পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতিসংঘ নিজেদের কর্মকা-ে স্বচ্ছতা মেনে চলে না বলে অভিযোগ করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। গতকাল বৃহস্পতিবার ধানম-িস্থ টিআইবি কার্যালয় মাইডাস সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের অবস্থান ও সুশাসন বিষয়ক এক গবেষণা প্রকাশের লক্ষ্যে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে কর্মসূচি পরিচালনায় জাতিসংঘের কত ব্যয় হয়েছে জানতে চাইলেও তারা জানায়নি। তিনি আরো বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজার জেলার স্থানীয় নাগরিকরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়ে গেছে। ভারত-চীনের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো আন্তরিকতার সাথে সহায়তা করলে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসন সহজ হতো।
রোহিঙ্গা নাগরিকদের বাংলাদেশে অবস্থান : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় কক্সবাজারের স্থানীয়রা বর্তমানে মানসিক চাপে রয়েছেন; মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছেন।
টিআইবি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হওয়ায় স্থানীয় জনগোষ্ঠী অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত, নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক বিভিন্ন ঝুঁকির চিত্র তুলে ধরে বলেন, কক্সবাজারের স্থানীয় অধিবাসী মোট জনসংখ্যার ৩৪.৮ শতাংশ, যেখানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী ৬৩.২ শতাংশ। এটা স্থানীয় অধিবাসীদের মধ্যে মানসিক চাপের ঝুুঁকি তৈরি করেছে। এছাড়া সরকারি হাসপাতালগুলোর মোট চাহিদার ২৫ শতাংশের অতিরিক্ত রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় হচ্ছে। ফলে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর। পাশাপাশি স্থানীয়দের খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
গবেষণায় টিআইবি জানায়, রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে সামাজিক অবক্ষয়ের ঝুঁকি বৃদ্ধিসহ মাদক পাচার, নারী পাচার, পাতিতাবৃত্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে এ পর্যন্ত ৬০০ জন এইডস আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মাধ্যমে স্থানীয়দের মধ্যে এইডস ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ছে। প্রতিবেদনটি সম্পর্কে টিআইবি জানায়, ২০১৭ সালে আগত রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনা একটি সুনির্দিষ্ট কাঠামোর মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এই ব্যবস্থাপনা কাঠামোতে সমন্বয়, আন্তঃযোগাযোগ ও তদারকিতে ঘাটতি রয়েছে। রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ে সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর উদ্ভব ঘটেছে। এছাড়া কেন্দ্রীয় ডাটাবেজের অনুপস্থিতি ও তথ্য প্রকাশে ঘাটতির কারণে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে স্বচ্ছতার অভাব দেখা দিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজার ও বাংলাদেশ চরম অর্থনৈতিক ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে। অল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে স্থানীয়রা বিভিন্ন কাজে (লবণ চাষ, চিংড়ি হ্যাচারি, চাষাবাদ) রোহিঙ্গাদের নিয়োজিত করছে। ফলে রোহিঙ্গা শ্রমিকদের সহজলভ্যতার কারণে স্থানীয়রা কাজের সুযোগ হারাচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন পণ্যের হঠাৎ চাহিদা বৃদ্ধিতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা, মানবিক সহায়তায় নিয়োজিত কর্মী ও সরকারি কর্মকর্তাদের যানবাহন এবং ত্রাণবাহী ট্রাকের চলাচল ও চাপের কারণে রাস্তা-ঘাটের ক্ষতি ও যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশগত ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে ৬.১৬৪ একর বনভূমি উজাড় হওয়াসহ জীববৈচিত্রের ধ্বংস হওয়া, ভূমিধসের ঝুঁকি। ক্যাম্পে জঙ্গিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তৎপরতার ফলে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার ঝুঁকি বিরাজ করছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সংকট নিরসনের কিছু সুপারিশ তুলে ধরে বলেন, রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য দ্রুত সময়ে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বিভিন্ন রাষ্ট্র, জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দাতা সংস্থাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিশ্চিত করার জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে হবে। ভারত-চীনের মতো প্রতিবেশী দেশগুলো আন্তরিকতার সাথে সহায়তা করলে রোহিঙ্গা সংকট নিরসন সহজ হতো। তিনি বলেন, আমরা জাতিসংঘের কাছে রোহিঙ্গা বিষয়ে তাদের কর্মসূচির পরিচালনা ব্যয় সম্পর্কে জানতে চেয়েছি। জাতিসংঘ আমাদের জানিয়েছে সর্বনিম্ন ৩ শতাংশ এবং সর্বোচ্চ ৩২ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। এটি তাদের নিজেদের পরিচালনা ব্যয়। কিন্তু তারা নিজেরা কোনও কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে না। সহযোগী সংস্থাগুলো এসব কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। সহযোগী সংস্থাগুলোর পরিচালন ব্যয় কর্মসূচির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এর ফলে এখানে এ ব্যয় দুইবার গণনা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।