পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
১৯৮৯ সালের নভেম্বর মাসে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হওয়ার ৩০ বছর পরেও ৪৯ দশমিক ৮ শতাংশ শিশু আজও জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ সম্পর্কে জানেনা। এডুকো এবং চাইল্ডফান্ড জোটের করা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে এও বলা হয় যে, দরিদ্র দেশগুলিতে শিশুরা এই সনদ সম্পর্কে উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থায় থাকা দেশসমূহের শিশুদের তুলনায় অনেক বেশি অবগত (৬১শতাংশ এবং ৩৩ দশমিক ৭ শতাংশ অনুপাতে)। ‘স্মল ভয়েসেস বিগ ড্রিমস’ শিরোনামের এই প্রতিবেদনটি ১৫টি দেশের ১২-১৫ বছর বয়সী ৫হাজার ৫শ’ শিশুদের উপর চলা জরিপের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরী করা হয়েছে।
এডুকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর জনি এম সরকার বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষর করা প্রথম দেশগুলির একটি হলেও এর সচেতনতা এবং বাস্তবায়নে এখনও যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ এবং প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিতকরণে সফলতা সত্ত্বেও এখনও অনেক শিশু তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়েছে।
শিশু অধিকার সনদের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরী করার প্রয়াস হিসেবে বাংলাদেশ সরকার সংসদ, সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ সহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যমে প্রচারের ব্যবস্থা করেছে। তবুও সচেতনতার মাপকাঠি করা হলে এখনও শিশুসহ বিশাল একটি জনগোষ্ঠী এই সনদের বিভিন্ন বিধি ও অনুচ্ছেদ সম্পর্কে অনবহিত রয়েছে। কিছুদিন আগে শিশু শ্রমিকদের উপর এডুকো বাংলাদেশের করা এক জরিপে দেখা গেছে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ গৃহকর্মী এবং ৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিশু পরিবহণ শ্রমিকেরা জানেনা যে শিশুশ্রম আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। প্রায় ৩৪ শতাংশ গৃহকর্মী এবং ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ শিশু পরিবহণ শ্রমিকের ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম সম্পর্কিত কোন ধারণাই নেই। একই জরিপে দেখা গেছে, ৫৮ দশমিক ৭৩ শতাংশ গৃহকর্মী এবং ৮২ দশমিক ৬৫ শতাংশ শিশু পরিবহণ শ্রমিকেরা কখনোই স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। এই ধরণের তথ্য উপাত্ত থেকে সহজেই অনুমান করার যায় যে শিশু সনদের বাস্তবায়নে এখনো অনেক অগ্রগতির প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও, এ ব্যপারে শতকরা কত শতাংশ লোক সচেতন রয়েছে সে সম্পর্কে সঠিক পরিমাণগত তথ্যের যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে।
তবে ‘স্মল ভয়েসেস বিগ ড্রিমস’ প্রতিবেদন থেকে এই বিষয়ে একটি তুলনামূলক বৈশ্বিক চিত্র পাওয়া যায় যেখানে বিভিন্ন দেশে সনদটির বাস্তবায়নে যথেষ্ঠ উদ্যোগের অভাব পরিলক্ষিত হয়। জনি এম সরকার বলেন, এটি একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই সনদের ৪২তম অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রসমুহকে সমাজে শিশুদের অধিকার সক্রিয়ভাবে প্রচার করতে বলা হয়েছে। অথচ প্রায় অর্ধেক শিশুই এর ব্যাপারে জানেনা। এ থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মান হয় যে, গৃহীত হওয়ার ৩০ বছর পরও শিশু সনদ বাস্তবায়নে এখনো অনেক কিছুই করণীয় রয়ে গেছে। এই দৃষ্টিভঙ্গিকে ন্যায়সঙ্গত করার কোনও অজুহাত নেই। রাষ্ট্রসমূহের তাদের দায়িত্ব পালনের সময় এখন এসেছে।
এডুকোর অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর ইউকিকো ইয়ামাদা বলেন, যে শিশুরা আনুপাতিক হারে উচ্চতর বৈষম্যের দেশগুলোতে বসবাস করে, তাদের এই শিশু সনদ সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যাবশ্যক, কারণ বৈষম্য মূলত শিশুদেরকে প্রভাবিত করে সবচেয়ে বেশি। আমরা যদি আরও সুন্দর এবং বৈষম্যেহীন সমাজ ব্যবস্থা অর্জন করতে চাই তবে এটি শিশু অধিকার সম্পর্কে ধারণা থাকা অত্যাবশ্যক। এবং আমাদের এখনই সক্রিয় হয়া উচিত। শিশুরা, বিশেষত সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় যারা আছে, আরও ৩০ বছর এই সক্রিয়তার জন্য অপেক্ষা করতে পারে না।
যদিও শিশুরা এই সনদ সম্বন্ধে অবগত নয়, তবে সাক্ষাৎকারে প্রায় ৭১ শতাংশ শিশু জানিয়েছে তারা শিশু অধিকার সম্পর্কে সচেতন। তবে, প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৪ জন (৩৯ দশমিক ২ শতাংশ) মনে করে যে প্রাপ্তবয়স্করা শিশুদের অধিকার সম্পর্কে জানে না। ইয়ামাদা বলেন, প্রাপ্তবয়স্করা কীভাবে শিশু অধিকারকে সম্মান জানাতে এবং রক্ষা করতে পারবে যদি তারা নিজেরাই এর অস্তিত্ব সম্পর্কে অবহিত না থাকে? সম্পূর্ণ সমাজকেই শিশু অধিকার সম্পর্কে অবগত হতে হবে, যদি না আমরা চাই জাতিসংঘ শিশু সনদ একটি অচল প্রস্তাবনা হিসেবে গন্য হোক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।