পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এ যেন শর্ষের ভেতরে ভূত। পেঁয়াজের দাম নিয়ে সরকার যখন বিব্রত। নিম্ন আয়ের মানুষকে কম দামে পেঁয়াজ দিতে ট্রাকে করে পেঁয়াজ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেয়। সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) ট্রাকের মাধ্যমে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে পেঁয়াজ বিক্রি করছে। কিন্তু সেই টিসিবির এই পেঁয়াজের ট্রাক ঘিরেও গড়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। তাদের দৌরাত্ম্যে ঠিকমতো পেঁয়াজ কিনতে পারছে না সাধারণ ক্রেতারা। সিন্ডিকেটের কাছে অনেকটাই অসহায় সাধারণ ক্রেতারা। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই।
মতিঝিল শাপলা চত্বরে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রির সামনেই গতকাল সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, পেঁয়াজের দাম বাড়ার পর থেকে রাজধানীতে স্বল্পমূল্যে ট্রাকে করে টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রি করছে। কিন্তু এই ট্রাকগুলো যেসব জায়গায় পেঁয়াজ বিক্রি করছে সেখানকার কিছু অসাধু লোকজন সংঘবদ্ধ (সিন্ডিকেট) হয়ে সাধারণ মানুষকে পেঁয়াজ কিনতে বিড়ম্বনায় ফেলছে। চক্রের সদস্যরা সাধারণ ক্রেতাদের লাইন ঠেলে সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। নিজেদেরকে টিসিবির লোক বলে দাবি করে। ফলে সাধারণ ক্রেতারা প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। বাধ্য হয়েই মানুষকে পেঁয়াজের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ সুযোগে সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা প্রতিদিন টিসিবির পেঁয়াজ কিনে তা অন্য জায়গায় বেশি দামে বিক্রি করছে। ঢাকার বেশ কয়েকটি স্পটে টিসিবির পেঁয়াজ ক্রয় করতে আসা ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ সিন্ডিকেটকে টিসিবির লোকজনই সহায়তা করছে। তাই এ সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে সঠিক মনিটরিংয়ের দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।
তবে টিসিবি সংশ্লিষ্টদের দাবি, জনবল সঙ্কটের কারণে অনেক সময় এসব চোখের সামনে অনিয়ম এবং একই ব্যক্তি একাধিকবার পেঁয়াজ সংগ্রহ করলেও নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আর এসব নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা প্রয়োজন বলে দায়ও এড়াচ্ছে তারা। ফলে এসব সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণে মিলছে না কার্যকর কোনো সমাধান।
মতিঝিলে জহিরুল ইসলাম নামের এক ক্রেতা জানান, তিনি দীর্ঘ এক ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকাবস্থায় একই ব্যক্তি দুই/তিন বার করে পেঁয়াজ নিয়ে গেছেন। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় টিসিবি ভবনের পাশে স্বল্পমূল্যে প্রতি কেজি ৪৫ টাকা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজ কেনার জন্য প্রায় তিন শতাধিক নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। যাদের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের মানুষ। তাদের কেউ কেউ সকাল ১০টা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন মাত্র এক কেজি দুই কেজি পেঁয়াজ কেনার জন্য। তাদের দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে চার ঘণ্টা পর দুপুর একটায় সেখানে আসে টিসিবির পেঁয়াজ ভর্তি একটি ট্রাক। ট্রাকটিতে এক হাজার কেজি রয়েছে বলে জানান টিসিবি সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু বিক্রি শুরুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ঘোষণা আসে সব পেঁয়াজ শেষ হয়ে গেছে। অর্থাৎ এক ঘণ্টায় এক হাজার কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়ে গেছে। কিন্তু তিন শতাধিক মানুষের লাইনের অর্ধশতাধিক ক্রেতা তখন পর্যন্ত পণ্যটি কিনতে পারেননি।
স্পটে দাঁড়িয়ে থেকে দেখা যায় পেঁয়াজ ভর্তি ট্রাকে আসার কিছুক্ষণ আগে ৮-১০ জন ব্যক্তি নিজেদেরকে টিসিবির লোক দাবি করে সাধারণ ক্রেতাদেরকে লাইন সাজিয়ে দিচ্ছে। কেউ যাতে লাইন না ভাঙে সেজন্য তারা পাহারাও দিচ্ছে। কিন্তু যখন ট্রাক এলো ঠিক তখনই ঘটল বিপত্তি। এতক্ষণ ধরে যারা সাধারণ ক্রেতাদের লাইন ঠিক করেছিল তারাই লাইনে ঢুকে গেল; তাও আবার সামনের সারিতে। এ সময় তারা নিজেদেরকে টিসিবির লোক বলে দাবি করে। তাদের কেউ কেউ দাবি করেছে টিসিবির গাড়ির ড্রাইভার। আবার কারও দাবি সে টিসিবিতে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছে।
পরিচয় জানতে চাইলে তারা সাংবাদিকের সামনে আবোল-তাবোল বলা শুরু করেন। কখনো দাবি করেন টিসিবির লোক, কখনো বলেন ক্রেতা। টিসিবিতে তারা কাজ করে না। তাহলে কেন সাধারণ ক্রেতাদেরকে টিসিবির লোক দাবি করেছিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, লাইনে ঝামেলা হচ্ছিল তাই আমরা লাইন ঠিক করে দিয়েছি। পরে এসে পেঁয়াজ কিনে নিয়ে তারা চলে যান। এ সময় সেখানে টিসিবির পণ্যের নিরাপত্তা পরিদর্শক এম এ বারী উপস্থিত থাকলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। বাইরের লাকজন নিজেদেরকে টিসিবির লোক পরিচয় দিয়ে পরে এসে আগে পেঁয়াজ নিয়ে যাচ্ছেন জানতে চাইলে এম এ বারী বলেন, এটা আমার দেখার বিষয় না। আমার দায়িত্ব হল ট্রাকে ঠিকমতো পেঁয়াজ এলো কিনা সেটি দেখা। মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, ওরা প্রতিদিনই ট্রাক থেকে পেঁয়াজ কেনে সেগুলো বাজার দামে অন্যদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করে। টিসিবির পেঁয়াজ কিনে বিক্রিতে বেশি লাভ হওয়ায় অনেক হকার নিজ ব্যবসা বন্ধ করে টিসিবির পেঁয়াজ সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়েছেন। ওদের ৮/১০ জনের একটা গ্রুপ আছে। তারা টিসিবির লোকদের সহযোগিতায় এমন কাজ করে থাকে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, এসব নিয়ন্ত্রণে করতে হলে জনবলের দরকার। কিন্তু আমাদের পর্যাপ্ত জনবল সংকট রয়েছে। আবার যারা এসব সিন্ডিকেটের কাজ করে তাদের ধরাও কঠিন। তারা সব সময় আশপাশেই ঘোরাফেরা করে। এক সময় তারা লাইনে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এমনকি তাদের ছেলেমেয়েদেরও দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে। তাদের কীভাবে ধরব? অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব নিয়ন্ত্রণের মূল দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। মন্ত্রণালয় থেকে সে ধরনের নির্দেশনা রয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছে, পণ্য বিক্রির সময় তারা আশপাশে থেকে শৃঙ্খলা বজায় রাখা জন্য কাজ করবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।