পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উন্নয়নের জন্য শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখাটা জরুরী আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের স্বার্থে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে টেকসই প্রত্যাবাসনে বিশ্ব সম্প্রদায়কে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তার প্রসঙ্গে আমি বলতে চাই, নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এ অঞ্চলের নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। বিশ্ব সম্প্রদায়কে বিষয়টি অনুধাবন করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানাচ্ছি।গতকাল রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ঢাকা গ্লোবাল ডায়ালগ-২০১৯’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা ও শান্তি বজায় রাখার লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল এন্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিস (বিস) এবং ভারতের অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশন (ওআরএফ) যৌথভাবে তিনদিন ব্যাপী এই ডায়ালগের আয়োজন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর সংলগ্ন দেশগুলোর অর্থনীতি ও নিরাপত্তার জন্য এ অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অত্যাবশ্যক। সমুদ্রসীমা ও সামুদ্রিক অর্থনীতির ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ মনে করে, পরস্পরের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতা বা ‘জিরো-সাম গেম’ বঙ্গোপসাগর বা ভারত মহাসাগরের ‘নীল অর্থনীতি’ বিকাশের জন্য সহায়ক নয়। বরং তা এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধক।
এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা জোরদারকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সর্বদা বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর এলাকায় শান্তিপূর্ণ ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক জোরদারে সচেষ্ট। বাংলাদেশ তার দুই প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সম্পর্কিত বিরোধ শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করেছে। সমস্যা সমাধানে আমাদের এরূপ সহযোগিতা ও প্রচেষ্টা অন্য অঞ্চলের জন্য শিক্ষনীয় হতে পারে।
প্রতিবেশির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার পররাষ্ট্র নীতি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু প্রদর্শিত পদাংক- সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ মেনে চলছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার প্রদর্শিত এই পথে আমরা আন্তর্জাতিক ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক স্থাপনে অঙ্গীকারবদ্ধ। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. সামির স্মরন এবং বিস’র মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আব্দুর রহমান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে ‘আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক একটি ভিডিও উপস্থাপনা ও পরিবেশিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর এলাকায় জলদস্যুতা, সশস্ত্র ডাকাতি, উপকূলবর্তী ও সামুদ্রিক এলাকায় সন্ত্রাসী আক্রমণ, মানবপাচার, অস্ত্র ও মাদক পাচার- এর মত অপ্রথাগত নিরাপত্তা ঝুঁকি নিরসনে সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানিয়ে বলেন, কোন একক দেশের পক্ষে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, মাছসহ সামুদ্রিক সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত আহরণ ও নানাবিধ দূষণ এই এলাকার সামুদ্রিক পরিবেশকে বিপন্ন করে তুলেছে। শুধু বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগর নয়, বিশ্বের সকল সাগর-মহাসাগরই আজ এ ধরনের বহুবিধ সমস্যায় আক্রান্ত। শেখ হাসিনা বলেন, এই সকল সমস্যা সমাধানে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর এলাকায় দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সহযোগিতা ও অংশিদারিত্ব জোরদার করার জন্য আমি সকল রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ মনে করে, এই সহযোগিতা হতে হবে সকলের অংশগ্রহণমূলক এবং সবার উন্নয়ন ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে। এই অঞ্চলের দেশগুলোর ‘কমন এনিমি’ হিসেবে দারিদ্রকে চিহ্নিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্য আমাদের প্রধান শত্রু। একটি হিসেবে দেখা গেছে, বাংলাদেশ তার সমগ্র ভূ-খন্ডে যে পরিমাণ সম্পদ উৎপাদন করে, তার প্রায় সমপরিমাণ সম্পদ বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার মধ্য থেকে আহরণ করা সম্ভব। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, ভারত মহাসাগরকে ঘিরে মোট ৪০টি উন্নয়নশীল দেশের অবস্থান। সেখানে বাস করে বিশ্বের জনসংখ্যার ৩৫ শতাংশ। বঙ্গোপসাগর ও ভারত মহাসাগরের তীরবর্তী ও নির্ভরশীল দেশগুলোর অর্থনীতি ও তাদের বিপুল জনগোষ্ঠীর জীবন এই সাগর ও মহাসাগর দ্বারা নানাভাবে প্রভাবিত।
জলবায়ু পরিবর্তনে তেমন কোন ভূমিকা না থাকলেও বাংলাদেশকে এর প্রভাবে অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করে সরকার প্রধান বলেন, এরফলে সৃষ্ট বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, নদী ভাঙ্গনসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের বসবাস করতে হয়।’ এ প্রসঙ্গে তিনি অতি সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রসঙ্গ টেনে দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সক্ষমতা অর্জনেরও উদাহরণ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা দেখেছেন বিরাট এক ঘূর্ণিঝড় আমাদের আক্রমণ করতে এসেছিল। এরকম প্রতিনিয়তই আমাদের মোকাবেলা করতে হয়। তবে, দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা এখন যথেষ্ট সচেতন এবং দুর্যোগকালীন করণীয় বিষয়েও আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে থাকি। আর প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিও আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।