পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
হৃদরোগ ওয়ার্ডের বিছানা, ফ্লোরে রোগী। স্থান সঙ্কুলান না হওয়ায় সঙ্কটাপন্ন রোগীদেরও রাখতে হয়েছে বারান্দায়। গুরুত্বপূর্ণ এ ওয়ার্ডের চিত্র এখন পুরো চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ৫শ শয্যার কাঠামোতে নির্মিত ১৩শ ১৩ শয্যার এ হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ভর্তি থাকছে ৩ হাজার। যা ধারণ ক্ষমতার দ্বিগুণেরও বেশি। প্রতিদিন রোগী ভর্তি হন ৬শ থেকে ৭শ জন। হাসপাতাল ছাড়েন ৬শ জন। প্রতিদিন আউটডোরে চিকিৎসা নেন ৩ থেকে ৪ হাজার।
চট্টগ্রাম বিভাগের সবচেয়ে বড় এ সরকারি হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারী। হাসপাতালে চিকিৎসার মান বাড়ছে। অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। তবে রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। বেশিরভাগ দরিদ্র রোগীরা এ হাসপাতালে ভর্তি হন। অনেক ক্ষেত্রে তারা অবহেলার শিকারও হন।
চমেক হাসপাতালে হৃদরোগ, কিডনি, শিশু রোগসহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে উন্নতমানের বিশেষায়িত সেবা চালু রয়েছে। এ কারণে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এসব ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, রোগীর চাপ অনেক বেশি। চিকিৎসকেরা জানান, শয্যা স্বল্পতার কারণে রোগীদের ফ্লোরে রাখতে হচ্ছে। কিছু রোগীকে বারান্দায়ও রাখা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ নিউরোসার্জারী ওয়ার্ডের চিত্রও একই রকম। ওয়ার্ড ছাড়িয়ে রোগীর ভিড় বারান্দা পর্যন্ত। চিকিৎসক ও নার্সরা জানান, রোগী বেশি হওয়ায় চিকিৎসা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে।
বিশেষ করে যারা ফ্লোর এবং বারান্দায় আছেন তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। রোগীর স্বজনরা জানান, বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় তারা এ হাসপাতালে আসেন। আর এ কারণে ফ্লোর কিংবা বারান্দায় থেকেও চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে অর্ধ কোটিরও বেশি মানুষের বসবাস। এর বাইরে বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশাল জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবায় চমেক হাসপাতাল একমাত্র ভরসাস্থল। শিল্পায়ন, সড়ক দুর্ঘটনা, অগ্নিকাÐসহ বিভিন্ন কারণে হাসপাতালে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তবে কিছু নির্দিষ্ট ওয়ার্ডে রোগীর চাপ সহনীয় মাত্রার বাইরে। এর মধ্যে শিশু স্বাস্থ্য ওয়ার্ডে প্রতিনিয়ত প্রায় ৬ শতাধিক, হৃদরোগ ওয়ার্ডে ৩৫০, অর্থোপেডিক ট্রমা ওয়ার্ডে ৩ শতাধিক, নিউরোসার্জারী ওয়ার্ডে প্রতিনিয়ত ২ শতাধিক রোগী ভর্তি থাকে। এসব ওয়ার্ডের প্রতিটিতে রোগীর সংখ্যা একটি পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের রোগীর চেয়ে বেশি।
হাসপাতালে নার্স, আয়া, ওয়ার্ড বয়সহ কর্মচারীদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগও অনেক পুরনো। রোগীদের স্বজনদের অভিযোগ, বখশিস ছাড়া তারা সেবা দিতে চান না। রোগী এবং তাদের স্বজনদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন তারা। তবে কর্তৃপক্ষের নজরদারির কারণে দুর্ব্যবহার কমে আসছে। হাসপাতালে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও আগের তুলনায় বেড়েছে। হাসপাতাল থেকে পর্যাপ্ত ওষুধ না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন রোগীদের কয়েকজন। তারা বলছেন, সব ওষুধই বাইর থেকে কিনতে হচ্ছে। এতে করে হতদরিদ্র রোগীরা পড়েছেন বিপাকে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, সরবরাহ কমে যাওয়ায় পর্যাপ্ত ওষুধ দেয়া যাচ্ছে না।
চট্টগ্রাম মহানগরীসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য ক্লিনিক গড়ে উঠলেও সেগুলোতে মানসম্মত চিকিৎসা নেই। উল্টো মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে ভুল ও অপচিকিৎসার শিকার হচ্ছেন অনেকে। এ কারণে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছেন সচ্ছল ব্যক্তিরাও। এ হাসপাতালে রয়েছে শিশুদের ক্যান্সার, কিডনি চিকিৎসার সুব্যবস্থা। বৃহত্তর চট্টগ্রামের বাইরের জেলাগুলো থেকেও এসব ওয়ার্ডে রোগী আসছে।
৪২ ওয়ার্ড বিশিষ্ট এ হাসপাতালে শয্যা সঙ্কট চরম আকারে পৌঁছেছে। হাসপাতালে চিকিৎসকের অনুমোদিত পদ রয়েছে ৩০৫ জন। চিকিৎসক আছেন ২৩৯ জন। নার্সের সংখ্যা ১০৩৬ জন। আছেন ৮৮৫ জন। ৩য় শ্রেণীর কর্মচারী ১৪৩ জন। আছেন ৮১ জন। ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী ৪৯৭ জন। আছেন ৩৪২ জন।
চমেক হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. আখতারুল ইসলাম বলেন, রোগীর চাপ বৃদ্ধির কথা চিন্তা করে হাসপাতালের শয্যা আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সিসিটিভির মাধ্যমে মনিটরিংয়ের কারণে রোগী হয়রানিও কমে গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।