পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘ভ্যান চালিয়ে গরু-বাছুর, হাঁস-মুরগী পালন করে বাড়ি বানিয়েছি। চোখের সামনে নদীতে চলে গেলো। এখন পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় দাঁড়াবো?” এভাবেই আহাজারি করছিলেন নদী পাড়ের বাসিন্দা আলী ঘরামী।
চোখের পানি মুছতে মুছতে ক্ষতিগ্রস্ত অন্য বাসিন্দা চুন্নু গৌড়া বলেন, ‘আমার সারা জীবনের রোজগার দিয়ে বাড়ি করেছিলাম। বাড়িটিই ছিলো আমার একমাত্র সম্পদ। তাও নদীতে চলে গেলো। আমার সোনার সংসার গ্রাস করেছে আড়িয়াল খাঁ। আমি এখন কোথায় যাবো, কি করবো?
গত শুক্রবার থেকে মাদারীপুর পৌর এলাকার মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া আড়িয়ালখাঁ নদীতে হঠাৎ ধসে
কাঁচা-পাকা ও আধাপাকা বাড়িঘর হারিয়ে অসহায় মানুষগুলো পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টে জীবনযাপন করছে। হুমকির মুখে পড়েছে চন্দ্রপাড়া মুরিদানদের খানকা শরীফসহ আরো শতাধিক ঘরবাড়ি-স্থাপনা। ক্রমাগতভাবে দেবে যাচ্ছে বাড়িঘর। কোনো কোনো বাড়ি ৮ থেকে ১০ ফুট, কোনো বাড়ি ৪/৫ ফুট দেবে গেছে। স্থানীয় কালাম হাওলাদারের বাড়ি ও সোনামিয়া মোল্লার বাড়ির একাংশ দেবে গেছে। ৮০ ভাগ ভেঙে পড়েছে চন্দ্রপাড়া মুরিদানদের খানকা শরীফ। যে কোনো মুহূর্তে এসব বসতবাড়ি ধসে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। সম্পদ ও শিশু সন্তানদের নিরাপত্তায় এসব বাড়ির মালিক ও ভাড়াটিয়ারা রাত জেগে পালাক্রমে পাহারা দিচ্ছে।
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজ শুরু করেছে। ইতোমধ্যে হাইক্কার মার ঘাট এলাকা থেকে চন্দ্রপাড়া মুরিদানদের খানকা শরীফসহ ক্ষতিগ্রস্ত আলী ঘরামীর বাড়ি, চুন্নু গৌড়া, আলমগীর তালুকদার, মুরাদ হাওলাদার, আবুল কালাম হাওলাদার, সোনামিয়া মোল্লা, মোশারফ হোসেনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়। পর্যায়ক্রমে আরো ৪ হাজার জিও ব্যাগ ফেলানো হবে। জিও ব্যাগ ফেলানোর কারণে অনেকে স্বস্তির পেলেও কাটেনি আতঙ্ক। আবার এলাকায় এখনো জিও ব্যাগ ফেলানো হয়নি।
এলাকাবাসী জানায়, ক্ষতিগ্রস্ত অনেক এলাকায় এখনো জিও ব্যাগ ফেলানো হয়নি। ফলে ওই এলাকার মানুষের চোখে মুখে ভাঙন আতঙ্ক। তবে জিও ব্যাগ সাময়িকভাবে বিপদমুক্ত করলেও আমরা ভাঙনের স্থায়ী সমাধান চাই। কারণ স্থায়ী সমাধান না হলে কিছুদিন পরই আবার ভাঙন দেখা দিতে পারে। খানকা শরীফের খাদেম আলী তালুকদার বলেন, ‘আমাদের খানকা শরীফের ৮০ ভাগ ধসে গেছে। যে কোন সময় সম্পূর্ণটা ধসে পড়তে পারে। দ্রæত এ ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান করতে হবে। অন্যথায় প্রায় ২০ লাখ টাকার সম্পদ নদী গর্ভে চলে যাবে।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থপ্রতীম সাহা বলেন,শহরের হাইক্কার মার ঘাট এলাকা থেকে পাঠককান্দি হয়ে এ. আর হাওলাদার জুট মিলের পশ্চিম গেট পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ভাঙ্গনরোধের জরুরী ভিত্তিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৩০ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া ভাঙন এলাকা পরিদর্শন যে প্রতিবেদন দেয়া তার আলোকে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন এলাকায় স্থায়ী বাধ নির্মাণ করার পরিকল্পনাও করেছে।আশা করি খুব শীঘ্রই একটি স্কিম তৈরি করা হবে বলে নির্বাহী প্রকৌশলী জানান। মাদারীপুর জেলা প্রশাসক, মো. ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, দ্রুত সময়ে নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।এ ব্যাপারে প্রশাসনের নজরদারী থাকবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।