Inqilab Logo

বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০ আশ্বিন ১৪৩১, ২১ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বাংলাদেশি ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেবো না

সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

কোনোভাবেই বাংলাদেশি ছাড়া বাংলাদেশের মাটিতে কাউকে ঢুকতে দেবো না। ভারতের আসামে বিজেপি সরকারের তৈরি করা জাতীয় নাগরিক পঞ্জি(এনআরসি) পর বাংলাদেশে কিছু মানুষকে জোর করে (পুশ ইন) সীমান্ত দিয়ে পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ সব কথা বলেন। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, গুলশানের হলি আর্টিজান মামলার আসামির মাথায় জঙ্গি সংগঠন আইএসের টুপি কোথা থেকে এসেছে তা জানতে নিরপেক্ষ তদন্ত হবে

পুশ ইনের বিষয়টি আতঙ্কের কিনা? প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা মোটেই আতঙ্কের বিষয় নয়। আমরা কোনোভাবেই বাংলাদেশি ছাড়া বাংলাদেশের মাটিতে কাউকে ঢুকতে দেবো না। ঢুকতে দেবো না মানে আমরাতো রোহিঙ্গাদের ঢুকতে দিয়েছি, সেই বিষয়ে নয়। আমাদের সুনিশ্চিত হতে হবে যদি বাংলাদেশি নাগরিক হয় তাহলে এগুলো আমরা রিসিভ করতে পারি। আর যদি বাংলাদেশি নাগরিক না হয় তাহলে কোনোভাবেই গ্রহণ করবো না।
তিনি আরো বলেন, আপনারা হয়তো দেখেছেন বিভিন্ন সীমান্তে কিছু বাঙালি, এরা বাংলাদেশি কিনা আমি সঠিকভাবে এখনও নিশ্চিত নই। বাঙালিদেরকে এরা ভেতরে ঢোকানোর জন্য চেষ্টা করেছে। আমাদের বিজিবি কয়েক জায়গায় এদের ঢুকতে দেয়নি, অ্যালাউ করেনি। এদের সংখ্যা হাজার হাজার নয়, কয়েকশ’। বিগত দিনে বিভিন্ন সময়েও আমরা দেখেছি পাঁচজন দশজন কিংবা পঁচিশজন পঞ্চাশজন করে তারা পুশ ইন করানোর জন্য প্রচেষ্টা নিয়েছে। তখন দেখেছি রোহিঙ্গাদেরকেও পুশ ইন করার একটা প্রচেষ্টা নিয়েছিল। রোহিঙ্গারা বিভিন্নভাবে ভারতের বিভিন্ন জায়গা দিয়ে ঢুকে গিয়েছিল। তারা বাংলাদেশে চলে আসতে চেয়েছিল, সেগুলো আমরা ঢুকতে দেইনি। আমরা সুনিশ্চিত না হয়ে কাউকে আমাদের মাটিতে ঢুুকতে দেবো না, এটা হলো আমাদের কথা। আমাদের বিজিবিও সেজন্য সচেতন আছে। আমি এটুকু বলতে পারি, যদি সে আমাদের নাগরিক হয়, আমাদের দেশের সুনিশ্চিত হলে তখন আমরা তাদের কীভাবে রিসিভ করবো সেটা অন্য বিষয়।

পুশ ইনের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ আছে কিনা- জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। আমাদের দেশ থেকে বিভিন্ন সময়ে পাসপোর্ট নিয়ে অনেকেই গিয়ে থাকেন। যখন ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় তখন এদেরকে পাঠিয়ে দেয়। এরকম ঘটনা যদি কিছু হয়ে থাকে তাহলে আমরা অবশ্যই রিসিভ করবো। আতঙ্কের কোনো কারণ নেই।

বাংলাদেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে এটা উস্কানিমূলক কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, না, কোনো উস্কানিমূলক নয়। যদি হাজার হাজার বা শত শত হতো তাহলে একটা আলোচনার ব্যবস্থা হতো। এগুলো অল্প কিছু সংখ্যক, এগুলোই গিয়েছিল এরাই ফিরে এসেছে কিনা, ভারত সরকারতো আমাদের কাছে কোনো চিঠি দেয়নি, কোনো আবেদনও করেনি। যারাই গিয়েছিল তারাই পালিয়ে আসছেন কিনা কিংবা অবৈধভাবে গিয়েছেন অবৈধভাবে ফেরত আসছেন কিনা, সবকিছু আমাদের জানতে হবে। না বলে এ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
আগের চেয়ে পুশ ইনের সংখ্যা বেড়েছে- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হয়তো কিছু বেড়েছে, আমি সেটা অস্বীকার করছি না। তাদের রাজ্যে একটু কড়াকড়ি করেছে সেজন্য হয়তো আমাদের যারা ইচ্ছা করে থেকে গেছেন কিংবা তারা ভিসার তোয়াক্কা করেননি বা তারা অনেকদিন ধরে থেকে গেছেন, এ বিষয়ে চিন্তা করেননি; তারা হয়তো আবারো এরকমভাবে আন-অফিসিয়ালি আসার জন্য প্রচেষ্টা নিতে পারেন। এগুলো আমাদের অ্যাজামশন, যেহেতু আমাদের সঙ্গে কোনোভাবে আলোচনায় আসেনি। আমাদের দেশের মানুষ অনেক বছর ধরে ওখানে যাওয়া আসা করেন। কেউ শ্রমজীবী হিসাবে, কেউ পেশাদার হিসাবে যায়, কেউ অন্য কোনো সেবা যেমন- চিকিৎসা বা পড়াশোনা করার জন্য। তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে থাকলে হয়তো তাদের এই জটিলতা দেখা দিয়েছে। এরকম হতে পারে।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে পুশ ইনের বিষয়ে কোনো আলোচনা করবেন কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বলে দিয়েছিতো আমরা। আমাদের কাছে অফিসিয়ালি কোনো আবেদন নিবেদন নেই।
আইএসয়ের টুপি প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেরাই এই তথ্য জানাতে চাচ্ছি। তদন্ত হচ্ছে কীভাবে এলো (টুপি), কীভাবে গেল, আমরা সেটাই জানতে চাচ্ছি। কেউ না কেউতো দিয়েছে। কে দিয়েছে আমরা একটু জেনে নেই। কারণ বন্দিটাকে নিয়ে গিয়েছে যখন, তখনও জনগণের ভেতর দিয়েইতো গিয়েছে, কীভাবে পেয়েছে সেটা আমাদের এখন একটু দেখার বিষয়। আমরা দেখে নেই, না দেখে এটার সম্পর্কে আমরা বলতে পারবো না। তবে আমরা যেটুকু দেখেছি এটা কারাগার থেকে আসেনি, কারাগার কর্তৃৃপক্ষ বলছে। পুলিশ বলছে তারা এটা সাপ্লাই হতে দেখেনি। কাজেই কীভাবে এলো তদন্তের বাইরে আমরা কিছু বলতে পারবো না।

এটাকে (আইএসের টুপি) অ্যালার্মিং মনে করছেন কিনা- প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো অ্যালার্মিং নয়, একটা কাপড় একটা টুুপি মাথায় দিয়েছে। এটা অ্যালার্মিংয়ের কী বিষয় আছে। এরাতো সবসময়ই বলছে, এরা ওই মতাদর্শী, আমরা সবসময় বলেছি আমাদের দেশে এগুলো নেই। এগুলো সব হোমমেইড জঙ্গি। আর ওরা ওখানে কানেক্টেড হতে চেয়েছে, এটা সবসময় বলেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ