Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহেশখালীতে আত্মসমর্পণ ৯৬ নৌদস্যুর

১৫৫ অস্ত্র ও ২৭৩ গোলাবারুদ জমা

শামসুল হক শারেক ও জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

কক্সবাজারের ক্রাইমজোন হিসেবে চিহ্নিত মহেশখালী উপজেলার কালারমারছরা ইউনিয়ন পরিষদ মাঠে সাগর উপকূলের ১২ বাহিনীর ৯৬ সদস্য আত্মসমর্পণ করেছে। গতকাল শনিবার দুপুরের আগে আত্মসর্পনের সময় তারা বিভিন্ন ব্রান্ডের ১৫৫ অস্ত্র ও ২৭৫ রাউন্ড গুলি জমা দিয়েছে। নৌদস্যুদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ১২ জন অস্ত্র তৈরির কারিগরও রয়েছে।

কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেনের সভাপতিত্বে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য জাফর আলম, আশেক উল্লাহ রফিক ও সাইমুম সরওয়ার কমল।
প্রথমে আত্মসমর্পণকারীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন। জীবনের ভুল স্বীকার করে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিরাজ বাহিনীর প্রধান সিরাজদৌল্লাহ। অভিশপ্ত জীবন থেকে ফিরে মুক্ত জীবনের চিত্র তুলে ধরেন ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর আত্মসমর্পণকারী নৌদস্যু নুরুল আমিন।

কক্সবাজার জেলার সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় সক্রিয় নৌদস্যু ও অস্ত্র তৈরির কারিগরদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা উপলক্ষ্যে ‘আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান’-এর মধ্যস্থতা করেন আনন্দ টিভির চট্টগ্রাম ব্যুরো ইনচার্জ এমএম আকরাম হোসাইন। এই স্বীকৃতির জন্য তাকে সংবর্ধিত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আত্মসমর্পণকারী প্রত্যককে দেয়া হয়েছে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান। অনুষ্ঠানের পর তাদের অস্ত্র আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে রয়েছে, মানসম্মত অস্ত্র তৈরির কারিগর জাফর আলম, মহেশখালীর কালারমারছড়ার আলোচিত জিয়া বাহিনী প্রধান জিয়াউর রহমান জিয়া, তার বাহিনীর সদস্য মানিক, আয়াতুল্লাহ, আব্দুস শুকুর, সিরিপ মিয়া, একরাম ও বশিরসহ অন্তত ১৫ জন।

চেয়ারম্যান তারেক শরীফের অনুসারি কালা জাহাঙ্গীর বাহিনী প্রধান জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য আবুল, সোনা মিয়া, জমির উদ্দীনসহ প্রায় ১৫ জন। নুনাছড়ির মাহমুদুল্লাহ বাহিনী প্রধান মোহাম্মদ আলী, সেকেন্ড ইন কমান্ড বদাইয়াসহ ১৫ জন। ঝাপুয়ার সিরাজ বাহিনীর প্রধান সিরাজউদ্দৌলাহ, নলবিলার মুজিব বাহিনী প্রধান মজিবুর রহমান প্রকাশ মুজিব এবং কুতুবদিয়ার লেমশীখালীর কালু বাহিনী প্রধান মো. কালু প্রকাশ গুরা কালুসহ তার বাহিনীর ১৫/২০ জন।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, কক্সবাজারের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক ও কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, অতিরিক্ত এসপি মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন, মহেশখালীর ইউএনও জামিরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আনোয়ার পাশা, মেয়র মকছুদ মিয়া, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শরীফ বাদশাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য যে, গত বছরের ২০ অক্টোবর মহেশখালীতে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদসহ ৪৩ নৌদস্যু আত্মসমর্পণ করে। সেখানে ৫ বাহিনীর ৩৭ জন এমএম আকরাম হোসাইনের মধ্যস্থতায় হয়েছে। তারা প্রতিজন ১ লাখ টাকা করে সরকারিভাবে আর্থিক অনুদান পেয়েছে। এরা সাবাই কারামুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। এছাড়া গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ইয়াবা ও অস্ত্রসহ টেকনাফে আত্মসমর্পণ করে ১০২ জন ইয়াবা কারবারি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ