Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকার সর্বত্র শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর: প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৭:১৭ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র শান্তি, শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর। পার্বত্য শান্তি চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের শান্তি, শৃঙ্খলা বজায় রেখে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা জাতির পিতার সুখী-সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষত হব।’

আগামীকাল পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের ২২ বছর পূর্তি উপলক্ষে আজ রোববার দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার শান্তি চুক্তির আলোকে পার্বত্য অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, অবকাঠামো, মোবাইল নেটওয়ার্কসহ সকল খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার রাঙামাটিতে একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে।’

পার্বত্য এলাকায় ভূমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বোর্ডের কার্যক্রম আরো গতিশীল ও সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে আমাদের সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইন, ২০১৪ প্রণয়ন করেছে। পার্বত্য এলাকার যেসব এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না, সেসব এলাকায় ১০ হাজার ৮৯০টি পরিবারের মধ্যে সোলার প্যানেল স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘৪ হাজার পাড়াকেন্দ্রের মাধ্যমে এ অঞ্চলের নারী ও শিশুদের মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা ও শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের জন্য টেকসই সামাজিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে। তাছাড়া ঢাকার বেইলী রোডে পার্বত্যবাসীর স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে প্রায় ২ একর জমির ওপর ১৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি শৈল্পিক ও নান্দনিক কমপে¬ক্স নির্মাণ করা হয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পার্বত্য জেলাসমূহের নৈসর্গিক সৌন্দর্য সমুন্নত রাখা ও পর্যটন শিল্পের প্রসারেও আমরা নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের সময়োচিত পদক্ষেপের ফলে আজ পার্বত্য জেলাসমূহ কোন পিছিয়ে পড়া জনপদ নয়। দেশের সার্বিক উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় এ অঞ্চলের জনগণ সম-অংশীদার।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি-জামাত জোট সরকার ২০০১ সালে ক্ষমতার এসে ঐতিহাসিক এই শান্তি চুক্তির চরম বিরোধিতা করে পার্বত্য অঞ্চলকে পুনরায় অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। তাদের এ হীন উদ্দেশ্য সফল হয়নি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর কোন তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই আওয়ামী লীগ সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে এই ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। যা ছিল বিশ্ব ইতিহাসে একটি বিরল ঘটনা।’
তিনি বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বপ্রথম আধুনিকতার ছোঁয়া বিবর্জিত পশ্চাদপদ পার্বত্য জনগোষ্ঠীকে উন্নয়নের মূলধারায় ফিরিয়ে আনেন। তাদের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে গ্রহণ করেন নানামুখী কর্মসূচি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আঞ্চলিক উন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষাক্ষেত্রে পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীদের সম-সুযোগ প্রদানের ব্যবস্থা নেন। এ লক্ষ্যে জাতির পিতা কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানসমূহে পাহাড়ি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য সুনির্দিষ্ট আসন সংরক্ষণের নির্দেশনা প্রদান করেন।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭৫ পরবর্তী অগণতান্ত্রিক সরকারগুলো পার্বত্য অঞ্চলের সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পরিবর্তে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বাঙালি-পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে। খুন, অত্যাচার-অবিচার, ভূমি জবরদখল এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এ অঞ্চলকে আরো অস্থিতিশীল করে তোলে।’

তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি বন্ধ হয়। অনগ্রসর ও অনুন্নত পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় শান্তি ও উন্নয়নের ধারা। ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার অর্জন এই চুক্তির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির স্মারক।

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২২ বছর পূর্তি উপলক্ষে পার্বত্য জেলাসমূহের জনগণ ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ