Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঢাকার বায়ুদূষণ অসহনীয় পর্যায়ে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

রাজধানী ঢাকা মহানগরে বায়ুদূষণের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, ইটভাটা, মোটরযানের কালো ধোঁয়া এবং যথেচ্ছ নির্মাণকাজ এই তিন কারণে ঢাকাসহ সারাদেশে বায়ুদূষণের মাত্রা বাড়ছে। গতকাল সোমবার পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকার বায়ু ও শব্দদূষণ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।

মো. শাহাব উদ্দিন বলেন, জনগণকে বায়ুদূষণ থেকে মুক্ত করা কিভাবে সম্ভব সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সভা ডাকা হয়েছে। ঢাকা সিটিতে বায়ুদূষণের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অবকাঠামো ও বিভিন্ন কাজে সমন্বয় করা প্রয়োজন। ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেস-হাইওয়েসহ বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রী বলেন, শহরের বিভিন্ন স্থানে ভবন নির্মাণের সময় পানি ছিটানো, যন্ত্রপাতি যত্রতত্র ফেলে না রাখা ও নির্মাণের ক্ষেত্র নির্ধারিত বেষ্টনীর মধ্যে আছে কি না তা দেখতে হবে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের বায়ুদূষণের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এ সমস্যা রোধে মূল দায়িত্ব পরিবেশ অধিদফতরের। ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান বাড়ানো হয়েছে।

শাহাব উদ্দিন জানান, ২০১৩ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে দেশের ইটভাটাগুলোর ওপর একটি জরিপ করা হয়। তাতে দেখা যায় দেশে ইটভাটার সংখ্যা ৪ হাজার ৯৯৫টি। ২০১৮ সালে পরিবেশ অধিদফতরের জরিপে দেখা যায়, ইটভাটার সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজার ৯০২টি হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৪৮৭টি ইটভাটা ঢাকা বিভাগের মধ্যে গড়ে উঠেছে। ওই গবেষণার তথ্যানুযায়ী ২০১০ সালে দেশে মোট যানবাহনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৭। ২০১৮ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ১৯ হাজার ৬৫৪।

মন্ত্রী জানান, প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএন’র এ দেশীয় পরিচালক রাকিবুল আমিনের মতে, বায়ুদূষণ মোকাবেলার প্রথম কাজ হচ্ছে দূষণের উৎস বন্ধ করা। দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে, শহরের বিভিন্ন স্থানে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা এবং ডোবাগুলো রক্ষা করা। এ দূষিত বায়ু মধ্যে নগরের মানুষ কীভাবে নিরাপদ থাকবে, সে ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। তবে সবার আগে বায়ুদূষণকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সঙ্কট হিসেবে দেখতে হবে।

বায়ুদূষণ রিটের আদেশ আজ
রাজধানীর বায়ুদূষণের বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ আজ। গত রোববার ধার্যকৃত তারিখ অনুযায়ী বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান এবং বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের ডিভিশন বেঞ্চে এ আদেশ হওয়ার কথা রয়েছে।

রাজধানীর বায়ুদূষণ নিয়ে চলতি বছর ২১ জানুয়ারি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে ‘হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ’ রিট করে। শুনানি শেষে ২৮ জানুয়ারি রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রিটের শুনানিতে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না-এই মর্মে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে রাজধানীর যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কার (রাস্তায় এবং নির্মাণাধীন কাজের জায়গা) কাজ চলছে সেসব এলাকা ঘেরাও করে কাজ করার পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এছাড়াও যেসব এলাকায় উন্নয়ন ও সংস্কার কাজ চলছে এবং যেসব এলাকা ধুলাবালিপ্রবণ যেসব এলাকায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিনে ২ বার পানি ছিটাতে দুই সিটির মেয়র ও নির্বাহীগণকে নির্দেশ দেয়া হয়।ওই আদেশের পর বর্ষাকাল চলে আসে। এতে প্রাকৃতিভাবেই ধুলা সমস্যার সাময়িক সমাধান হয়। কিন্তু শুষ্ক মৌসুম শুরুর সাথে সাথে রাজধানী আবারোও ধূলাধূসরিত হতে থাকে। বিষয়টি আমরা আদালতে তুলে ধরি। শুনানি শেষে আদালত গত রোববার আদেশের তারিখ ধার্য করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ