পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাদারীপুরে দিন দিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে কিশোরদের গ্যাং ‘কালচার’। স্কুল-কলেজের গন্ডি পেরুনোর আগেই কিশোরদের একটা অংশ জড়িয়ে পড়ছে এ গ্যাং কালচারে। শহরজুড়ে তাদের বেপরোয়া আচরণ এখন আতঙ্কের নাম। এই গ্যাং কালচারের প্রভাবে খুন হয়েছে একাধিক কিশোর-যুবক। বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে নিহত হয়েছে একাধিক কিশোর।
মাদারীপুর শহরের বিভিন্ন এলাকায় কমপক্ষে চারটি গ্রুপ বর্তমানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এসব গ্রুপের সদস্যরা দলবদ্ধভাবে শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের উত্ত্যক্ত করে থাকে। প্রতি গ্রুপে ১০ থেকে ৫০ জন সদস্য রয়েছে। এরা শুধু বখাটেপনা নয়, মাদক সেবন, এলাকায় প্রভাব বিস্তার, দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালানো, বখাটের বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় কিশোরীকে কুপিয়ে জখম ও পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে হত্যার চেষ্টাসহ পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ও দলগত ধর্ষণের মতো কর্মকান্ডেও অংশ নিচ্ছে।
গ্যাং কালচারের জেরেই গত ২৪ অক্টোবর রাতে শহরের সরদার কলোনি এলাকায় জেলা জজকোর্টের স্টোনোগ্রাফার মো. মিজানুর রহমানের মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় মেহেদী হাসান নামে এলাকার এক বখাটে তার দলবল নিয়ে বাসায় হামলা চালিয়ে কিশোরী মেয়েকে অপহরণের চেষ্টা করে। অপহরণে ব্যর্থ হওয়ায় কিশোরীকে ও তার পিতা মাতাকে কুপিয়ে পিটিয়ে জখম করে বখাটে মেহেদী ও তার দলবল। শুধু তাই নয় ওই বাসাটি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে মিজানুর রহমানের পরিবারের সদস্যদের হত্যা করার উদ্দেশ্যে বাসার চারিদিকে পেট্রোল ও অকটেন ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয়দের সহায়তায় বখাটে মেহেদীকে আটক করলেও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়।
গত ২৯ অক্টোবর রাতে মাদারীপুর শহরের জেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকা থেকে সোহান শেখ (১৪) নামের এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত কিশোর সোহান মাদারীপুর ইউআই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন বিকেলে বাসা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে বের হয় কিশোর সোহান। সন্ধ্যা পার হলেও তার কোনো সন্ধান না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে পরিবারের লোকজন। রাত ১০টার দিকে একটি ভবনের পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সোহানকে। পরে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহত কিশোরের বাবা হাবিব শেখের দাবি, তার ছেলেকে কিশোর গ্যাংয়ের ছেলেরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।
পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি টিভি) ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ফুটেজে একাধিক কিশোরকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। তবে তারা ওখানে কী কারণে গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ ১৪ জনকে আটক করেছে।
কয়েক মাস আগে শহরের সবুজবাগ এলাকায় এরশাদ নামের এক যুবককে খুন করা হয়। এটাও এলাকাভিত্তিক প্রভাব বিস্তারের কারণেই ঘটেছে বলে জানা গেছে।
মাদারীপুরের শহীদ বাচ্চু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কে এম রাশেদ কামাল বলেন, পারিবারিক শিক্ষার অভাবে অনেক স্কুল ও কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়েরা বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়াচ্ছে। এ সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে পারিবারিক শিক্ষার গুরুত্ব অনেক।
মাদারীপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সদস্য এনায়েত হোসেন নান্নু বলেন, মাদারীপুরে কিশোর অপরাধ বেড়েছে। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করব এই গ্যাং কালচার বন্ধ করার জন্য।
মাদারীপুর সদর থানার ওসি সওগাতুল আলম বলেন, কিশোর অপরাধ নিয়ে কাজ করার জন্য অফিশিয়াল নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা মোতাবেক আমরা কাজ করছি। এছাড়া কিশোর সোহানের নিহতের বিষয়টি নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে। ঘটনাস্থলের আশপাশের ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি টিভি) ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। শিগগিরই রহস্য উদঘাটন সম্ভব হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।