Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকারের পতন

আস্থা ভোট এড়াতে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

আজ বুধবার মহারাষ্ট্রে আস্থা ভোটের মাধ্যমে নিজের সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করতে হবে বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়নবিশ সরকারকে। মঙ্গলবার বিজেপি বিরোধী জোটের সঙ্গে একমত হয়ে এই নির্দেশ দিয়েছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এদিকে, আস্থা ভোটের আগেই মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে দেবেন্দ্র ফড়ণবীস ও উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে এনসিপি নেতা অজিত পাওয়ার আকস্মিকভাবে গতকাল পদত্যাগ করেছেন।

জানা গেছে, সুপ্রিম কোর্ট বুধবার আস্থা ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করার নির্দেশ দেওয়ার পরেই সংখ্যা জোগাড়ে তৎপর হয়ে ওঠে বিজেপি শিবির। কিন্তু যে অজিত পাওয়ারের কাঁধে ভর দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নিয়েছিলেন ফড়ণবীস, সেই অজিতই উপমুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর বিজেপির কাছে কার্যত সংখ্যা জোগাড় কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। সেই কারণেই নিজেও পদত্যাগ করছেন বলে সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন ফড়ণবীস।

এর আগে শনিবার যেভাবে সে রাজ্যে ফড়ণবীস মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেন তার বিরুদ্ধে রাজ্যপালের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় নবগঠিত কংগ্রেস, শিবসেনা এবং ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি) জোট। এনসিপির অজিত পাওয়ারকে সঙ্গে নিয়ে যেভাবে রীতিমতো এক গোপনীয় শপথ অনুষ্ঠানে দেবেন্দ্র ফড়ণবীস ক্ষমতা গ্রহণ করেছিলেন তার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে সম্মিলিতভাবে আবেদন করে তারা। সোমবার শুনানিতে সলিসিটার জেনারেল তুষার মেহতা আদালতকে বলেন, ‘অজিত পাওয়ার ২২ নভেম্বর ৫৪ জন বিধায়কের স্বাক্ষর সহ একটি চিঠি জমা দিয়েছিলেন।’ এই চিঠির পরেই রাজ্যপাল ভগৎ সিং কোশিয়ারি দেবেন্দ্র ফড়ণবীসকে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানান।

সোমবার মুখ্যমন্ত্রী পদে দায়িত্ব নিয়ে দেবেন্দ্র ফড়ণবীস কাজ শুরু করে দিলেও উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে নিজের দায়িত্ব বুঝে নেননি অজিত পাওয়ারকে। এদিকে ফড়ণবীস সরকারের প্রতিপক্ষ শিবসেনা-এনসিপি-কংগ্রেস জোট ১৫৪ জন বিধায়কের স্বাক্ষর সহ আদালতে তাদের নথি জমা দেয় এবং মহারাষ্ট্র বিধানসভায় আস্থা ভোট করানোর আহŸান জানায়। শুনানির পরে
আজ বুধবার সন্ধার মধ্যে ওই আস্থা ভোট সম্পন্ন করতে হবে বলে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। নতুন বিধায়করা বিকাল ৫ টার মধ্যে শপথ নেবেন এবং এর পরেই আস্থা ভোট হবে বলে জানায় তিন বিচারপতির বেঞ্চ। আদালত আরও বলেছে যে, আস্থা ভোট অবশ্যই ভিডিওগ্রাফ করতে হবে এবং এর সভাপতিত্ব করবেন একজন প্রোটেম স্পিকার বা অন্তর্র্বতীকালীন অধ্যক্ষ।

এদিকে, আস্থাভোটের আগে রণকৈশল স্থির করতে গতকাল দুপুরে তড়িঘড়ি জরুরি বৈঠকে বসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নয়াদিল্লিতে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির কার্যকরী সভাপতি জে পি নাড্ডাও। সেখান থেকেই ফড়ণবীসের কাছে পদত্যাগের নির্দেশ আসে। আস্থাভোটে শুধুমাত্র ফড়ণবীস সরকারকেই পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হত না। তা মোদি-শাহর কাছেও সম্মানরক্ষার প্রশ্ন। কারণ, শনিবার সাতসকালে মহানাটকীয় চালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। এবং তার আগে ভোরেই তড়িঘড়ি যে ভাবে রাজ্যের রাষ্ট্রপতি শাসন প্রত্যাহার করানো হয়, তাতে মোদি-শাহ জুটিরই হাত দেখছেন অনেকে। ফলে আস্থাভোট শুধুমাত্র বিজেপির রাজ্য রাজনীতির ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এমনটা নয়। তা ছিল কার্যত ওই জুটিরও মুখ বাঁচানোর লড়াই। সূত্র : এনডিটিভি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ