পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএসএফ বেনাপোল, মহেশপুর ও জীবননগরের বিভিন্ন সীমান্তপথে বাংলাভাষীদের বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো অব্যাহত রেখেছে। গতকাল রোববারও বেনাপোলের দৌলতপুর সীমান্ত থেকে ওপার থেকে পাঠানো ৩২জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে বিজিবির খুলনার দৌলতপুর ক্যাম্প আটক করেছে। বিজিবি তাদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করেছে। বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মামুন খান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আটককৃতদের নামে পাসপোর্ট আইনের ১১সি ধারায় মামলা হয়েছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, তাদের জ্ঞিাসাবাদ করে তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এর আগে ৪৯ বিজিবির বেনাপোলের দৌলতপুর ক্যাম্পের কমান্ডার মোজাম্মেল হোসেন জানান, ভারত থেকে অবৈধপথে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ ও শিশু বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে এমন ধরনের গোপন সংবাদ পেয়ে বিজিবি সদস্যরা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে করে একটি আম বাগানে অভিযান চালিয়ে ১৭ জন পুরুষ, ১৩ নারী ২ জন শিশুকে আটক করেন।
আটক জরিনা বেগম (৩৫) জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ভারতের ব্যাঙ্গলুরু শহরে বসবাস করে আসছে। তারা সেখানকার বিভিন্ন বাসা বাড়িতে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। সেখানকার পুলিশ তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ভয় ভীতি দেখিয়ে আটক করে। দেশে ফেরত পাঠায়।
অপরদিকে আটক আলমগীর খান (৪৫) বলেন, আমরা একই পরিবারের ৭ জন দীর্ঘদিন ধরে ব্যাঙ্গলুরে বসবাস করে আসছি। স্ত্রী, বোনসহ আমরা বাসা বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছি। ভারতীয় পুলিশ তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বাংলাদেশে ফিরে যেতে বলে। ভারতীয় পুলিশ তাদের আটক করে বিএসএফ এর কাছে তুলে দেয়। তারাই ভারত সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেয়, পরে বিজিবি আমাদেরকে আটক করে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়। তবে যাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হয়েছে তারাই সবাই মুসলমান।
ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা জানান, মহেশপুর ও জীবননগর সীমান্তের ওপাারে কিছু বাংলাভাষীকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর জন্য জড়ো করা হয়েছে বলে সীমান্ত সূত্র জানিয়েছে। ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে বিজিবির সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে থাকলেও ভারতের বিভিন্ন সীমান্তে ওই দেশের ব্যাঙ্গালুর আসামসহ বিভিন্ন প্রদেশের বাংলাভাষী মুসলমানদের এক শ্রেণির মানব পাচারকারী যারা ধুড়পাচারকারী বলে পরিচিত তারা বিএসএস এর সহায়তায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পুশ করার জন্য সীমান্তের ওপারে কম বেশি জড়ো করছে। তবে বিজিবির ৫৮ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল কামরুল হাসান ইনকিলাবকে জানান, বিজিবির সদস্যরা আগের চেয়ে অনেক সতর্ক অবস্থানে আছেন। উপজেলা প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় স্থানীয় জনগণ এবং গ্রাম পুলিশের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।
সীমান্ত এলাকার শ্যামকুড়, যাদবপুর, নেপা, বাশবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যানদের সাথে কথা বললে তারা জানান, তাদের কাছে সুনিদিষ্ট কোন তথ্য না থাকলেও বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে জানান, বিএসএফ দালালদের মাধ্যমে বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে এপারে ঠেলে পাঠানোর চেষ্টা রঅব্যাহত রেখেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন জনপ্রতিনিধি জানান, বিএসএফ এর সদস্যরা ওই সব দালালদের ব্যবহার করছে। একজন চেয়ারম্যান জানান, যে সব এলঅকায় কাটাতারের বেড়া নেই যেমন জলুলি, মাটিলা দিয়ে তারা বেশি পাঠানোর চেষ্টা করছে। কারণ ওই এলাকায় কাটাতারের বেড়া নেই এবং নদিতে পানিও আছে সামান্য। ফলে রাতের আধারে তারা এই সুযোগটিই নিচ্ছে। মহেশপুর থানার ওসি রাশেদুল আলম জানান, নতুন আর কাউকে পাইনি।
পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা জানান, ভারতে জাতীয় নাগরিক তালিকা (এনআরসি) শুরু হওয়ার পর সেদেশের মানুষ অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করতে পারে এমন আশঙ্কায় বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। ইতোমধ্যে পঞ্চগড়ের সব সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নীলফামারী ৫৬ বিজিবি ব্যাটালিয়ন, ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবি ব্যাটালিয়ন ও পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়ন সর্তক অবস্থানে রয়েছে। বিজিবি সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এনআরসি আতঙ্কে ১ নভেম্বর থেকে গত শুক্রবার পর্যন্ত অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে কয়েকশ নারী-পুরুষ ও শিশুকে আটক করেছে বিজিবি। তবে এ ঘটনায় পঞ্চগড়ের সীমান্ত দিয়ে এখনো কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটেনি। তবুও পঞ্চগড়ের ৩৮০ কিলোমিটার সীমান্তে সর্তক অবস্থান নিয়ে টহল জোরদার করা হয়েছে।
গতকাল রোববার পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার আনিসুর রহমান জানান, পঞ্চগড়ের বেশিরভাগ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘেরা। তবে বেশকিছু নদীর উৎসমুখ ভারতে হওয়ায় সেসব স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নেই। যেখানে কাঁটাতারের বেড়া নেই সেখানে বিজিবির ২৪ ঘণ্টা টহল থাকছে। পঞ্চগড়ের সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ যাতে না হয়, সে ব্যাপারে বিজিবি তৎপর রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।