Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পানির পাম্পের ঘোষণায় কসমেটিকসের চালান

চট্টগ্রাম বন্দরে শুল্ক ফাঁকির বড় চালান আটক

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

কন্টেইনার খুলতেই বেরিয়ে এলো শ্যাম্পু, বডি লোশন, হেয়ার জেলসহ হরেক প্রসাধনী সামগ্রী। অথচ কন্টেইনারটিতে থাকার কথা পানির পাম্প। কম শুল্কের পাম্পের ঘোষণা দিয়ে উচ্চ শুল্কের কসমেটিকস নিয়ে আসা হয়। গতকাল বুধবার চালানটি আটক করে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। মিথ্যা ঘোষণায় আনা এ চালানে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকি দেয়া হচ্ছিল।

২৩ হাজার কেজি পানির পাম্প আমদানির ঘোষণা দেয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। তবে কন্টেইনার খুলে ২০২ কেজি ওজনের ৪৮টি পাম্পের সাথে পাওয়া যায় ৩৭ হাজার কেজি (৩৭ টন) প্রসাধনী সামগ্রী। কন্টেইনারভর্তি চালানটি খালাসের মুহূর্তে সন্দেহের বশে আটক করে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। এরপর কন্টেইনার খুলে শতভাগ কায়িক পরীক্ষায় মিথ্যা ঘোষণার বিষয়টি ধরা পড়ল।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার উপ-কমিশনার নুর উদ্দিন মিলন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, শুল্ক ফাঁকি দিতেই মিথ্যা ঘোষণার আশ্রয় নিয়েছেন আমদানিকারক। তবে এর নেপথ্যে অর্থ পাচারের ঘটনা আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ আমদানিকারকের অতীত রেকর্ড পর্যালোচনা করা হবে। এরপর আইনগত ব্যবস্থা নেবে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন, খালাসের পর্যায়ে চালানটি আটক করা হয়। এরপর কন্টেইনার খুলে দেখা যায় উচ্চশুল্কের মূল্যবান প্রসাধনী সামগ্রী আনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এক কোটি ৩০ লাখ টাকা শুল্ক ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে। কাস্টম হাউসের রেকর্ডে দেখা যায়, চালানটির আমদানিকারক ঢাকার অনলি ওয়ান ইন্টারন্যাশনাল। আর পণ্য খালাসের দায়িত্বে ছিল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট উজালা শিপিং লাইনস। আমদানিকারক চীনব থেকে ২৩ হাজার কেজি পানির পাম্প আমদানির ঘোষণা দেয়। আমদানিকারকের নিয়োজিত সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের উজালা শিপিং চালানটি খালাসের জন্য গত ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম কাস্টমসে বিল অব এন্ট্রি জমা দেয়। যথারীতি শুল্কও পরিশোধ করে তারা। এরপরই কাস্টমস গোয়েন্দা দলের হাতে ধরা পড়ে চালানটি।

পরে কন্টেইনার খুলে কায়িক পরীক্ষার পর চালানটিতে পানির পাম্প পাওয়া যায় মাত্র ২০২ কেজি। অথচ ঘোষণা দিয়েছিল ২৩ হাজার কেজি। কন্টেইনারটিতে বিভিন্ন ব্রান্ডের প্রসাধনী পাওয়া যায়। এতে হেয়ার জেল, টুথপেস্ট, সাবান, শ্যাম্পু, ফেইস ওয়াশ, বডি ওয়াশ, টুথব্রাশ ছাড়াও প্লেয়িং কার্ড পাওয়া গেছে। এসব কসমেটিকস সামগ্রীর পরিমাণ প্রায় ৩৭ হাজার কেজি। আমদানিতে এসব পণ্যের ব্যাপারে কোন ঘোষণা ছিল না। কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা জানান, এ অনিয়মের সাথে আমদানিকারকের পাশাপাশি সিঅ্যান্ড এজেন্টও জড়িত থাকার প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রসঙ্গত শুল্ক ফাঁকি দিতে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে প্রায় মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি হচ্ছে। আবার পণ্যের ঘোষণা দিয়ে বালু, মাটি ও মূল্যহীন বস্তু আমদানি করার মাধ্যমে বিদেশে অর্থ পাচার করছে একটি চক্র। কাস্টম হাউসের নজরদারির কারণে প্রতিনিয়তই এ ধরনের চালান ধরা পড়ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ