পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন, প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ সমাবেশ, বিভাগীয় সমাবেশ কিংবা মহাসম্মেলন যেকোন কর্মসূচি ঘোষণা করলেই ছুটে আসছেন লাখো জনতা। কারাবন্দী হওয়ার পরের সমাবেশ কিংবা দীর্ঘ ২১ মাস পরের সমাবেশেও একই চিত্র। সর্বশেষ গত ২ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, ১২ অক্টোবর ও ২৪ নভেম্বর খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনে দলটির সমাবেশে উপস্থিত হয়েছেন লাখ লাখ নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ। বিভাগীয় সমাবেশগুলোতেও বিপুল সংখ্যক জনতার উপস্থিতি নজর এড়ায়নি কারো। প্রতিটি সমাবেশের দিন পুলিশের অনুমতি পেয়ে অতি অল্প সময়ে এতো বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি অবাক করেছে শীর্ষ নেতাদেরও। আশান্বিত করেছেন আন্দোলন-সংগ্রামে সফলতার। তবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির প্রতি এতো বিপুল সংখ্যক মানুষের জনসমর্থন কাজে লাগাতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষোভও ঝরছে অনেকের কন্ঠে।
রাজধানীর বাড্ডা থেকে ২৪ নভেম্বর বিএনপির সমাবেশে আসা শহীদুল ইসলাম নামে এক বিএনপি সমর্থক বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জন্য যে কোন সভা-সমাবেশে ছুটে যাই। দলীয় কোন পদ না থাকলেও আক্ষেপ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা শহীদ জিয়া ও খালেদা জিয়াকে ভালোবাসি। বেগম জিয়া মুক্তি পেলেই মানসিকভাবে শান্তি পাবো। শহীদুল আক্ষেপ করে বলেন, বিএনপির এতো জনসমর্থন, খালেদা জিয়াকে সারাদেশের মানুষ ভালোবাসে, তার মুক্তি চায়। কিন্তু এই জনসমর্থন কাজে লাগাতে পারছেনা নেতারা।
সূত্রপুর থানা বিএনপির নেতা মনিরুল ইসলাম বলেন, নেতারা যে কর্মসূচিরই ডাক দেন নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন। কিন্তু নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচিতে কোন কাজ হবে না। প্রয়োজন নেত্রীকে মুক্ত করার মতো কর্মসূচি। আমাদের দল যেসব ইস্যু পেয়েছে এবং যেভাবে দলীয় প্রধানকে আটক করে রাখা হয়েছে অন্যকোন রাজনৈতিক দল হলে সরকারকে কবেই আন্দোলন করে ক্ষমতাচ্যুত করতো।
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকার পতন আন্দোলনের জন্য মাঠে নামতে সারাদেশের নেতাকর্মীরা মুখিয়ে আছেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীর অভাব নাই। প্রতিটি সভা-সমাবেশে তারা উপস্থিত হয়ে তা প্রমাণ করছেন। সঠিকভাবে রাজপথে নেতৃত্ব দিতে পারলে সরকার পতনের আন্দোলন সফল করতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হবে না। আন্দোলন করার প্রত্যয় যদি থাকে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও আন্তরিকতায় যদি কোন ফাঁকফোকর না থাকে, আর আমরা যদি টেলিভিশনের পর্দায় ও মঞ্চে ছবি দেখানোর জন্য প্রতিযোগিতা না করি তাহলে অবশ্যই নেতাকর্মীরা জীবন দিতে প্রস্তুত। তারা অতীতে জীবন দিয়ে প্রমাণও করেছেন। এখন তাদের পাশে আমরা থাকবো কিনা, সেটা প্রমাণের সুযোগ আগামী দিনে আসবে। সেই সুযোগ আমরা গ্রহণ করবো কিনা, ইতিহাসের পাতায় আমরা ঈমানদার হিসেবে থাকবো, নাকি বেঈমান হিসেবে থাকবো সেটা প্রমাণ করতে হবে।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, দেশের একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রধান এবং অন্যতম শীর্ষ জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রায় ২২ মাস ধরে কারাবন্দী। গণতন্ত্রের প্রশ্নে আপোষহীনতার কারণেই বেগম জিয়া মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই তাঁকে আটক করে রাখা হয়েছে বলে মনে করেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। দলীয় প্রধান আটক হওয়ার পর থেকেই মানববন্ধন, প্রতীকী অনশন, প্রতিবাদ সভা, বিক্ষোভ কর্মসূচি, লিফলেট বিতরণ, মহাসমাবেশসহ নানান কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। প্রতিটি কর্মসূচিতেই বিএনপি নেতাদের ডাকে ছুটে এসেছেন খালেদা জিয়া প্রেমী নেতাকর্মীরা। কখনো হাজার হাজার কখনো লাখো জনতা উপস্থিত হয়ে সমর্থন জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিকে। অঙ্গীকার করেছেন যেকোন কঠোর কর্মসূচি সফল করার। প্রয়োজনে নিজের জীবন বাজি রাখতেও পিছপা হননি তাদের কেউ কেউ।
তবে নিয়মতান্ত্রিক কর্মসূচিতে প্রিয় নেত্রীর মুক্তি সম্ভব হচ্ছে না দেখে সাম্প্রতিক সময়ে ঘরোয়া আলোচনা সভা, বিভাগীয় বিক্ষোভ সমাবেশসহ প্রায় প্রতিটি কর্মসূচিতেই কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার জন্য শীর্ষ নেতাদের কাছে দাবি জানিয়ে আসছেন তৃণমূল ও মধ্যম সারির নেতারা। অনেক ক্ষেত্রে ক্ষোভ, আক্ষেপ আবার অনেক ক্ষেত্রে আকুতি জানিয়ে তারা শীর্ষ নেতাদের বলছেন, বেগম জিয়াকে মুক্ত করা যাবে এমন কর্মসূচি ঘোষণা করুন। রাজপথ দখলের দায়িত্ব আমাদের, প্রয়োজন শুধু শীর্ষ নেতাদের রাস্তায় নামা। তাদের প্রশ্ন কবে রাজপথে নামবেন বিএনপির নীতি নির্ধারণী নেতারা?
তারা বলেন, সরকার প্রধানের ইচ্ছাতেই তাকে আটক করে রাখায় নিয়ন্ত্রিত বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে বিচার করতে পারছে না, এজন্য জামিনযোগ্য মামলায় বেগম জিয়ার জামিন হচ্ছে না। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও দেশের প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বরাবরই স্বীকার করেছেন নিয়ন্ত্রিত বিচারকদের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা যাবে না। তাঁকে মুক্ত করতে হলে রাজপথে নামার বিকল্প নেই।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, বিএনপির সমাবেশগুলোতে প্রমাণিত হয়েছে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির প্রতি সারাদেশের মানুষের সমর্থন রয়েছে। এতো অত্যাচার, নির্যাতনের পরও যেকোন কর্মসূচিতে হাজার হাজার লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হয়ে সেটি বারবার প্রমাণ করেছেন। মানুষ পাগল হয়ে গেছে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য। এখন শুধু কর্মসূচির প্রয়োজন, প্রয়োজন রাজপথে ঝাঁপিয়ে পরার। আর সময় নাই, আর বসে থাকলে চলবে না, এখন ‘ডু অর ডাই’ ছাড়া উপায় নাই। সংগ্রামে নামতে হবে, রাজপথ দখল করতে হবে। সমস্ত জনতা তাকিয়ে আছে বিএনপির দিকে। ডাক আসলেই তারা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য রাজপথে নামবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।