Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কর্মচারী নিয়োগে সিইসির সাথে চার ইসির বিরোধ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

কর্মচারী নিয়োগে নিয়ে সিইসির সাথে চার ইসির বিরোধ দেখা দিয়েছে। অভ্যন্তরীণ অনিয়মের কারণে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন আজ প্রশ্নের সম্মুখীন। সা¤প্রতিক সময়ে শূন্যপদের বিপরীতে কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা সম্পর্কিত কোনো বিষয়ই কমিশনকে অবহিত করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। গতকাল সোমবার এক লিখিত বক্তব্যে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এমন মন্তব্য করেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে এক ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা চলে আসছে, যা এতদসংক্রান্ত সংবিধান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ও নির্বাচন কমিশন কার্যপ্রণালী বিধিমালা সমর্থন করে না। ২৪ নভেম্বর ২০১৯ তারিখে কমিশনের এখতিয়ারের বিষয়টি মিডিয়ায় প্রকাশ পাওয়ায় সাংবাদিকরা আমার বক্তব্য জানতে চান। এই প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার স্বার্থে আমার অভিমত ব্যক্ত করতে হলো। তিনি বলেন, ৩৩৯ জনকে নিয়োগ দিতে ৮৫ হাজার পরীক্ষার্থীর আবেদন যাচাই-বাছাই ও পরীক্ষার আয়োজন করতে ইসি সচিবালয় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের একটি বিভাগকে ৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা প্রদান করে। কিন্তু কতজন পরীক্ষককে, কিভাবে টাকা প্রদান করা হয়েছে তার কোনো হিসাব কমিশনের কাছে নেই। এমনকি নিয়োগ কমিটির সদস্যরাও এ বিষয়ে অবহিত নন। নির্বাচন কমিশনে নিয়োগের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনারদের কিছু না জানানোকে সংবিধানের লঙ্ঘন বলেও মনে করছেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, স¤প্রতি ১২ এবং ২০ গ্রেডে শূন্যপদে ৩৩৯ জনকে নিয়োগ এবং সেই পরীক্ষা থেকে বহিষ্কৃত ১৩৫ জনের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি সে বিষয়ে জানতে চেয়ে কোনো তথ্য পাননি তিনি। এমন অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে না বলেও আশঙ্কা করেন এই নির্বাচন কমিশনার। আমি মনে করি, অভ্যন্তরীণ অনিয়মের কারণে, এই সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। অনেক ক্ষেত্রে সচিবালয়ের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। কিন্তু, নির্বাচন কমিশনকে প্রায় সর্বক্ষেত্রেই দায় বহন করতে হয়। এই অনভিপ্রেত অবস্থার অবসানের জন্য নির্বাচন কমিশন সংক্রান্ত বিষয়ে সংবিধান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ও নির্বাচন কমিশন কার্যপ্রণালী বিধিমালা কঠোরভাবে পরিপালন করা আবশ্যক। নির্বাচন কমিশন ও সচিবালয়ের মধ্যে সমন্বয় না থাকলে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।

গত ১৪ নভেম্বর আমাকে জানানো হয় যে, হাতের লেখার অমিল বা পরিচয়পত্রের অমিলের কারণে ভাইবার সময় ওই ১৩৫ জনকে বহিষ্কার করা হয়। তাদের প্রতারণার দায়ে কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, আমার এমন প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়। ‘মৌখিক পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখানো হয়েছে। কারো কারো কাছ থেকে লিখিত স্বীকারোক্তি নেয়া হয়েছে। লিখিতভাবে আমাকে আরও জানানো হয়, কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষায় ৩৩৯টি শূন্যপদের বিপরীতে ৮৫ হাজার ৮৯৩ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি ও উত্তরপত্র যাচাইয়ের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষদকে ৪ কোটি ৮ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে। এই অর্থ প্রধান নির্বাচন কমিশনার অনুমোদন করলেও কতোজন পরীক্ষককে কীভাবে এই টাকা দেয়া হয়েছে, তার কোনো হিসাব নির্বাচন কমিশনের কাছে নেই। এমনকী, নিয়োগ কমিটির সদস্যরা এবিষয়ে অবহিত নন। কমিশন সচিবালয় পরীক্ষা সম্পর্কে কিছুই জানে না। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রের ধরণ বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ।

তিনি বলেন, ১৪ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে তার অফিসকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় নির্বাচন কমিশনাররা অভিযোগ করেন যে, কমিশন সচিবালয় উক্ত নিয়োগ পরীক্ষা সংক্রান্ত ও অর্থ ব্যয় সম্পর্কিত বিষয়ে কমিশনকে কোনো পর্যায়েই অবহিত করেনি। উত্তরে কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব জানান, উল্লিখিত নিয়োগ বা এতদসংক্রান্ত ব্যয় নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ারবহির্ভূত। প্রধান নির্বাচন কমিশনারও তার বক্তব্য সমর্থন করেন। স্বাভাবিক কারণেই নির্বাচন কমিশনারবৃন্দ ২৪ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে একটি ইউ, ও নোটের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কার্যাদির বিষয়ে কমিশনের এখতিয়ার সম্পর্কে অবহিত হতে চান।



 

Show all comments
  • নাজারেথ স্বনন ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৫ এএম says : 0
    টাকা পয়সা সব একাই পাওয়াতে বাকি চারজন রাগ করছে।
    Total Reply(0) Reply
  • সাকা চৌধুরী ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
    টাকা ভাগ করা নিয়ে না নিয়োগ প্রার্থী কে কত জনকে নিয়োগ দিবে ? একটু পরিস্কার করে বলেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mahmud Hussain ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
    Dudok should investigate & see how many of them are CEC’s relatives or from his native place!
    Total Reply(0) Reply
  • Hasem Reja Hasem ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
    ভাগ না দিলে কি হবে??
    Total Reply(0) Reply
  • Jahed Hassan ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
    নিজেরাই ত ক্লিয়ার না,তাহলে তারা কিভাবে আমাদের স্বচ্ছ নির্বাচন দিবেন? তারা নিজেরাই ত অন্ধকারে আর নানান সন্দেহে জর্জরিত!
    Total Reply(0) Reply
  • Jashim Uddin ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
    সবাই হরিলুটে ব্যস্ত। এটা অনেকটা ওপেন সিক্রেট ।এই অবস্থা র জন্য এই আওয়ামীলীগ দায়ী থাকবে এদেশের মানুষের কাছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Khorshed Gazi ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৭ এএম says : 0
    চার কমিশনারের মত না নিয়ে ইসিতে কর্মচারী নিয়োগ......কোনো অসুবিধা নেই। সুস্থভাবে নির্বাচন রাতের বেলা করেছেন, উনার উপর সরকারের বিশেষ সুদৃষ্টি আছে, উনি কিছুর পরোয়া করেন না। অভাগা জনগণ উনাকে ভীষণ ঘৃণা করলেও উনার যায় আসে না। উনি সবকিছুর উর্দ্ধে। রাতের নির্বাচন উনকে মহান দেশ প্রেমিক করেছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Kamrul Alam ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:৪৭ এএম says : 0
    অনুমতি না নিলে কী করবেন? কিছুই করার নাই। পারলে পদত্যাগ করে দৃষ্টান্ত করুন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ