পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের কুমিল্লা অঞ্চলের ১৩৭টি লেভেল ক্রসিং যেন মরণফাঁদ। এসব লেভেল ক্রসিংয়ে নেই কোনো গেটম্যান। নেই যানবাহন ও পথচারী থামানোর ব্যারিয়ারও। এছাড়া কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে দখলদাররা মূল্যবান সম্পত্তি দখল করে স্থাপনা গড়ে তুলেছে।
রেলওয়ের স্থানীয় একাধিক কর্মকর্তার দাবি, বিভিন্ন সময়ে কিছু কিছু স্থানে অভিযান চালিয়ে রেলের ভ‚মি দখলমুক্ত করা হলেও কিছু দিন না যেতেই প্রভাবশালী ভ‚মিখেকোদের দাপটে আবারো বেদখল হয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকা-কুমিলা-চট্টগ্রাম এবং লাকসাম-নোয়াখালী-চাঁদপুর রেলপথের বেশিরভাগ স্থানে গেটম্যান ও ব্যারিয়ার না থাকায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। রেলপথের কুমিল্লার লাকসাম-নোয়াখালী রুটে ৩৮টি, লাকসাম-চাঁদপুর রুটে ৩৭টি ও লাকসাম-আখাউড়া রুটে ৪৭টি এবং লাকসাম থেকে চৌদ্দগ্রামের গুণবতী রুটে ১৫টি অবৈধ লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এসব রুটে বৈধ লেভেল ক্রসিং রয়েছে মাত্র ৩২টি। অথচ বর্তমান সরকার রেলের উন্নয়নে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করছে। জননিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকটিতে নেই কোনো নজর।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মতে, অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংগুলো অবৈধ বা অস্বীকৃত। এগুলো রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ ও অনুমতি ছাড়াই যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে তৈরি করেছে। লেভেল ক্রসিংয়ে লোকবল নিয়োগ এবং ব্যারিয়ার নির্মাণের কোনো এখতিয়ার রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নেই। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এসব লেভেল ক্রসিংয়ের সামনে নিজ দায়িত্বে সাবধানে পারাপার হওয়ার সতর্কবাণীর সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রেখেছেন।
এ বিষয়ে ট্রেনচালক আলমগীর স্বপন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, এমন বহু অনুমোদিত রেলক্রসিং আছে যেগুলোর রাস্তা দিয়ে দিনে-রাতে অসংখ্য যাত্রীবাহী বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। ট্রেন আসার সিগন্যাল দেয়ার পরও সেসব ক্রসিংয়ে দায়িত্বরতরা দায়িত্ব পালন করেন না। একজন এলএম নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, চিহ্নিত কিছু এলাকায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটত যদি চালকরা সচেতন না হতো। ওইসব এলাকাকে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা ধরেই চালক ট্রেনের গতি কমিয়ে সাবধানতা অবলম্বন করায় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়। অরক্ষিত রেলক্রসিংয়ের মধ্যে অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ রেলক্রসিং হলো মিরসরাই সীতাকুন্ডের ঝুঁকিপূর্ণ ক্রসিংগুলোতেও বিভিন্ন সময় মৃত্যুবরণ করেছেন অনেক পথচারী। চিতোষীর এই ব্যস্ততম সড়ক দিয়ে মুদাফরগঞ্জ থেকে চিতোষীর উদ্দেশ্যে প্রতিদিন শত শত গাড়ি যাওয়া আসা করে। চিতোষী বাজারের পাশেই প্রাইমারি স্কুল, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদরাসা, ছোট ছোট কিন্ডার গার্টেন রয়েছে। চিতোষী বাজারের মধ্যবর্তী জায়গায় রেল ক্রসিং। দীর্ঘদিন এই চিতোষী বাজারের রেল ক্রসিংয়ে নেই কোন প্রতিরোধ মূলক (লোহার পাইপ) ব্যবস্থা। স্থানীয় জনতার উদ্যোগে কিছুদিন বাঁশ দিয়ে মানুষ ঠেকানোর কাজ করলেও এখন হাত দিয়েই শত শত যানবাহন ও অগণিত মানুষকে ঠেকানোর কাজ করছেন রেলের কর্মীরা।
গত বছরের জানুয়ারি মাসে লাকসাম-আখাউড়া রুটের কুমিল্লার সদর দক্ষিণের বিজয়পুর জেলখানা বাড়ি লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় এক্সিম ব্যাংকের গাড়ি দুর্ঘটনায় ৭জন মারা যায়। ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর একই লেভেল ক্রসিং পার হতে গিয়ে পাহাড়িকা ট্রেনের ধাক্কায় মাইক্রোবাসের ৩ যাত্রী প্রাণ হারায়। একই সালে লালমাই বাগমারা রেলক্রসিংয়ে ট্রেনে কাটা পড়ে গেট কিপার আবদুল হান্নানসহ বিভিন্ন সময়ে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। ২০১১ সালের ১৯ ফেব্রæয়ারি ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদলে অবৈধ লেভেল ক্রসিংয়ে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনের ধাক্কায় বাসের ১৮ জন যাত্রী প্রাণ হারায় ও ২৫ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে, জেলার লালমাই উপজেলার বাগমারা লেভেল ক্রসিং এলাকার আবদুল কাদের, জয়নাল আবেদীনসহ অন্তত ১৪ জন বাসিন্দা জানান, এ রেল ক্রসিংটি অবৈধ দখলদারের কারণে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে আছে। প্রতিদিন অসংখ্য যানবাহন পারাপার হয়। কিন্তু এখানকার এক দখলদারকে দুই বছর আগে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য নোটিশ দিলেও তা কার্যকর হয়নি। সে রেল ক্রসিং সংলগ্ন আরো সম্পত্তি দখল করে গুদাম ও দোকানপাট নির্মাণ করেছে।
কুমিল্লার লাকসাম রেলওয়ের ল্যান্ডস্ এন্ড বিল্ডিংস্ ভ‚-সম্পত্তি বিভাগের কানুনগো কায়সার হামিদ জানান, কিছু কিছু স্থানে অভিযান চালিয়ে রেলের ভ‚মি দখলমুক্ত করা হয়েছে। লোকবল সঙ্কটের কারণে নিয়মিত অভিযান করা যাচ্ছে না। তবে সহসাই ঝুঁকিপূর্ণ রেল ক্রসিং এলাকার অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান চালানো হবে। লেভেল ক্রসিংয়ের বিষয়ে রেলওয়ে কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী মজুমদার দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, রেলপথে যেসব অবৈধ লেভেল ক্রসিং রয়েছে সেগুলো বৈধ করার ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।