Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে ৫শ’ কোটি টাকা আয়কর

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ২৩ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

দেশের দক্ষিণাঞ্চলে গত অর্থবছরে আয়কর আদায় প্রায় ৫শ’ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। যা চলতি অর্থবছরে ৫৭৮ কোটিতে নিয়ে যাবার লক্ষে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। করদাতার সংখ্যাও ২০ হাজার থেকে প্রায় ১ লাখ ৫৫ হাজারে উন্নীত হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত কর মেলায় দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলাসহ ১১টি স্থানে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল কর অঞ্চলের কর্মকর্তারা। এবারের কর মেলায় প্রায় ৯ কোটি টাকার আয়কর পাওয়া গেছে। গত বছরের কর মেলায় এর পরিমাণ ছিল ৮.৩৩ কোটি টাকার মত। দক্ষিণাঞ্চলে কর আদায় প্রবৃদ্ধিকে অত্যন্ত ইতিবাচক বলেই মনে করছেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

আয়করের প্রতি ভীতি দূর করাসহ কর প্রদানে নৈতিক দায়িত্বের বিষয়টি মানুষের মধ্যে ক্রমে প্রতিষ্ঠিত হবার ফলে দক্ষিণাঞ্চলে আয়কর আদায় বাড়ছে বলেও মনে করছেন কর বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে একই সাথে করদাতাদের সাথে আরো সৌজন্যমূলক আচরণসহ কর প্রশাসনকে পরিপূর্ণ হয়রানিবিহীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলারও তাগিদ দিয়েছেন কর দাতারা। পাশাপাশি যেকোন অসৎ উদ্দেশে করদাতাদের ওপর নূন্যতম বাড়তি চাপ প্রয়োগের বিষয়টিও পরিহারের আহবান জানানো হয়েছে সাধারণ করদাতাদের পক্ষ থেকে। এক্ষেত্রে করদাতাদের প্রতি ন্যায়বিচারসহ সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টির প্রতি গুরুত্ব প্রদানের আহবান জানিয়েছেন একাধিক করদাতা।
২০০১-২০০২ অর্থবছরে মাত্র ২০ হাজার করদাতা নিয়ে বরিশাল কর অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সময় বছরে আয়কর আদায়ের পরিমাণ ছিল ২৩ কোটি টাকার কিছু বেশি। সেখান থেকে গত অর্থবছরে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় করদাতার সংখ্যা ১ লাখ ৪১ হাজারের কাছাকাছি উন্নীত হলেও চলতি অর্থবছরে তা ১ লাখ ৫৫ হাজারে উন্নীত হয়েছে। গত অর্থবছরে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৪৮১ কোটি টাকা আয়কর আদায়ের পরে চলতি অর্থবছরে কর আদায়ের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৫৮০ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে প্রায় ৯৬ কোটি টাকার কর আদায় হয়েছে বলেও জানা গেছে। 
এবার দক্ষিণাঞ্চলের ১১টি জেলা উপজেলার কর মেলায় প্রায় ৯৪ হাজার করদাতা বিভিন্ন ধরনের সেবা গ্রহণ করেন। এ সময় মেলাগুলোতে ২৪ হাজারেরও বেশি করদাতা তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দেন। নতুন টিআইএন সংগ্রহকারীর সংখ্যাও ছিল প্রায় হাজার খানেক।
তবে এসব কিছুর পরেও দক্ষিণাঞ্চলে কর প্রশাসনকে এখনো চলতে হচ্ছে জনবল সঙ্কটসহ নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে। বরিশাল কর অঞ্চলের ২২টি সার্কেলে প্রায় ২৬৫ জনবলের মধ্যে ৪৫টি পদই শূন্য পড়ে আছে। ফলে একজন কর্মকর্তাকে একাধিক সার্কেলের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। যুগ্ম কর কমিশনারের ৩টি পদে আছেন মাত্র একজন। 
অপরদিকে বরিশালে কর কমিশনারেট-এর জন্য একটি বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়টি গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে অনুমোদনের অপেক্ষায় এক দফতর থেকে আরেক দফতরে ঘুরছে। প্রায় ৮০ কোটি টাকার প্রাক্কলিত ব্যয় সাপেক্ষ ওই ভবন নির্মাণ প্রকল্পটি এখনো পরিকল্পনা কমিশনের প্রাথমিক অনুমোদনও লাভ করেনি বলে জানা গেছে।
বরিশাল কর অঞ্চলের কমিশনার মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম জানান, দক্ষিণাঞ্চলে কর আদায় প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে কর প্রদানে নতুন সংস্কৃতি যথেষ্ট ইতিবাচক বলেও জানান তিনি। কর দাতাদের ওপর কোন অনৈতিক চাপ প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে সব কর্মকর্তাকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে জানিয়ে যেকোন অনিয়মের ক্ষেত্রে সব সময়ই জিরো টলারেন্স নিয়ে কাজ করার কথাও জানান তিনি। কর প্রশাসনে জনবল সঙ্কটের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিষয়টি এনবিআর ও মন্ত্রণালয়কে নিয়মিত অবহিত করার কথাও জানান কর কমিশনার। অদূর ভবিষ্যতে সমস্যা সমাধানে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ