পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেট পাসের পর সঞ্চয়পত্রের ওপর খড়গ নেমে আসে। ফলে কমতে থাকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমতে কমতে চলতি বছরের অক্টোবরে মাত্র ৮২২ কোটি টাকায় ঠেকেছে। একক মাস হিসেবে নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রির এই হিসাব সবচেয়ে কম। অথচ ২০১৮ সালে একই মাসে যা ছিল ৪৪১৬ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয় গত বছরের অক্টোবরের চেয়ে এই বছরের অক্টোবরে বিক্রি কমেছে ৩৫৯৪ কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে এই ধারাবাহিক ভাটায় অর্থনীতিতে স্থবিরতার আশঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা।
নতুন অর্থবছর শুরুর পর গত চার মাস ধরে অব্যাহতভাবে কমছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ২১৬০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। আগস্টে বিক্রি হয়েছে ২২০৫ কোটি টাকা, সেপ্টেম্বরে বিক্রি হয়েছে মাত্র ৯৮৫ কোটি টাকা। আর অক্টোবর মাসে বিক্রি হয়েছে ৮২২ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি। অর্থনীতির পরিভাষায় সঞ্চয়পত্রের বিক্রিকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
বর্তমানে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র রয়েছে। পাঁচ বছর মেয়াদি পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি পেনশনার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র এবং তিন বছর মেয়াদি ও তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র।
দেশে অব্যাহতভাবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে যাওয়াকে সামগ্রিকভাবে অর্থনীতির স্থবিরতার ইঙ্গিত বলে মন্তব্য করেছেন সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, ব্যাংকঋণে সুদের হার কমানোর পাশাপাশি সরকারের ব্যয় কমানোর অংশ হিসেবে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তাতে সত্যিকার অর্থে সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে বেশ কিছু কঠিন নিয়ম-কানুন জারি করা হয়েছে। এতে যারা সঞ্চয় করার সুযোগ পেতো, তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। আবার সঞ্চয়পত্রে কড়াকড়ি আরোপের ফলে ব্যাংক খাতেও উন্নতি হচ্ছে না। ব্যক্তিখাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ব্যাংকের খেলাপি ঋণও বেড়ে গেছে। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক ও অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত বলেন, বেশ কিছু কঠিন নিয়ম-কানুন জারি করার ফলে সঞ্চয়পত্র খাতে বেনামে ও কালো টাকার বিনিয়োগ কমে এসেছে। টিআইএন এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতাম‚লক করায় অনেকেই আগের মতো সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করতে পারছেন না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয় ৫৫১২ কোটি টাকার। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ১৭৮২৮ কোটি টাকার। অর্থাৎ গত অর্থবছরের প্রথম চার মাসের তুলনায় এ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে ১২৩১৬ কোটি টাকা।
প্রসঙ্গত, বাজেট ঘাটতি প‚রণে প্রতিবছরই সরকার সঞ্চয়পত্র খাত থেকে ঋণ নেয়। এই অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা ধার করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। গত অর্থবছরের ম‚ল বাজেটে এই খাত থেকে ২৬১৯৭ কোটি টাকা ঋণের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও অর্থবছর শেষে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯৯৩৯ কোটি টাকায়; যা সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংক স‚ত্র বলছে, সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে সরকারের নগদ ও ঋণ ব্যবস্থাপনার ওপর চাপ পড়ে। এ জন্য এই খাত থেকে ঋণ নেওয়া কমিয়ে দিতে বিভিন্ন মহল থেকে সরকারকে পরামর্শ দেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে চলতি অর্থবছরে পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রের সুদের ওপর উৎস কর ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া ১ লাখ টাকার বেশি ম‚ল্যমানের সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাধ্যতাম‚লক করা হয়েছে। একই ব্যক্তির একাধিক জায়গা থেকে সঞ্চয়পত্র কেনা ঠেকাতেও নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। একজন ব্যক্তির জন্য সর্বোচ্চ ৬০ লাখ টাকা সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। এতে মানুষ আর আগের মতো সঞ্চয়পত্র কিনতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।