শ’ পাকসেনা নিহত হয়। শহীদ হন ৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ৩ জন ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সদস্য। ৮ ডিসেম্বর সকালে আল্লারদরগায় পাকসেনারা দৌলতপুর ত্যাগ করার সময় তাদের গুলিতে মুক্তিযোদ্ধা রফিক শহীদ হন। এরপর দৌলতপুর হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন তৎকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মেজর নুরুন্নবী।
৮ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পাক হানাদারমুক্ত হয়। বাঙালি ও বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর বহু ত্যাগ-তিতীক্ষার বিনিময়ে কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর থানার পাক হানাদারমুক্ত দিবস হিসেবে ইতিহাসের পাতায় স্থান পায়।
১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলা পাক হানাদার মুক্ত হয়। সারা দেশে উপজেলা ভিত্তিতে মিরসরাই থেকেই সর্বোচ্চ সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।