অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচারের ঘটনায় নোয়াখালীর একটি বেসরকারি ক্লিনিকের বিরুদ্ধে রিট করেছেন এক প্রসূতি। গতকাল বৃহস্পতিবার তার পক্ষে অ্যাডভোকেট মো. জে.আর. খান রবিন এই রিট করেন। রিটে ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের কাছে ২৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে।

রিটের বিষয়ে জে.আর.খান রবিন জানান, লক্ষ্মীপুর চন্দ্রগঞ্জ থানার গোরারবাগ গ্রামের জামাল হোসেন বিপুর মেয়ে রিমা সুলতানা নিপা। গত ৮ জুন সন্তান প্রসবজনিত কারণে নোয়াখালীর ট্রাস্ট ওয়ান হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন জানায়, রোগীর সিজার বাধ্যতামূলক। অস্ত্রোপচারের বিকল্প নেই।
গত ৯ জুন চিকিৎসকের পরামর্শে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। যদিও আলট্রাস্নোগ্রাম অনুযায়ী প্রসূতির কোনো জটিল অবস্থা ছিলো না। এমনকি অস্ত্রোপচারেরও প্রয়োজন ছিল না। পরে ১২ জুন প্রসূতিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দিলে তিনি বাড়িতে ফিরে যান। এরপর প্রসূতির শারীরিক অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়লে ১৪ জুন তাকে আবারো একই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তার সেলাইয়ের জায়গায় ক্ষত দেখা দেয়।

চিকিৎসকরা নিপার শরীরের সেলাইতে ক্ষতের বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ও সংশ্লিষ্ট ডাক্তারকে বিষয়টি জানানো হলে তারা কোনোও পদক্ষেপ নেননি। বরং প্রসূতির বাবার অনুরোধে অন্য হাসপাতালের দু’জন চিকিৎসক নিপার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে ঢাকায় বিআরবি হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন।
গত ২০ জুন বিআরবি হাসপাতালে ভর্তির পর দ্বিতীয় দফায় নিপার অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসায় সুস্থ হন নিপা। এই হাসপাতালের চিকিৎকরা তাদের সুপারিশে বলেন, প্রসূতি নিপার প্রথম অস্ত্রোপচার (সিজার) প্রয়োজন ছিল না। সবমিলিয়ে নিপার চিকিৎসায় তার পরিবারের ব্যয় হয় ৫ লাখ টাকা। এর সঙ্গে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২০ লাখ টাকাসহ মোট ২৫ লাখ টাকা চেয়ে ‘ট্রাস্ট ওয়ান হাসপাতাল প্রাইভেট লিমিটেড’র বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারজানা ইতির বিরুদ্ধে এ রিট দায়ের করা হয়।

রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৯ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। শিঘ্রই রিটের শুনানি হবে বলে জানান অ্যাডভোকেট জে.আর. খান রবিন।