Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

নিহতদের স্বজনরা খুশি জঙ্গিদের ফাঁসির রায়ে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৮ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

মারা যাওয়ার পর আমার ছেলের লাশটাও দেখতে পারলাম না। যারা আমার ছেলেক হত্যা করিছে আমি তাদের কঠোর শাস্তি, ফাঁসি চাইছিলাম। জঙ্গিদের ফাঁসির রায় হইছে। আমি খুশি। এখন মরেও শান্তি পাব। যেন আর কারো মায়ের কোল খালি করবার না পারে জঙ্গিরা। হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার রায় ঘোষণার পর এমনই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন নিহত শেফ (পিজ্যা কারিগর) সাইফুল ইসলাম চৌকিদারের মা সমমেহের বেগম (৭০)। ঠিক একইভাবে বড় ভাই হারানোর বেদনা নিয়ে এসি রবিউল করিমের ছোট ভাই শামসুজ্জামান শামস বলেন, এই রায়ে সন্তুষ্ট। আশা করছেন, দ্রুত এই রায় কার্যকর হবে। রবিউল করিমের স্ত্রী উম্মে সালমা বলেন, ‘বিচারে হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হয়েছে। স্বামীর হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়েছে। এখন আমি ও আমার সন্তান এবং পরিবারের সবাই রায়ে খুশি। ওদিকে, রায় ঘোষণার পর নিহত জাকির হোসেন শাওনের বোন সোনিয়া বেগম বলেন, আমার ভাইতো নির্দোষ ছিল। তদন্তেও সেটা প্রমাণ হয়েছে। কিন্তু আমার ভাইটা মইরা যাওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ নেয় না। আমার বাবা আব্দুস সাত্তার ও মা মাকসুদা বেগম বিনা চিকিৎসায় আজ মৃত্যু পথযাত্রী। সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছোট ভাই শাওনকে হারিয়ে আজ আমরা পথে বসেছি। শুধু হলি আর্টিজানের মালিক আমাদের খোঁজ খবর নেন। জঙ্গিদের ফাঁসির রায় হলেও আমাদের পরিবারের ভবিষ্যত আগের মতই অন্ধকারে আছে।

হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলায় মামলার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে তৎকালীন বনানী থানার ওসি নিহত সালাহউদ্দিন খান এর পরিবার। রায় ঘোষণার পর গতকাল বুধবার দুপুরে গোপালগঞ্জের ব্যাংকপাড়ার বাড়িতে সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসায় সালাউদ্দিনের পরিবার ও স্বজনরা এই প্রতিক্রিয়া জানান। এ রায়ে সালাউদ্দিনের বড়ভাই রাজু উদ্দিন খান রাজু সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে তার প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমার ভাই বনানী থানায় ওসির দায়িত্বে থাকাকালীন এই হামলা হয়। সেখানে জঙ্গিদের প্রতিরোধ করতে গিয়ে সে শহীদ হয়। রায়ে জঙ্গিদের ফাঁসি হয়েছে। এই রায়ে আমি ও আমার পরিবার খুশি। এই রায় যাতে দ্রুত কার্যকর ও বাস্তবায়িত হয়। আমি আশা করবো, উচ্চ আদালত থেকে এই রায় দ্রুত কার্যকর করবে।

একই কথা বলেছেন ওসি সালাউদ্দিন খানের স্ত্রী কিম খানসহ তার পরিবারের অন্যরা। কিম খান বলেন, হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের নিয়ে অনেক কস্টে বেঁচে আছি। এই রায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিলাম। এখন রায় হয়েছে। আমি ও আমার সন্তানরা রায়ে খুশি।’

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে নিজের জীবন বিপন্ন করে মানুষকে বাঁচানোর কর্তব্য পালন করতে হলি আর্টিজানে ছুটে গিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল করিম ও সালাউদ্দিন খান। জঙ্গিদের ছোড়া বোমায় নিহত হন তারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ