Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুক্তির সংগ্রামে উত্তাল ছিল বাংলার মাটি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

আজ ২ ডিসেম্বর। বিজয়ের শেষ প্রান্তে উত্তাল হয়ে উঠে স্বাধীনতা পাবার আকাঙ্খা। একে একে বিভিন্ন জায়গায় ধরাশায়ী হয় পাক বাহিনী। বিজয়ের নেশায় আরো আক্রমণাত্মক হয়ে উঠে মুক্তিযোদ্ধারা। আর পরাজয়ের চিন্তায় পিছু হটা পাক হানাদাররা দিশা হারিয়ে ফেলে।

এদিনে মুক্তিবাহিনী ঘোড়াশালে পাকবাহিনীর অবস্থানের ওপর চারদিক থেকে আক্রমণ করে ২৭ পাক হানাদারকে হত্যা করতে সক্ষম হয়। এখান থেকে বেশ কিছু গোলাবারুদ উদ্ধার করে মুক্তিবাহিনী। এদিকে, আজমপুর রেলওয়ে স্টেশন মুক্তিবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে এলেও পাকবাহিনী তাদের বিপর্যস্ত অবস্থা কাটিয়ে উঠে মুক্তিবাহিনীর ওপর পাল্টা আক্রমণ করে। এই আক্রমণে মুক্তিবাহিনী পুনরায় তাদের অবস্থান সুদৃঢ় করে তিন দিক থেকে শত্রæকে আক্রমণ করলে পাকবাহিনী আজমপুর রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে পালিয়ে যায়।

এদিকে, চট্টগ্রামে মুক্তিবাহিনীর গেরিলারা উত্তরে ফটিকছড়ি ও রাউজান থানা এবং দক্ষিণে আনোয়ারার অধিকাংশ স্থান তাদের দখলে আনতে সক্ষম হয়। পাক কমান্ডার মোছলেহ উদ্দিন ভালুকা থেকে একদল রাজাকারকে সঙ্গে নিয়ে কাঁঠালি গ্রামে লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করতে এলে মুক্তিবাহিনীর সেকশন কামান্ডার গিয়াসউদ্দিন এবং ৩ নম্বর সেকশন কমান্ডার আবদুল ওয়াহেদের নেতৃত্বে পরিচালিত অতর্কিত আক্রমণে ৩ পাক হানাদার এবং ৭ জন রাজাকার নিহত হয় এবং ৭ জন পাক সৈন্য আহত হয়। পরে পাক হানাদাররা মৃতদেহগুলো নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ সময় প্রবাসী সরকার অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়, বাংলাদেশের বিজয় আসন্ন। স্বাধীন বাংলা বেতার থেকে প্রতিদিন মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের খবর প্রচারিত হতে থাকে। রেডিওতে বাজে জয়ের গান। রাজধানী ঢাকায় গেরিলাযোদ্ধারা একের পর এক গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন দখলদারদের আস্তানা।

পরিস্থিতির বিবরণ দিয়ে ২ ডিসেম্বর ঢাকা থেকে বিবিসিতে সবিস্তারে রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন সংবাদদাতা নিজামউদ্দিন আহমদ। বিগত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার পাঁচটি স্থানে বোমা বিস্ফোরণের খবর তিনি জানিয়েছিলেন। রামপুরা ও মালিবাগে বিস্ফোরণে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সংবাদ তিনি জানান।
বাস্তবতা ছিল এক ধরনের, আর পাকিস্তান চলছিল আরেক পথে। পাকিস্তানি সামরিক চক্র জারি করেছিল জরুরি অবস্থা, জাতিসংঘে একের পর এক অভিযোগ দাখিল করছিল ভারতীয় আগ্রাসন সম্পর্কে। ২ ডিসেম্বর পাকিস্তানি এক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলেছিলেন, সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা আগেই শত্রুমুক্ত হয়েছিল লে. জিয়াউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন মুক্তিবাহিনীর দ্বারা। বিবিসি, ভোয়া, আকাশবাণী অথবা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র্রের সংবাদে উচ্চারিত বিভিন্ন স্থানের নাম কোটি মানুষের বুকে জাগাত অন্যতর অনুভূতি। একেকটি জনপদ মুক্ত হয়ে আলোড়ন তুলত। #



 

Show all comments
  • ** মজলুম জনতা ** ২ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:২৩ এএম says : 0
    এক থালা পান্তাভাত আর একটি ঝাল * তার মাঝে স্বাধিনতা করে টলমল * রিকসার চাকা ঘোড়ে কিষানের হাল * তারই মাঝে স্বাধিনতা থাকে অবিরল *অফিসের চেয়ার-টেবিলে শুনি স্বাধিনতার গান * ও পাড়ার বৌ -ঝি'রা শুধু বানে ধান* উপর তলার স্বাধিনতা নিচতলায় আস * বস্তিতে ফুটপাতে স্বাধিনতা কাদেঁ আর হাসে *....।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ