পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় সুমাইয়া আক্তার (১৯) নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সুমাইয়া আক্তার উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের পাঁচগাও গ্রামের ইতালী প্রবাসী জুলহাস মাদবরের স্ত্রী। এ ঘটনায় নড়িয়া থানা পুলিশ মামলা না নেয়ায় মঙ্গলবার শরীয়তপুর আদালতে মামলা করেছে নিহত সুমাইয়ার পরিবার।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ এপ্রিল উপজেলার পাঁচগাও গ্রামের আব্দুর রব শেখের মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে একই গ্রামের দুলাল মাদবরের ছেলে ইতালী প্রবাসী জুলহাস মাদবরের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পরে জুলহাস ঢাকায় বাড়ি কিনবে বলে সুমাইয়াকে তার বাবার বাড়ি থেকে ১০ লাখ টাকা আনতে বলে। টাকা দিতে অস্বীকার করলে স্বামী জুলহাস মাদবর (৩০), শ্বশুর দুলাল মাদবর (৫৮), শাশুড়ি সেলিনা বেগম (৪৫), ননদ আলো বেগম (২৫), চাচা শ্বশুর সিরাজ মাদবর (৫৫), মোহর চান মাদবর (৫৭), তার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা আক্তার (২০), আছিয়া আক্তার (১৯), ছেলে মতিউর রহমান মাদবর (২৫) মিলে সুমাইয়াকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে।
গত ৮ নভেম্বর আবার সুমাইয়াকে যৌতুকের জন্য চাপ প্রয়োগ ও মারধর করা হয়। সেই ধারবাহিকতায় পূর্বপরিকল্পনা মতে শুক্রবার রাতে টাকা দিতে অস্বীকার করলে সুমাইয়াকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মারধর করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে উঁচু করে বেঁধে হত্যার চেষ্টা করে। তখন তার চিৎকারে আশপাশের মানুষ এগিয়ে আসে। গুরুতর আহত অবস্থায় রাত ১১টার দিকে তাকে নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতলে প্রেরণ করেন।
সদর হাসপাতলে না নিয়ে সুমাইয়ার স্বামীর পরিবার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। শনিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুমাইয়ার মৃত্যু হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজে ময়নাতদন্ত শেষে রোববার সকালে তার স্বামীর বাড়িতে এনে জানাজা শেষে চন্ডিপুর কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় কেদারপুর ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার অনেকে জানান, সুমাইয়ার ননদ আলো বেগম, চাচা শ্বশুর মোহর চান মাদবর, তার মেয়ে প্রিয়াঙ্কা আক্তার, আছিয়া আক্তার, ছেলে মতিউর রহমান মাদবর মিলে শুক্রবার রাতে জুলহাসের বাসার ভেতর সাউন্ড বক্সে বিকট শব্দে গান ছেড়ে মারধর করে সুমাইয়াকে। পরে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে উঁচু করে বেঁধে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং যারা অপরাধী তাদের বিচার দাবি করেন এলাকাবাসী।
সুমাইয়ার মা বলেন, সুমাইয়াকে মারধর করে নড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করে এবং পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে ভর্তি করে কিন্তু আমাকে কিছুই জানায়নি। আমাকে জানায়, আপনার মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে মারা গেছে। নড়িয়া থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয়নি। তাই শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছি।
নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. এসএম তৌহিদুল বাসার বলেন, সুমাইয়াকে যখন হাসপাতালে আনা হয় তখন প্রচুর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল এবং অজ্ঞানের মতো ছিল। গলা দিয়ে গড়গড় শব্দ হচ্ছিল। গলায় হালকা দাগ ছিল। তখন অক্সিজেন দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছিলাম। রোগীর অবস্থা খারাপ দেখে অ্যাম্বুলেন্স ডেকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলি।
নড়িয়া থানার ওসি মোহম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় কেউ মামলা বা অভিযোগ করতে থানায় আসেনি। স্থানীয় কিছু লোকজন আমাদের তথ্য দিয়েছিল যে, সুমাইয়া আত্মহত্যা করেছে। ঢাকার শাহাবাগ থানায় যোগাযোগ করেছিলাম। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।