পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারত বাংলাভাষাভাষীদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঘটাতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিনে প্রায় ৩শ’ বাংলাভাষাভাষীকে বিএসএফ যশোরের বেনাপোল, দৌলতপুর ও ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে ঠেলে পাঠিয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তাদের আটক করে বেনাপোল পোর্ট থানা ও মহেশপুর থানা পুলিশে সোপর্দ করেছে। যশোর ও ঝিনাইদহের গোটা সীমান্ত জুড়ে অনুপ্রবেশরোধে বিজিবিকে সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। সীমান্তের ওপারের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভারত সরকার জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণ এনআরসি চ‚ড়ান্ত করেছে। ইতোমধ্যে আসাম থেকে ‘অবৈধ বাংলাদেশী’ হিসেবে বাংলাভাষাভাষীদের আটক করে বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দিচ্ছে। সীমান্তপথে ইতোমধ্যে বালাদেশে প্রায় ৩শ’জন অনুপ্রবেশ ঘটেছে। আরো বেশকিছু বাংলাভাষাভাষীকে ওপার সীমান্তে জড়ো করা হয়েছে।
যশোরের পোর্ট থানা বেনাপোলে অফিসার ইনচার্জ মো. মামুন খান ও ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুল আলম দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, বেনাপোলে ৪৯ জন ও মহেশপুরে ২শ’১৪ জন বাংলাভাষীকে আটক করে ৫৮বিজিবি, ৪৯বিজিবি ও ২১বিজিবি তাদের কাছে সোপর্দ করেছে। সূত্র জানায়, মহেশপুর সীমান্তের গ্রামে গ্রামে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তর থেকে নির্দেশ পেয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সীমান্তের সাধারণ মানুষ কমিটির লোকজনকে সহায়তা দেওয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। আটককৃতরা বাংলাদেশী না ভারতীয় তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
যশোরের ৪৯ বিজিবি’র কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল সেলিম রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, সীমান্তে কিছু কিছু অনুপ্রবেশ ঘটছে। বিজিবির হাতে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন আটকও হয়েছে। তাদের বেনাপোল পোর্ট থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তিনি বলেন, অনুপ্রবেশরোধে সীমান্তে সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। আটককৃতদের মধ্যে নারী, পুরুষ ও শিশু রয়েছে। ঝিনাইদহ জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে শত শত নারী পুরুষ। চলতি মাসের ২২ তারিখ পর্যন্ত অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২’শ ১৪ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে আটক করেছে বিজিবি। অনুপ্রবেশের ঘটনায় সীমান্তবর্তী মানুষের মাঝে একধরণের অস্বস্তি দেখা দিয়েছে।
জেলার মহেশপুর উপজেলার জুলুলী, খোসালপুর, বাঘাডাঙ্গা, পলিয়ানপুর ও শ্যামকুড় সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন অবৈধভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসছে শত শত নারী পুরুষ। ৫৮ বিজিবি’র হাতে আটক হয়েছেন ২’শ ১৪ জন। যাদের অধিকাংশই মুসলিম স¤প্রদায়ের মানুষ। ভারতের আসাম ও ব্যাঙ্গালুরসহ বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করা এ মানুষগুলোকে ভারতের নাগরিক পঞ্জির (এনআরসি) অর্ন্তভুক্ত করা হয়নি। যে কারণে ভারত সরকারের একটি সরকারি বাহিনীর চাপে তাদের দেশ ছাড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। আর সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ বলছেন, ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী রাতের আঁধারে শত শত নারী পুরুষ ঠেলে দিচ্ছে।
সীমান্তবর্তী যাদবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল হক জানান, সীমান্তবর্তী কিছু অংশে নদীর জন্য কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নেই। যে কারনে বিএসএফ বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকাচ্ছে। ন্যাপা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সামছুল আলম জানান, উপজেলা আইনশৃঙ্খলা মিটিং এর সিদ্ধান্ত মোতাবেক এলাকায় কমিটি করে আমার পাহারার ব্যবস্থা করেছি। অচেনা মানুষ দেখলে তারা বিজিবিকে খবর দেবে।
এদিকে সীমান্ত এলাকার বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, সীমান্তে অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকাতে বিজিবি এবং জনপ্রতিনিধিদের বিভিন্ন কমিটির চোখ ফাঁকি দিয়ে এক শ্রেণির দালাল তাদেরকে বাংলাদেশের ভিতরে ঢোকার সহযোগিতা করছে।
মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদুল আলম জানান, বিজিবি আটক করে তাদের কাছে দিয়েছে এ পর্যন্ত ২শ’১৪জন। এ ঘটনায় মহেশপুর থানায় ১৩ টি মামলা হয়েছে। জেলার সীমান্ত এলাকা ৭০ কিলোমিটার। এর মধ্যে ১০ কিলোমিটারে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া নেই বলে জানান পুলিশের ওই কর্মকর্তা।
বিজিবির ৫৮ বর্ডারগার্ড ব্যাটালিয়নের কমান্ডার লে. কর্নেল কামরুল আহসান বলেন, সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে যারা বাংলাদেশে আসছে তাদের ব্যাপারে বিজিবি কঠোর অবস্থানে রয়েছে। যারা আসছেন তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশি। অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে তাদের আটক করা হচ্ছে। এছাড়া সীমান্তবর্তী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে কমিটি গঠনের জন্য বলা হয়েছে। যাতে তারা এই কমিটির মাধ্যমে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পারেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।