Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিদেশে নারী শ্রমিক পাঠানো নিয়ে বিপাকে সরকার সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিদেশে নারী শ্রমিক পাঠানো নিয়ে ঝামেলায় আছে সরকার। একদিকে নারী শ্রমিকদের অত্যাচারের বিভিন্ন ঘটনা ঘটছে, অন্যদিকে দেশের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করার কারণে বিপাকে আছে সরকার। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, বিদেশে নারী শ্রমিক না পাঠানোর বিষয়ে সরকার কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। বিদেশে তাদের (নারী শ্রমিক) চাহিদা আছে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের আইন ভালো। কিন্তু এজেন্সিগুলো আইনের তোয়াক্কা করে না। আমি প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেছি। তাকে অনুরোধ করেছি, নারী শ্রমিক পাঠানোর জন্য নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করতে।

পরিসংখ্যান উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিদেশে বাংলাদেশের মোট ৬ লাখ নারী শ্রমিক কাজ করছেন, যার মধ্যে দুই লাখ সউদী আরবে রয়েছেন। বেশির ভাগ অভিযোগ সেখান থেকে আসে। আমাদের ৮ হাজার নারী কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে ৫৩ জন নারী কর্মীর মৃতদেহ এসেছে। কিন্তু আমরা জানি না, তাদের মধ্যে কে কে আত্মহত্যা করেছেন।

এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, নারী কর্মীরা নির্যাতিত হলে তাদের শেল্টার হোমে রাখা হয়। তাদের বলা হয়, তারা অভিযোগ করলে মামলা করা হবে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা অভিযোগ করতে চান না। তবে দেশে ফিরলে তারা অভিযোগ করেন, তাদের অত্যাচার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিদেশে শেল্টার হোম এবং ২৪ ঘণ্টার হটলাইন চালু করেছি। যে কেউ নির্যাতনের অভিযোগে শেল্টার হোমে এসে কিংবা হটলাইনে ফোন করে জানাতে পারে।

গত বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি কক্ষে আগুন লাগার বিষয়ে তিনি বলেন, আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়। পাঁচ মিনিটের মধ্যে আগুন নেভানো হয়েছে। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
আব্দুল মোমেন বলেন, আগামীকাল শনিবার থেকে ১৯ নভেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরে তিনি ওই দেশের প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের দাবি এনআইডি কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এতে প্রবাসীরা ভোটার তালিকায় যুক্ত হবেন।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয় জানিয়েছে, এখন থেকে বিদেশে বসেই অনলাইনে ভোটার হওয়ার আবেদন করতে পারবেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। প্রথমেই এ সুবিধা পেতে যাচ্ছেন মালয়েশিয়ার প্রবাসীরা। এরই মধ্যে গত ৫ নভেম্বর দুপুরে আগারগাঁও নির্বাচন ভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা ংবৎারপবং.হরফ.িমড়া.নফ ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভোটার হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করতে পারবেন। আবেদনের পর সেই সব আবেদন সঠিক কি না, ইসি তা কেন্দ্রীয়ভাবে যাচাই করবে। যাচাই-বাছাই শেষে ইসির কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট দেশে গিয়ে যোগ্য ও সঠিক আবেদনকারীদের ছবি তোলাসহ ফিঙ্গার প্রিন্ট ও চোখের মণির ছাপ (আইরিশ) নেবেন। প্রবাসীদের ফরম পূরণের ক্ষেত্রে আটটি তথ্য দিতে হবে। সেগুলো হলোÑ পিতা ও মাতার নাম ইংরেজি ও বাংলায়, বসবাসরত দেশের নাম, জিপ কোড, বাসা ও হোল্ডিং নম্বর, স্টেট বা প্রদেশ, ফোন নম্বর, শনাক্তকারী ব্যক্তির নাম। এছাড়া পাসপোর্ট নম্বরও উল্লেখ করতে হবে।

মালয়েশিয়ার পর সংযুক্ত আরব-আমিরাতে এই কার্যক্রম চালু হতে যাচ্ছে। এরপর পর্যায়ক্রমে যুক্তরাজ্য, সউদী আরব, সিঙ্গাপুরসহ অন্য দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিরা পর্যায়ক্রমে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করতে পারবেন। এ জন্য ভোটার তালিকা বিধিমালায় প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হয়েছে। এর আগে ইসি সরাসরি সিঙ্গাপুরে গিয়ে সেখানে বসবাসরত প্রবাসীদের ভোটার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে এ বিষয়ে যথাসময়ে সিঙ্গাপুর সরকারের কাছ থেকে অনুমতি না পাওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। পরে ইসি তাদের সিদ্ধান্ত পাল্টে মালয়েশিয়ায় অনলাইনে নিবন্ধনের পদক্ষেপ নেয়।
বিগত ১৯৯৮ সালে দেশের উচ্চ আদালত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার সংবিধান স্বীকৃত বলে ঘোষণা দেন। দীর্ঘ ১৯ বছর পর সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে। বিশ্বের ১৫৭টি দেশে কোটির ওপরে প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। বর্তমান কমিশনের এই উদ্যোগে তাদের দীর্ঘদিনের পূঞ্জিভূত ক্ষোভের অবসান হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকরা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ