Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘ভুল চিকিৎসায়’ সাবেক ছাত্রীর মৃত্যু

জড়িতদের শাস্তি দাবি : ঢাবিতে মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৩ এএম


ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মুন্সেফপাড়ার খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের ‘ভুল চিকিৎসায়’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক ছাত্রী নওশিন আহম্মেদ দিয়ার (২৯) মৃত্যুতে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় ‘জড়িত’ চিকিৎসকদের শাস্তির মাধ্যমে এ ধরণের ঘটনা কমতে পারে বলে দাবি করেন।

জানা যায়, গত ৪ নভেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জলোর খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী ও স্থানীয় কিন্ডারগার্ডেনের শিক্ষিকা নওশিন আহম্মেদ দিয়ার (২৯) মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। পরে, দিয়ার বাবা গেদু মিয়া বাদী হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামিরা হলেন- হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. ডিউক চৌধুরী ও তার ক্লিনিকের দুই চিকিৎসক অরুনেশ্বর পাল এবং মো. শাহাদাৎ হোসেন রাসেল।

মামলার এজাহার বলা হয়, শহরের মুন্সেফপাড়ার ক্রিসেন্ট কিন্ডার গার্টেন স্কুলের সহকারী শিক্ষিকা নওশিন আহম্মেদ দিয়া প্রসব বেদনা নিয়ে গত ৩০ অক্টোবর হাসপাতালটিতে ভর্তি হন। সেখানে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে তিনি একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু, পুরোপুরি সুস্থ্য হওয়ার আগেই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ায় হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী এলাকায় তার স্বামীর বাড়িতে নেওয়া হয় দিয়াকে। ৪ নভেম্বর ভোরে দিয়ার প্রচ- মাথাব্যথা শুরু হলে তাকে আবারও ওই হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডিউক চৌধুরী ও চিকিৎসক অরুনেশ্বর পাল অভি এবং মো. শাহাদাত হোসেন রাসেল ‘ভুল ইনজকশন এবং ওষুধ’ প্রয়োগ করার পর দিয়া অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

দিয়া অজ্ঞান হওয়ার বিষয়টি গোপন করে চিকিৎসার নামে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন তারা। এসময় দিয়ার স্বজনরা মেডিসিনের অভিজ্ঞ চিকিৎসককে ডাকতে বললে ডিউক ও বাকি দুই চিকিৎসক চুপ থাকেন। একপর্যায়ে দিয়ার মৃত্যু হলেও তার মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগিয়ে ওইদিন দুপুর ১টার দিকে তাকে দ্রুত তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলেন। অ্যাম্বুলেন্সে করে দিয়াকে নিয়ে বিকেল সাড়ে ৪টায় ঢাকার ল্যাবএইড হাসপাতালে পৌঁছানোর পর সেখানকার চিকিৎসকরা কয়েক ঘণ্টা আগেই দিয়ার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান। মামলা দায়েরের পর ময়নাতদন্তের জন্য গত ১৫ নভেম্বর জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শহরের শেরপুর কবরস্থান থেকে দিয়ার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।

মানববন্ধনে ঢাবি রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের ভিপি ইসরাত জাহান তন্বী বলেন, আমরা এধরনের চিকিৎসকদের বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে নওশীন দিয়ার ফুফা বলেন, ‘আর কোন মায়ের যেন ভুল চিকিৎসার জন্য মৃত্যু না হয়। তার বাচ্চার বয়স ১ মাসও হয়নি। এই বাচ্চার কষ্টের ভাগ কে নেবে? খুনিদের অতি দ্রুত বিচার চাই।’ নওশীন দিয়ার ছোটবোন ময়ুর তালুকদার বলেন, ‘আমার বোনের মেয়ে জন্মের পর থেকেই মায়ের কোল হারিয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। মানববন্ধনে বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ