Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আগ্রাসী ভারতের ভূমিকায় হাসিনা সরকার নতজানু দেশের নিরাপত্তা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে - রিজভী

প্রকাশের সময় : ২৩ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ৭:০৫ পিএম, ২৩ জুন, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা সম্পূর্ণরূপে বিপন্ন হয়ে পড়েছে দাবি করেছে বিএনপি। প্রতিবেশী দেশ ভারতের ‘অব্যাহত আগ্রাসী’ ভূমিকার বিষয়ে বর্তমান সরকার ‘নতজানু’ বলেও অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, একটি দেশ যে আমাদের প্রতি অন্যায়গুলো করছে এবং এই অন্যায় ভয়াবহ। গঙ্গা-ব্রক্ষপুত্র আন্তঃ নদী সংযোগ প্রকল্প নিয়ে তাদের যে নীতি, এতে আমার দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আমাদের ভৌগলিক অস্তিত্ব ও পরিবেশ বিপন্ন হয়ে যাবে। আমার-আপনার পরবর্তী প্রজন্ম তারা টিকে থাকতে পারবে কিনা, তারা বেঁচে থাকতে পারবো কিনা।
কেবল তাই নয়, প্রতি দুই দিনে একটা করে মানুষ হত্যা হয় সীমান্তে। এতো চুক্তি হলো, এতো কিছু হলো, এতো কথা শুনলাম তারপরও তো এটা থামছে না। প্রতিদিন তারা একের পর এক সীমান্ত-সংঘর্ষ হচ্ছে, সেখানে খুন করছে। এসবের বিষয়ে সরকারের প্রধান দায়িত্ব কঠোর প্রতিবাদ করা। কিন্তু তা হচ্ছে না। কারণ তারা ( সরকার) নিজেই নতজানু।
ট্রানজিট প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, অবকাঠামো না থাকলেও আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করে নামমাত্র ১৯২ টাকায় করিডোর দেয়া হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা সম্পূর্ণরূপে বিপন্ন হয়ে পড়েছে।
আসলে উগ্রবাদী জঙ্গিদের উৎপাত, তাদেরকে ধরার জন্য দেশের সাধারণ মানুষের ওপর ভয়াবহ নির্মম ক্র্যাকডাউন, পাইকারি হারে বিচারবর্হিভুত হত্যার বিভীষিকার ডামাডোল সৃষ্টি করে জনগণের দৃষ্টিকে এই দিকে নিবদ্ধ রেখে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা, ভৌগলিক ও পরিবেশগত অস্তিত্ব এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে বিপন্ন করে তারা নীরবে দেশ-বিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারত বৃহৎ প্রতিবেশী দেশ, বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, নিশ্চয়ই আমরা বন্ধুত্ব চাই। ভারতকে আমরা বন্ধু-প্রতিম রাষ্ট্র বলেই মনে করি।
কিন্তু বন্ধুত্ব যদি ওয়ান-ওয়ে ট্রাফিক হয়, একমুখী রাস্তা হয়, এটা যদি ডাবল-ওয়ে রোড না হয়, তাহলে এই বন্ধুত্ব নিয়ে তো সন্দেহ দেখা দেবে। এটা মনে হবে বন্ধুত্বের নামে অন্য কিছু করা। বন্ধুত্ব যাতে পারস্পরিক হয়, সমতার ভিত্তিতে হয়, সেটাই দেখতে হবে। আর দেখার দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের।
এক বছরের মধ্যে দুই বার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রুহুল কবির রিজভী বলেন, বর্তমান নতজানু সরকার পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের কাছ থেকে যখন প্রতি টনে মাত্র ১৯২ টাকা ট্রানজিট ফ্রি নিচ্ছে, তখন নিজ দেশ বাংলাদেশে গ্যাসের দাম দ্বিগুণ বৃদ্ধি করার তোড়জোড় শুরু করেছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি‘র বিধান অনুযায়ী এক বছরের দুই বার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করার কোনো সুযোগ নেই। এর আগে, গত ১ সেপ্টেম্বরে আবাসিকসহ সকল শ্রেণীর গ্রাহকের গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছিলো। বছর শেষ না হতেই আবার গ্যাসের দাম বৃদ্ধির এই উদ্যোগে অবৈধ সরকারের স্বেচ্ছাচারী মানসিকতারই প্রতিফলন। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধিতে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা চরমভাবে হ্র্রাস পেয়েছে। সেখানে যদি গ্যাসের দাম আবার বৃদ্ধি করা হয়, তা জনগণের কাছে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা‘র ন্যায় অনুভূত হবে।
সরকারের এই ‘গণ-বিরোধী’ উদ্যোগ থেকে সরে আসার আহবানও জানান তিনি। এক প্রশ্নের জবাবে রিজভী বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করলে অবশ্যই বিএনপি কর্মসূচি দেবে।
ইতালি নাগরিক তাবেল্লা সিজার হত্যাকাণ্ড মামলায় অভিযোগ পত্রে বিএনপির মহানগর নেতা এমএ কাইয়ুম ও তার ভাই আবদুল মতিনের নাম জড়ানোর পুলিশের উদ্যোগ এবং বুধবার তিতুমীর কলেজের ছাত্র দলের সভাপতি তসলিম হাসান মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক হিমেল, সিনিয়র সহসভাপতি নুরে আলম রাশেলসহ ৬ জনকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ