Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কারো ডাকের অপেক্ষা নয় তরুণদের নেতৃত্ব দিতে হবে

আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, যুগে যুগে কালে কালে যুবক-তরুণেরা সংগ্রাম করেছে, আন্দোলন করেছে। ভাষা আন্দোলনে সংগ্রাম করে ছাত্র-তরুণরা নেতৃত্ব দিয়ে রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠা করেছিল। ৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে মুসলিম লীগকে পরাজিত করতে তারাই ভূমিকা রেখেছিল। ৬৯’র ছাত্রদের ১১ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যূত্থান হয়। ৭১’র মুক্তিযুদ্ধেও ছাত্র-যুবকরা যুদ্ধ করেছে। ৯০’এ ছাত্রদের অভ্যূত্থান ও সংগ্রামে স্বৈরচার এরশাদের পতন হয়। তাই তরুন-যুবক-ছাত্রদের এই ক্রান্তিকাল থেকে দেশকে, দেশের মানুষকে, গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। নেতৃত্ব দিতে হবে। কারো জন্য অপেক্ষা করলে চলবে না। নিজেরা এগিয়ে যেতে হবে। কে আসলো কে আসলো না? কে ডাকলো কে ডাকলো না দেখলে চলবে না। ৫২, ৯০’এ কেউ কাউকে ডাক দেয়নি। তরুণরা এগিয়ে গেছে সামনে। ছাত্রদেরকেই অনুসরণ করেছে রাজনৈতিক দলগুলো।
গতকাল (সোমবার) বিকেলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের যৌথ উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিএনপিতে নতুন প্রাণের সৃষ্টি করেছেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তারেক রহমান অল্পদিনের মধ্যে বিএনপিকে গুছিয়েছেন। নতুন প্রাণ সৃষ্টি করেছেন। অত্যন্ত দুঃসময়ে সঠিক নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রফেসর মোজাফফর আহমেদ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর সংসদে একটি উক্তি করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন, মানুষ দুইভাবে নেতা হয়। একটা জন্মসূত্রে, আরেকটা নেতৃত্বের সকল গুণাবলী অর্জন করে। উনি (তারেক রহমান) দুটোই পেয়েছেন। জন্মসূত্রে নেতৃত্বের গুণাবলী পেয়েছেন এবং অতি অল্পসময়ের মধ্যে গুণাবলীগুলো অর্জন করেছিলেন।
তারেক রহমান ডিজিটাল বাংলাদেশের সূচনা করেছিলেন জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বলা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় এবং আজকে যারা শাসকগোষ্ঠি তারা দাবি করছে যে, তারাই নাকি এটাকে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে নিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে নাকি সবচেয়ে বেশি এগিয়ে নিয়ে গেছেন। কিন্তু এটা ২০০১ সালে শুরু করেছিলেন তারেক রহমান। প্রতিটি তথ্যের ডাটাবেজ তৈরি করে তিনি কম্পিউটারে সংরক্ষরণ করেছিলেন। সবখাতে ইউনিয়ন পর্যায়ে কি কি উন্নয়ন হচ্ছে, কোন কোন স্কুল, কলেজ, মাদরাসা, সেতু হচ্ছে তা সমস্ত কিছু তিনি নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু ১/১১ ঝড়ের মধ্য দিয়ে সেসমস্তগুলো বিনষ্ট করে ফেলা হয়েছে।
দেশের ১৬ কোটি মানুষ তারেক রহমানের দিকে তাকিয়ে মন্তব্য করে বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, আজকে দেশ ও জাতির সবচাইতে ক্রান্তিলগ্নে তারেক রহমানের ওপর দায়িত্ব এসেছে। এই দায়িত্ব জাতি তাকে দিয়েছে, সময় তাকে দিয়েছে। তার জন্য ২টা চ্যালেঞ্জ। এর একটি হচ্ছে- গণতন্ত্রের প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে। এই নেত্রী গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-স্বার্বভৌত্বের প্রতীক। তিনি বাইরে থাকলে আজকে যারা গোলামের মতো, দাসের মতো দেশকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, জনগণের সমস্ত অধিকার কেড়ে নিয়ে দানবীয় শাসন বিস্তার করেছে তারা জানে যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে তাদের অস্তিত্ব টিকবে না। এজন্য তাকে আটকে রাখা হয়েছে। আরেকটি হচ্ছে গণতন্ত্রকে মুক্ত করার চ্যালেঞ্জ। এই দুটি চ্যালেঞ্জ তারেক রহমানের সামনে এসে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষ তার দিকে তাকিয়ে। তারা তাকিয়ে আছে, তারা যে স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র অর্জন করেছিলে রক্ত দিয়ে সেটি রক্ষা করবে কে?
যে কোন মূল্যে খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করা হবে শপথ গ্রহণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা যেকোন মূল্যে খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্রকে মুক্ত করবো। আজকে দানবের হাতে দেশ পড়েছে, সব তছনছ করেছে। অর্থনীতি বলে কিছু নেই, ক্ষমতাসীনরা দাবি করে উন্নয়নের রোল মডেল কিন্তু দেখা যাচ্ছে ঋণ ঋণ আর ঋণ। চতুর্দিকে ঋণে সরকার পুরোপুরি পূর্ণ হয়ে আছে। শেয়ার মার্কেট, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট হচ্ছে, মেগাপ্রজেক্টের নামে মেগাদুর্নীতি হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলীয় দুর্নীতিপরায়ণ লোককে ভিসি বানিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। এভাবে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে তারা ধ্বংস করে দিচ্ছে। এদেশকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলের।
সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য, গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য, দেশকে রক্ষা করার জন্য আসুন আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হই। তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা বাংলাদেশকে মুক্ত করতে সক্ষম হবো।
সংগঠনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মীর হেলালের সভাপতিত্বে ওবায়দুর রহমান চন্দন ও নাজমুল হাসানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস-চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন, আহমেদ আজম খান, উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফজলুর রহমান, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামুসর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা কায়সার কামাল, শহীদুল ইসলাম বাবুল, আবদুল খালেক, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন। #



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ