পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা আগের তুলনায় অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন। অধিকাংশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আশা করছে আগামীতে তাদের ব্যবসায় উচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান মনে করছে তাদের ব্যবসা বাড়বে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত। দেশের শক্তিশালী অর্থনীতি ও গতিশীল বৈদেশিক বাণিজ্যের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবসায়ীদের আস্থা বেড়েছে বলে মনে করছে বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি। আগামী বছর কেমন যাবে তা নিয়ে এইচএসবিসির এক বৈশ্বিক জরিপে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের আস্থার এই চিত্র উঠে এসেছে।
এই জরিপে বাংলাদেশের ১৯৩টি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসহ বিশ্বের নয় হাজার ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের নির্ণায়ক ও প্রবৃদ্ধির পরিকল্পনার ব্যবসায়িক চিন্তাভাবনা তুলে ধরা হয়েছে। সম্প্রতি জরিপের ফলাফল প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করেছে এইচএসবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় সব বাংলাদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই তাদের ভবিষ্যৎ ব্যবসায়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে আশাবাদী।
এইচএসবিসি বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী ফ্রাঁন্সওয়া দ্য ম্যারিকো বলেন, এশিয়ার প্রবৃদ্ধির কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর আশাবাদী হওয়াটাই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক ব্যবসায়িক পরিবেশ ও নতুন বাজারে নিজেদের ব্যবসার পরিধি সম্প্রসারণ করছে। নতুন প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ উন্নয়নে বিনিয়োগকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। দ্রæত বর্ধনশীল শিল্পের ১০ জনের নয় জনই বিশ্বাস করেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মাধ্যমেই নতুন উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ও কর্মক্ষেত্রে গতিশীলতার উন্নয়ন হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ম্যানুফ্যাকচারিং ও তৈরি পোশাক শিল্পের প্রবৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য থেকে লাভের ক্ষেত্রে আগামী বছরগুলোতে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।
বাংলাদেশে রয়েছে তেজী ভাব : প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিচ্ছে। ৯৭ শতাংশ বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানই আগামী বছর ভালো প্রবৃদ্ধি আশা করছে। এক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশের গড় হার ৭৯ শতাংশ ও এশীয় দেশগুলোর গড় হার ৭৭ শতাংশ। ৫০ শতাংশ বাংলাদেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১৫ শতাংশ বা তারও বেশি প্রবৃদ্ধি আশা করছে, যা বাংলাদেশের সম্ভাব্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির দ্বিগুণ। গত বছরের তুলনায় বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আত্মবিশ্বাসও ঊর্ধ্বমুখী। ৭৪ শতাংশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ীর আত্মবিশ্বাস আগের তুলনায় বেড়েছে। এশিয়ার অন্যান্য দেশে গড়ে ৪৩ শতাংশ ব্যবসায়ীর আত্মবিশ্বাস আগের বছরের তুলনায় বেড়েছে।
বাংলাদেশের ৮৩ শতাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা এশিয়াকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল হিসেবে দেখছেন। জরিপে অংশ নেওয়া ৪৩ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ব্যবসায়িক অংশীদার হলো চীন। আর ৩৬ শতাংশ উত্তরদাতা জাপানকে ও ২৭ শতাংশ ভারতকে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার মনে করেন। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক জোরদার করেছে। কারণ এ করিডোর বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভবিষ্যতে জাপানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের বিভিন্ন পন্থাও এসব প্রতিষ্ঠান চালিয়ে যাচ্ছে। ইউরোপের দেশগুলোর সঙ্গে গত ১২ মাসে ব্যবসায়িক গুরুত্ব প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে বলে জরিপে উঠে এসেছে।
এবারের জরিপে অংশ নেওয়াদের ৪২ শতাংশ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মনে করে, বিশ্বের বড় দেশগুলোর রক্ষণশীল নীতিমালার প্রভাব বাড়ছে। গত বছর জরিপে অংশ নেওয়াদের ৯৩ শতাংশ এ ধরনের মত দিয়েছিলেন। তা সত্তে¡ও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো যৌথ উদ্যোগে কাজ করছে।###
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।