পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার আগে মোদির তিনটি মূল নির্বাচনী প্রতিশ্রæতি ছিল। প্রথমত তিনি অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের ক্ষমতা কেড়ে নেবেন, দ্বিতীয়ত অযোধ্যায় হিন্দু দেবতা রামের নামে একটি মন্দির তৈরি করবেন এবং সকলের জন্য অভিন্ন নাগরিক আইন তৈরি করবেন যা বর্ণ, ধর্ম নির্বিশেষে সবার জন্য প্রযোজ্য হবে।
দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার ছয় মাস পর, মোদি ইতিমধ্যে তার দুটি লক্ষ্য অর্জন করতে মোটামুটি সক্ষম হয়েছেন। গত আগস্টে, তিনি ভারতের সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করেছেন। এটি একটি সাংবিধানিক বিধান যা অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের আংশিক স্বায়ত্তশাসন মঞ্জুর করে। এই বিধান কাশ্মীরের স্থায়ী বাসিন্দাদের কর্মসংস্থান, সম্পত্তির মালিকানা এবং রাষ্ট্রীয় সহায়তার অধিকার রক্ষা করত। এই ধারা প্রত্যাহার করে মোদি সরকার এলাকাটি অবরুদ্ধ ও সেখানে সমস্ত যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রাখে। স্বায়ত্তশাসিত রাজ্য থেকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অবনমিত হওয়ার পর অধিকৃত জম্বু ও কাশ্মীরের বাসিন্দারা আশঙ্কা করছেন যে, মোদির এই পদক্ষেপ মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলটি অভিবাসনকে উৎসাহিত করবে, যা সেখানকার জনসংখ্যার ভারসাম্যে পরিবর্তন আনতে পারে।
পাপাশি, হিন্দুদেরকে অযোধ্যাতে রাম মন্দির তৈরি করার অধিকার দিয়ে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ের ফলেও মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। চলতি বছরের নভেম্বরের ৭ তারিখে, অযোধ্যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে সকল ধর্মীয় সম্প্রদায়ের লোককে শান্তি ও সম্প্রীতি বজায় রাখার আহŸান জানিয়ে বেঙ্গালুরুতে মোমবাতি জ্বালিয়ে সমাবেশ করা হয়।
মুসলিম রাজনৈতিক দল ‘এআইএমআইএম’র সভাপতি আসাদুদ্দিন ওয়াইসি বলেছেন, রায়টি ‘সত্যের উপর বিশ্বাসের জয়’ যা, বিজেপি তার ‘বিষাক্ত এজেন্ডা’ বাস্তবায়ন করতে ব্যবহার করবে। নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে দেয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে দেশের ২০ কোটি মুসলমানদের কাছে একটি তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দেয়া হলো যে, তাদেরকে নিকৃষ্ট নাগরিক হয়ে নীরবতার সাথে তাদের প্রতিটি অপমান ও অবিচার সহ্য করতে হবে।’
এখন, অনেকেই ভাবছেন যে, আর কতদিনের মধ্যে অভিন্ন নাগরিক আইন আরোপ হতে যাচ্ছে। বর্তমানে, ভারতের বিভিন্ন ধর্মের লোকদের জন্য পৃথক বিবাহ, সম্পত্তি এবং অন্যান্য বিধান রয়েছে। অভিন্ন নাগরিক আইন হলে সেগুলো বাতিল হয়ে যাবে। এটি বিশেষত মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য উদ্বেগজনক, কারণ এটির অর্থ হতে পারে যে, শরিয়াহ আইনে তাদের বিবাহ, উত্তরাধিকার এবং সম্পত্তির অধিকার আর পরিচালিত হবে না।
বিশ্লেষকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের প্রস্তাবিত ধারণাগুলো নাগরিক ও সরকারী প্রতিষ্ঠানের মূলধারার বিশ্বাস এবং সমর্থন লাভ করার সাথে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী শাসনব্যবস্থা ও বহুত্ববাদী সমাজকে মিলিয়ে দেয়ার আন্তঘাতী প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।
ভারতের অশোক ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক গিলস ভার্নিয়ার্স সিএনএনকে বলেছেন, ‘এখানে পরোক্ষ ভাবে আরো কিছু প্রচেষ্টা রয়েছে যা কেবল নির্বাচনী কৌশলই নয়। ভারতে আরও গভীর ও কাঠামোগতভাবে সামাজিক রূপান্তর আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘মোদির বিজেপি এমন একটি দেশ তৈরি করছে যেখানে অন্যান্য ধর্মাবলম্বী নাগরিকরা ক্রমবর্ধমানভাবে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হচ্ছেন।’
সাংবাদিক সঞ্জয় কাপুরের উদ্বেগ আরও বিস্তৃত, তিনি বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশটির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এটি গণতন্ত্রের পক্ষে, বিশেষত আমাদের দেশে এতদিন যে ধর্ম নিরপেক্ষ গণতন্ত্রের প্রতিপালন করা হয়েছিল তার পক্ষে ক্ষতিকর। আমাদের বলা হয়েছিল যে, এই দেশ সংখ্যালঘুদের প্রতি ন্যায়সঙ্গত থাকবে, সবার ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার ভারতকে কোথায় নিয়ে যেতে চায় সে সম্পর্কে তারা স্পষ্ট ধারণা রাখে এবং এর সাথে ধর্মনিরপেক্ষতার কোনও সম্পর্ক নেই।’ (সমাপ্ত)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।