পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুড়িগ্রাম জেলার ভ‚রুঙ্গামারী সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে টাকা দিলেই জাল দলিলের মাধ্যমে জমি লিখে নেয়া যাচ্ছে। দলিল লেখক আর সাব-রেজিস্ট্রারের যোগসাজসে ভ‚য়া জমিদাতা দিয়ে রেজিস্ট্রি করে পরিবর্তন হচ্ছে জমির মালিকানা। আর এসব কর্মকান্ড জানতেও পারছে না জমির আসল মালিক। জমি বেদখল হবার পর ঘটনা প্রকাশ পেলেও তখন আর কিছু করার থাকে না। ফলে মামলা মোকাদ্দমায় দীর্ঘ প্রতিক্ষার দিন পার করতে হয় আদালতের দোরগড়ায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কাঞ্চন বিবি (৯০),স্বামী মৃত. জছিম উদ্দিন। ভ‚রুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের বামুনেরকুটি গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী মারা গেছেন অনেক আগেই। তিনি ৮ সন্তানের জননী। নিজের নামে ২৪ শতক জমি এবং স্বামীর দেয়া সম্পত্তির অংশ সন্তানদের নামে লিখে দেন। সম্পত্তি বন্টন হয়ে গেলেও ২০১৭ সালে মায়ের নামের ২৪ শতাংশ জমি নিজের নামেই জাল দলিল করে নেয় বড় ছেলে আব্বাস আলী (৬২)। সে শাশুড়িকে নিজের মা বানিয়ে দলিল লেখক সমিতির সম্পাদক মিজানুর রহমানের যোগসাজসে এই জাল দলিল করে নেন। একই পন্থায় ২০১৮ সালে ছোট দু’বোনের নামে ৩৯ শতাংশ জমিও জাল দলিল করে নেন দলিল লেখক হারুনের সহযোগিতায়। বিষয়টি দীর্ঘদিন গোপন থাকলেও চলতি মৌসুমে ওই সব জমির আবাদ করা ধান কেটে নেয় আব্বাস আলী। এক সাথে জমির দখল নেন। কিছু অংশে দুই বোনের বাড়ি থাকায় উচ্ছেদের হুমকি দেয় সে। ঘটে বাড়ি পোড়ানোর ঘটনাও। পরে জাল দলিলের বিষয়টি সবার নজরে আসে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানের মাধ্যমে গ্রাম আদালতে দারস্ত হয় ভুক্তভোগীরা। একাধিকবার নোটিশ দিলেও আব্বাস আলী হাজির হননি গ্রাম আদালতে।
বৃদ্ধা কাঞ্চন বিবি বলেন, ‘বাবা মুই বৃদ্ধ মানুষ। মোর ছইল আব্বাস ভুয়া দলিল করি নিছে তা মুই দু’বেটিক অনেক আগত নেখি দিছং। কেমন করি ওই দলিল করিল মুই কবার পাংনা। মোর কাছত কোনদিন টিপ নিবারও আসে নাই আব্বাস। মোর অসহায় বেটি দু’টার জমির ধান কাটি নিয়া গেছে। মোক ধাক্কে ফেলে দিছে। কাই এলা রাইতত আসি একটা ঘর পোড়া দিছে বাবা কবার পাংনা।’
সোনাভান ও মনোয়ারা বেগম বলেন, বড় ভাই আব্বাস আলী কসাই আমাদের মায়ের ভোটার আইডি ঠিক রেখে তার শাশুড়ির ছবি বসিয়ে মায়ের নামের ২৪ শতাংশ জমি জাল দলিল করেছে। একই কায়দায় এলাকার মুরুব্বির মাধ্যমে আমাদের দু’বোনকে সরকারি ঘর পাইয়ে দেবার কথা বলে ভোটার আইডির কপিসহ ছবি নিয়ে যায়। আইডি নম্বর ঠিক রেখে ছবি নকল করে দু’বোনের ৩৯ শতাংশ জমির জাল দলিল করে নেয়। স্বাক্ষী এবং মুহুরির মাধ্যমে জানতে পেরেছি এসব দলিল পার করতে প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করেছে আমার ভাই। চেয়ারম্যানসহ থানায় অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার পাচ্ছি না। ভাইয়ের এমন অত্যাচারে আমরা কোথায় যাবো কোন ক‚ল পাচ্ছি না। বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি।
স্বাক্ষী প্রদানকারী মমিনুল বলেন, আব্বাস আলী আমাকে বলেন ভাই শাশুড়ি আমাকে দেড় বিঘা জমি লিখে দেবে তুই একটু থাকিস। স্বাক্ষী হতে হবে। সেই হিসেবে আমি স্বাক্ষী হই। কিন্তু পরে জানতে পারি তার শাশুড়ির জমি নয় নিজের মায়ের জমি শাশুড়িকে মা বানিয়ে নিয়েছে।
নিজের শাশুড়িকে মা বানিয়ে জাল দলিল করার কথা স্বীকার করেন আব্বাস আলী। এই জন্য সে মিজানুর মহুরিকে ২৮ হাজার টাকা দিয়েছেন বলেও জানান। এছাড়াও তিনি ছোট ভাইয়ের ১০ শতাংশ জমি ক্রয় করে নেবার সময় দু’বোনের সম্পত্তিও ক্রয় করে নিয়েছেন বলে জানান। তবে তার বোনরা দলিল করার সময় উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু কিভাবে দলিল করে দিল হারুন মহুরি সে বিষয় তিনি চুপ থাকেন। কোন উত্তর দেননি।
দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান ও হারুন মহুরি অর্থের বিনিময়ে দলিল জালিয়াতির ঘটনার কথা অস্বীকার করেন। তারা দোষ চাপালেন জমি গ্রহীতার উপর। তারা বলেন, ভোটার আইডির কপি, ছবি এবং সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে দাতাদের উপস্থিতিতে দলিল করা হয়। এখানে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই।
ভ‚রুঙ্গামারীর সাব-রেজিস্ট্রার নাবীব আফতাব জাল দলিলের বিষয়ে নিজের দায় এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, ১০০/১৫০ দলিল পার করতে হয় আমাকে। এগুলো যাচাই-বাছাই করার সুযোগ কম থাকে। দলিল বাতিল করার ক্ষমতা আমাদের নেই। একমাত্র আদালতের মাধ্যমে সেটি হয়। তবে জাল দলিল বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।