Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

চার মাসেও মেলেনি সব জবাব

ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে রেনু হত্যা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০২ এএম

 

ছেলেধরা সন্দেহে রাজধানীর বাড্ডায় গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার মামলার তদন্ত চারমাসেও শেষ হয়নি। ফলে গত দুই সপ্তাহ আগে এই মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে স্থানান্তর করে পুলিশ।
নিহতের ভাগ্নে নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছিল ৩০০/৪০০ জন। বাদী অভিযোগ করেছেন, ওই ঘটনার সঙ্গে উত্তরপূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষক, কর্মচারী জড়িত। তারা রেনু বেগমকে ছেলেধরার গুজব থেকে রক্ষা করতে পারেনি। প্রকাশ্যে দিনের আলোতে একটি সরকারি স্কুলের ভিতরে এ ঘটনা ঘটলেও ওই স্কুলের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নিচ্ছে না তদন্ত সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তারা।
ওই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ১৪ জনের মধ্যে ৩ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মোবাইল ফোনে ধারণ করা ভিডিও থেকে আসামীদের শনাক্ত করে পুলিশ। এই ১৪ জনের বাইরে আরো ৫/৭ জন রয়েছেন, যারা রেনু বেগমকে পিটিয়েছেন। তাদের ছবি অস্পষ্ট হওয়ায় পুলিশ তাদের শনাক্ত করতে পারেনি।
গত ২০ জুলাই সকালে উত্তরপূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই সন্তানকে ভর্তির বিষয়ে খোঁজ নিতে গেলে স্কুলের গেটে কয়েকজন নারী তাসলিমা বেগম রেনুর নাম-পরিচয় জানতে চান। পরে লোকজন তাসলিমাকে স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বাইরে কয়েকশ লোক একত্র হয়ে তাসলিমাকে প্রধান শিক্ষকের কক্ষ থেকে বের করে বাইরে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করে। ওই বর্বর ঘটনায় সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
বাড্ডার থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ওই ঘটনার পর হৃদয় (২০), ওয়াসিম (১৪), জাফর পাটোয়ারি, রিয়া, শাহীন (৩১), বাচ্চু মিয়া (২৮), বাপ্পী (২১), কামাল হোসেন(৩৮), আবুল কালাম আজাদ (৪০), মুরাদ (২২), সোহেল রানা (৩০), বিল্লাল হোসেন (২৮), আসাদুল ইসলাম (২২) ও রাজু আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে হৃদয়সহ ৩ জন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আদালতে জবানবন্দিতে মো. ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় বলেন যে, পদ্মা সেতু নির্মানে শিশুদের কাটা মাথা লাগবে। এজন্য সারাদেশের স্কুলে ছেলেধরা ঘোরাফেরা করছে। সে ওই গুজব বিশ্বাস করে। ওইদিন সে বাসা থেকে বের হয়ে শুনতে পায় যে, ছেলে ধরা সন্দেহে এক নারী ধরা পড়েছে। সবার সঙ্গে সেও ওই নারীকে মারধর করেছে।
বাড্ডা থানার ওসি আরো বলেন, যেসব আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি তাদের ধরার জন্য ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে অভিযান চলছে। তাদের ধরতে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হচ্ছে। যারা মামলার জবানবন্দি দিয়েছেন তাদের তথ্যের ভিত্তিতে মামলার তদন্ত কাজ এগিয়ে চলছে। তদন্ত কাজ প্রায় শেষের পথে। মামলার বেশ কিছু দিক পর্যালোচনা করার জন্য তদন্তভার ডিবিতে দেয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কমকর্তা বাড্ডা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুর রাজ্জাক জানান, ওই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজে কয়েজনের চেহারা সনাক্ত হয়েছে। পুলিশ তাদের চিহ্নিত করার জন্য বাড্ডা এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতে খোঁজ নেয়া হয়েছে। কিন্তু, তাদের কেউ পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি। তাদের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে যাদের চিহ্নিত করা গেছে তাদের ধরতে বিভিন্নস্থানে অভিযান চালানো হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ