Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সরকারি কর্মচারীসহ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে

জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০১ এএম

সরকারি কর্মচারীসহ দুর্নীতি সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারি কর্মচারীসহ অপরাধী যেই হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষের জন্য আমার জীবনটা উৎসর্গ করেছি। দেশের মানুষের কল্যাণে যা যা প্রয়োজন সবই করবো। প্রয়োজনে বাবার মতো আমার জীবনও যদি দিতে হয়, তাও আমি দেবো।
গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবির এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানান। এসময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইনের শাসন নিশ্চিত করতে দলমত নির্বিশেষে সব ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে দুর্নীতিসহ সরকার সব ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সারাদেশে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে ইতোমধ্যে দুর্নীতি ও অবৈধ অর্থসম্পদ অর্জনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। দুর্নীতির সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের অপরাধ যাতে কেউ করতে না পারে সেজন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর রয়েছে। এক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি কঠোর গোয়েন্দা নজরদারিও অব্যাহত রয়েছে। সরকারি কর্মচারীসহ অপরাধী যেই হোক দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে অনুসন্ধান করে তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার দেশের জনগণের কল্যাণে ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের পাশাপাশি ক্যাসিনো, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনও কাজ করছে। ২০১৯ সালে এ পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন ১৬টি ফাঁদ মামলায় ৬৮ জন আসামি গ্রেফতার করেছে। কারা কারা অভিজাত গাড়ি কিনেছে সে সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহের কার্যক্রম চলমান। সব দুর্নীতিবাজকে আইনের আওতায় আনতে দুর্নীতি দমন কমিশন কাজ করছে।

আন্দোলন-নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি-জামায়াত জোটসহ একটি বিশেষ মহল রোহিঙ্গাদের ব্যবহার করে একটি বিশেষ পরিস্থিতির সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। তরিকত ফেডারেশনের সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর এমন সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ঠিক রোহিঙ্গা সমস্যা সৃষ্টির পেছনে জিয়াউর রহমানের একটি হাত রয়েছে। কিন্তু আমরা সব সমস্যা শান্তিপ‚র্ণভাবে সমাধানে বিশ্বাসী। তিনি আরো বলেন, আমাদের পরিস্কার অবস্থান হচ্ছে, যারা এ ধরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে বা একটি জিনিষ স্পষ্ট বলতে চাই- বাংলাদেশের মাটিতে আমরা কোনো দেশের বা প্রতিবেশী কোনো দেশে কেউ কোন রকমের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায় বা কোন রকম সন্ত্রাসী তাদের কোন অবস্থান বাংলাদেশের মাটিতে হবে না, এটা থাকবে না। এব্যাপারটা আমরা নিশ্চিত করেছি। সংসদ নেতা বলেন, বাংলাদেশের মাটিকে কাউকে ব্যবহার করতে দেব না। আমাদের দেশে থেকে অন্য দেশে কোনো রকম সমস্যা বা কোন রকমের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাক সেটা আমরা কখনও স্থান দেইনি, দেব না। বাংলাদেশের সব সময় শান্তিপ‚র্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায়, সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব কারোর সঙ্গে বৈরীতা নয়- এই নীতিতে আমরা বিশ্বাস করি।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে মিয়ানমার রাজি হয়েছে এবং একটি চ‚ক্তিও করেছে। কিন্তু একটা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রোহিঙ্গারা দেশটিতে ফেরত যেতে চাচ্ছে না। এটি এখন মিয়ানমান সরকারের ওপরই নির্ভর করছে, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া তাদের নাগরিকদের (রোহিঙ্গা) ফেরত যাওয়ার পর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিরাপদ থাকবে সেই বিশ্বাসটি আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে সৃষ্টি করা তাদেরই (মিয়ানমার) দায়িত্ব।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধে সরকারের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশন দুর্নীতি বিরোধী অভিযান অর্থাৎ দুর্নীতির অনুসন্ধান, তদন্ত এবং প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তাছাড়া, সাম্প্রতিক সময়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ক্যাসিনোর সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তির সম্পদের তথ্য চেয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন দপ্তরে পত্র প্রেরণ করেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ