পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ উদ্বুদ্ধ করতে ও এর গভীরতা বৃদ্ধির জন্য দেশটির বিনিয়োগকারীদের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, নিতসু, জেত্রো, নিপ্পন স্টিল, সুমিতোমো, টেক্কেন, হোন্ডা ও সজিত করপোরেশনের মতো বড় বড় জাপানি কোম্পানি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সার্বিক খাতে বাংলাদেশে বিশাল বিনিয়োগ করবে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যেই এসব কোম্পানি স্বল্পপরিসরে দেশের অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে। সামনে বড় আকারের বিনিয়োগ নিয়ে আসছে। এ বিষয়ে জাপানের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে। খুবশিগগিরই দুই দেশের প্রতিনিধিরা বসে বিনিয়োগের পরিমাণও নির্ধারণ করবেন। জাপানের রাষ্ট্রদূত বর্তমানে বৃহৎ একটি টিম নিয়ে এসেছেন। আমরা এতগুলো জাপানি বিনিয়োগকারী একসাথে কোনো দিন পাইনি। তারা সবাই এখানে এসেছে, তাদের একটাই উদ্দেশ্য আমরা সবাইকে চিনব ও জানব। চেনা ও জানার মাঝে আমাদের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারব। আমাদের যেসব প্রকল্প আছে সে সম্পর্কে জানলাম। প্রকল্পগুলো কোন অবস্থায় আছে? আমাদের করণীয় কী এবং তাদের করণীয় কী?
গতকাল শনিবার দিনব্যাপী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও জাপানি রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতোর প্রতিনিধিদল পারস্পরিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে জাপানের প্রধান বিনিয়োগকারীরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বলেন, জাপান বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু। জাতির জনকের হাত ধরেই জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, জাতির জনকের কন্যার হাত ধরে বাংলাদেশে বড় আকারে বিনিয়োগ করবেন জাপানের বিনিয়োগকারীরা। বাংলাদেশের অবকাঠামো ঠিক আছে। দুই দেশের প্রতিনিধিরা বসে বিনিয়োগের পরিমাণ নির্ধারণ করবেন। জাপানের বিনিয়োগকারীরা যাতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেন এ বিষয়ে নানা উদ্যোগ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তারই হাত ধরে বড় আকারে বিনিয়োগ আসবে বাংলাদেশে। তারা (জাপানি বিনিয়োগকারী) প্রতিশ্রæতিবদ্ধ তারা আমাদের সঙ্গে কাজ করবে। আমরাও প্রতিশ্রæতিবদ্ধ তাদেরকে নিয়েই আমাদের যে স্বপ্ন আগামীর পথে এগিয়ে যাবো।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের আলোচনা ভালো হয়েছে, সুন্দর হয়েছে। আমরা সামনে বিশদভাবে আরো একে অপরকে চিনতে ও জানতে পারব সেই সুযোগ তৈরি হয়েছে। আমরা অনেক বড় আকারে জাপানি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করি। জাপানি রাষ্ট্রদূত এর মধ্যে আরো মিটিং করেছেন। তিনি বহুবার বলেছেন, আমাদের সকল অবকাঠামো ঠিক আছে।
তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী নিজেও কাজ করছেন জাপানি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য। জাপানি বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার জাপান সরকারের সাথে মিটিং করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় আশা করি, আগামী দিনে অপ্রত্যাশিতভাবে দেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী যখন জাপান যাবেন অথবা জাপানের প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশে আসবেন, সেই সময় বিনিয়োগ অংক নির্ধারিত হবে যে কী পরিমাণে বিনিয়োগ আমরা প্রত্যাশা করছি। আমাদের যে প্রকল্পগুলো জাপানের সঙ্গে আছে। সেগুলো সুন্দরমতো কাজ চলমান আছে। কাজের গতিও ভালো। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই প্রকল্পগুলো শেষ হবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, মেট্রোরেল ও ১২০০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণসহ বেশ কিছু প্রকল্প চলমান আছে জাপানি অর্থায়নে। এসব প্রকল্পের বাস্তবায়ন গতি দেখেই জাপানি বন্ধুরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। মেগা প্রকল্পগুলো প্রধানমন্ত্রীর অফিস দেখাশোনা করে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমাদের ভবিষ্যতে অনেক বড় বিনিয়োগ দরকার। ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলায় ১ হাজার একর জমিতে গড়ে তোলা হবে জাপান অর্থনৈতিক অঞ্চল। এতে দেশে জাপানি বিনিয়োগ বাড়বে। জাপানি উদ্যোক্তারা এদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবেন। এরই মধ্যে ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণ চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। অবশিষ্ট ৫০০ একর জমি অধিগ্রহণও চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৫০০ একর জমি বরাদ্দের বিষয়ে চুক্তি হবে। পরবর্তীতে আরো ৫০০ একর জমি দেয়া হবে। জাপান বাংলাদেশের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ রেখে কাজ করতে চায়। এই প্রকল্পে কোনো ধরনের সমস্যা হোক আমরা তা দেখতে চাই না। আমরা আগে থেকেই সাবধান। আমরা সাবধানতা অবলম্বন করেই সামনে এগিয়ে যাবো। এই প্রকল্পে যেন কোনো ধরনের সমস্যা না হয়। আর চলমান প্রকল্পগুলোতে কোনো ছোটখাটো সমস্যা থাকলে তা সমাধান করা হবে। যাতে করে সঠিক সময়ে প্রকল্পের কাজগুলো আমরা করতে পারি সেজন্যও আমরা একসাথে বসেছি জাপানি বন্ধুদের সঙ্গে।
জাপানি প্রতিনিধিদলের প্রধান জাপানি রাষ্ট্রদূত নাওকি ইতো বলেন, জাপানি কোম্পানিগুলো বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে বিনিয়োগ করবে। বাংলাদেশের নানা অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক উন্নয়নেও বাংলাদেশের পাশে থাকবে জাপান। এক কথায় বাংলাদেশের উন্নয়নে যা যা করার দরকার সবই করবেন জাপানি বিনিয়োগকারীরা। কিছু ইস্যু ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। জাপানি কোম্পানি ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে অবদান রাখতে চায়। এর পাশাপাশি বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়াতে চায়। জাপানি কোম্পানিগুলো ব্যবসার পরিসর আরো স¤প্রসারণ করতে চায়। আমি বলতে চাই বাংলাদেশ ও জাপানের লক্ষ্য একসূত্রে গাঁথা, কিভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি স¤প্রসারণ করা যায় কিভাবে, কিভাবে বিজনেস ক্লাইমেটের উন্নয়ন করা যায়। আমরা আশা করি, সকল বিষয় আমরা অর্জন করতে পারব। এই সভা নিয়েও আমি আশাবাদী।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থ বিভাগের সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মনোয়ার আহমেদসহ জাপানি প্রতিনিধিরা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।