Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিএসএমএমইউতে খালেদা জিয়া ৭ দিনেও কোনো চিকিৎসক দেখতে যাননি

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসকরা খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে সরকারের শেখানো বক্তব্য ও ব্যাখ্যা দিলেও তাঁর চিকিৎসার কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহে কোন চিকিৎসক বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দেখতে যাননি। তাঁর হাতে যে ব্যথা ছিল তা পা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। সারা শরীরে প্রচ- ব্যথা। নার্সরা তাঁর হাতে-পায়ে হাত দিতে পারছেন না, হাত দিলেই তিনি প্রচ- যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে যাচ্ছেন। তাঁর ডান পায়ের গোড়ালীতে একটা ফোড়ার কারণে সেই যন্ত্রণা আরও তীব্রতর হয়েছে। অথচ সরকারি চিকৎসকরা দেশনেত্রীকে চিকিৎসা করছেন না। গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার জরুরি ভিত্তিতে উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। দেশবাসী তাঁর অসুস্থতা নিয়ে উৎকন্ঠায় প্রহর গুনলেও স্বাস্থ্যের সঠিক অবস্থা জনগণের সামনে প্রকাশ করছে না সরকার। বেগম জিয়ার রিউমেটোয়েড আর্থাইটিস এর জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চেয়ারম্যান এখনও কোন মতামত দিচ্ছেন না। অথচ ইতোমধ্যে রিউমেটোয়েড আর্থাইটিসের তিনজন চিকিৎসকের সমন্বয়ে বোর্ডের যে রিপোর্ট সেটিও প্রকাশ করা হচ্ছে না। মেডিকেল বোর্ডের চেয়ারম্যান তার বোর্ডের অপর তিন জন সদস্যকে নিয়ে অদ্যাবধি কোন বোর্ড মিটিং করেননি। মেডিকেল বোর্ডের চেয়ারম্যান কি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা অন্যান্য সদস্যদেরকে জানাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, কারাগারে যথাযথ ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে দেশনেত্রীকে চিরতরে পঙ্গু করে দেয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অপকৌশল প্রয়োগ করছে সরকার। বিনা চিকিৎসায় তাঁকে কারাগারে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যার চক্রান্ত চলছে। গত ৬৪৫ দিন যাবত বিনা অপরাধে কারাবন্দী বেগম খালেদা জিয়া যে গুরুতর অসুস্থ এটা দেশের প্রতিটি মানুষ জানেন। অথচ সবকিছু জেনেও শুধুমাত্র রুদ্ধকপাট মুক্তিহীন দেশনেত্রীকে রোগে-শোকে কষ্ট দেয়ার জন্যই তাঁর চিকিৎসায় বাধা দেয়া হচ্ছে। সুচিকৎসার অভাবে ৭৫ বছর বয়স্ক চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা দিন দিন আশংকাজনকভাবে অবনতি ঘটছে।

বুধবার খালেদা জিয়ার সঙ্গে তাঁর ভাই-বোনরা সাক্ষাত করে তাঁর গুরুতর অসুস্থতায় গভীর উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা প্রকাশ করেছেন জানিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী হাইলি এক্টিভ ডিফরমিং, রিউমেটোয়েড আর্থাইটিস, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশনসহ বিভিন্ন জটিল রোগে ভুগছেন। রোগের প্রয়োজনীয় যথাযথ চিকিৎসা ও পরিচর্যা না হওয়ার কারণে উনার হাত ও পায়ের ছোট ছোট জয়েন্টগুলোসহ বিভিন্ন জয়েন্ট ফুলে গেছে এবং তাতে তীব্র ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। উঠতে-বসতে পারছেন না। জয়েন্টগুলো শক্ত হয়ে যাচ্ছে, যা অচিরেই স্থায়ী রুপ ধারণ করতে পারে। হাত, পায়ের আঙুল বেঁকে যাচ্ছে। নিজ হাতে কিছু খেতেও পারছেন না। অথচ এই সমস্ত জটিল ও গুরুতর রোগগুলোকে নিয়ে সরকারের মন্ত্রী ও নেতারা উপহাস করছেন।
রিজভী বলেন, জনগণের সেন্টিমেন্ট তোয়াক্কা করে না বলেই সরকার দেশের একজন জনপ্রিয় নেত্রীর জীবনকে নিঃশেষ করে দেয়ার সকল আয়োজনে ব্যস্ত রয়েছে। একদলীয় পলিটিক্যাল মনোপলি বজায় রাখার জন্যই বেগম জিয়ার জীবন বিপন্নের আয়োজনে সরকারের আগ্রাসী অসহিষ্ণুতা প্রবল হয়ে উঠেছে। সেজন্য তাঁর চিকিৎসার অধিকারটুকুও কেড়ে নেয়া হয়েছে। বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, এই সরকার অন্ধ প্রতিহিংসার বশে বেগম খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতেই তাঁর সুচিকিৎসা প্রদানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তাঁর প্রাপ্য জামিনে সরাসরি বাধা দেয়া হচ্ছে। নগ্নভাবে আদালতের ওপর হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে। তাঁর স্বাস্থ্য নিয়ে অসত্য সংবাদ পরিবেশন করতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা এক ভয়াবহ চক্রান্তের বর্ধিত প্রকাশ।

সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকারের এই টালবাহানায় খালেদা জিয়ার কোনো ক্ষতি হলে এর পরিণতি ভালো হবেনা। এখনো সময় আছে, বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে, বিএনপির বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। দেশটাকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেবেন না। দেশের প্রতিটি মানুষ জানেন, এই বিনা ভোটের ভূয়া সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে তাঁকে নিয়ে যা করছে তা গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারো বলবো-এই ষড়যন্ত্র তো অনেক হলো, এবার থামুন। তিনি বেগম জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। ###

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ