পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ নয়, বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ। মাত্র সাড়ে ১০ বছরে যে পরিমাণ জিডিপি বেড়েছে তা সত্যিই বিস্ময়কর। এই উন্নয়ন ও অগ্রগতি প্রকৌশলীদের অবদান ব্যতিত কখনোই সফল হতো না। প্রত্যেকেটা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রকৌশলীদের ভূমিকা অপরিসীম। চুয়েট বিগত ৫১ বছরের পথচলায় বহু প্রকৌশলী তৈরি করেছে। যারা দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার পাশাপাশি বিদেশেও বিভিন্ন ক্ষেত্রে রেখে যাচ্ছে। তারাও দেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এর গৌরবময় পথচলার ৫০ বছর পূর্তি আয়োজিত সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবে এসব কথা বলেন তিনি।
দুইদিনব্যাপী সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম।
এ সময় সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন-২০১৯ এর নির্বাহী কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাইফুল ইসলাম ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, প্রাক্তন ছাত্র সমন্বয় ও র্যালি উপ-কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন ও সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. জি.এম. সাদিকুল ইসলাম, চুয়েট অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রকৌশলী কবির আহমদ ভুঁঞা, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. নাছির উদ্দিন ও অর্থ কমিটির সভাপতি প্রকৌশলী ফিরোজ খান নুন ফারাজী, সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সভাপতি প্রকৌশলী মোহাম্মদ হারুন ও সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর সেন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. সজল চন্দ্র বনিক, প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আয়শা আখতার ও যন্ত্রকৌশল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. সানাউল রাব্বী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, আমরা বাঙালিরা বৈশ্বিকভাবে হয়তো ধনী নই। কিন্তু মেধার দিক দিয়ে আমরা অন্য দেশ থেকে এগিয়ে। সাহিত্য, অর্থনীতি, প্রকৌশল ও স্থাপত্য ক্ষেত্রে আমরা অনেক এগিয়ে। তবে বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত দেশ গঠন করা সম্ভব নয়। দীর্ঘতম সেতু, নদীর তলদেশে টানেল কিংবা ফ্লাইওভার নির্মাণের মত বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে দেশ উন্নত হয়। কিন্তু এরকম উন্নয়ন দিয়ে বেশিদূর এগিয়ে যাওয়া যায় না। উন্নত জাতি গঠন করা সেটি বিচ্ছিন্ন কাজ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য হচ্ছে একটা উন্নত দেশ গঠন করা। বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নত জাতি গঠন করতে হবে। আর এই উন্নয়নের জন্য প্রতিটি নাগরিকের আত্মিক উন্নয়ন করতে হবে। কিন্তু আমরা ইউরোপের মত উন্নত হতে চাই না। ইউরোপে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত হয়ে সড়কে পড়ে থাকলেও কেউ দেখে না। তাদের অনেক শিক্ষিত সন্তান-সন্ততীরা বড় হলে বাবা-মাকে ওল্ডহোমে (বৃদ্ধাশ্রম) রেখে আসে। আমরা সমাজকে সেখানে নিয়ে যেতে চাই না। আমরা চাই দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নত দেশ গঠনের পাশাপাশি উন্নত জাতি গঠন করতে। উন্নত দেশ গঠন করতে হলে মেধা, মূল্যবোধ, দেশাত্মবোধ ও মমত্ববোধের সমন্বয় গঠাতে হবে। সেজন্য আত্মকেন্দ্রীকতা থেকে দূরে সরে আসতে হবে।
তথ্যমন্ত্রী চুয়েটের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমি চুয়েট ক্যাম্পাসে এসে দেখলাম শিক্ষার্থীরা চারদিকে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা সবাই ক্যাম্পাস জীবনের পুরনো স্মৃতি খুঁজে বেড়াচ্ছে। এতো সুন্দর ক্যাম্পাস দেশে খুব কমই আছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন বলেন, চুয়েটের প্রকৌশলীরা দেশে-বিদেশে সুনামের সাথে উন্নয়ন কর্মকান্ডে অবদান রাখছেন। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। প্রকৌশলীরা দেশের সবচেয়ে মেধাবী ছাত্র। তাদের মেধাকে দেশের কল্যাণে আরো বেশি ব্যবহার করে যাবেন বলে আমি প্রত্যাশা করি। পরে চুয়েটের সাবেক অধ্যক্ষ, পরিচালক ও উপাচার্যগণকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে চুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, চুয়েট দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণার অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ। চুয়েটের গৌরবময় পথচলায় প্রায় ১২ হাজার অ্যালামানাই রয়েছে। যারা দেশে-বিদেশে সুনামের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। চুয়েটের অগ্রযাত্রাকে আরো বেগবান করতে গর্বিত সকল অ্যালামনাইয়ের কাছে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ অব্যাহত রাখার আহবান জানাচ্ছি।
উল্লেখ্য, চুয়েটের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের ভিভিআইপিগণ, মন্ত্রী পরিষদ সদস্যগণ, এমপিগণ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকৃত বিপুল প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী, চুয়েট পরিবারের বর্তমান সদস্যগণ মিলে প্রায় ১০ হাজার লোকের মিলনমেলা বসেছে চুয়েট ক্যাম্পাসে। দুইদিনব্যাপী সুবর্ণজয়ন্তীর জমকালো আয়োজনের সমাপনী দিনে ছিল- স্মৃতিচারণ অনুষ্ঠান, চুয়েটের বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, আমন্ত্রিত শিল্পীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক পরিবেশনা, নৈশভোজ, ফায়ারওয়ার্কস, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী জেমস ও নগর বাউল এবং এলআরবি’র জমজমাট কনসার্ট প্রভৃতি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।