পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কোনো মানুষ জেগে ঘুমিয়ে থাকলে তাকে ডেকে তোলা যায় না। আইনের অধীনে দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পরও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ঘুমাচ্ছে। এই মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের ডিভিশন বেঞ্চ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্দেশ্যে এ মন্তব্য করেন। মিরপুরে শিশু গৃহকর্মী খাদিজার ওপর নির্মম নির্যাতনের প্রতীকার চেয়ে করা রিটের রায়ে এ কথা বলেন হাইকোর্ট। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সম্পর্কে আদালত রায়ে বেশকিছু পর্যবেক্ষণও দেন।
আদালত বলেন, কোনও মানুষ যদি ঘুমিয়ে থাকে, তাহলে তাকে ঘুম থেকে ডেকে তোলা যায়। কিন্তু একজন মানুষ জেগে ঘুমিয়ে থাকলে তাকে ডেকে তোলা যায় না। মানবাধিকার কমিশনকে মনে রাখতে হবে, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে কমিশন যখন হস্তক্ষেপ করে বা শুনানি গ্রহণ করে, তখন কমিশন আধা বিচারিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করে। তাই তাদের ন্যায়বিচার ও আইনের বিধিবিধান প্রতিপালন করতে হবে।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের বর্তমান কর্মকা-ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আদালত আরো বলেন, আইনের অধীনে দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পরও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ঘুমাচ্ছে। রায়ে মানবাধিকার কমিশন সম্পর্কে কিছু নির্দেশনাও দেন আদালত।
এগুলো হচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়ে মানবাধিকার কমিশন যে খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছে, তা সুশীল সমাজের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। কমিশনকে আইনের ১৬ ধারা অনুসারে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই ধারা অনুসারে কমিশন দেওয়ানি আদালতের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে। তদন্ত বা অনুসন্ধানের স্বার্থে সাক্ষী তলব, নথি তলব বা জামিনযোগ্য পরোয়ানা ইস্যু করতে পারে।
যদি কমিশনের কোনও সুপারিশ সরকার মান্য না করে তাহলে সংশ্লিষ্ট কমিশন আইনের ১৯ ধারা এবং সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিকার চাইতে হাইকোর্টের নজরে আনতে হবে। কমিশন থেকে যেসব আদেশ দেয়া হয় সেসব আদেশের সত্যায়িত অনুলিপি ৩০ দিনের মধ্যে ইস্যু করতে বলা হয়েছে। এমন মানবাধিকার কমিশনের অভিযোগ নিষ্পত্তিতে তাদের পদ্ধতিগুলো নির্ধারণ করে নিতে হবে।
কমিশনে কোনও অভিযোগ আসার পর সেটি যেন একজন ব্যক্তির স্বাক্ষরে নিষ্পত্তি বা আদেশ দেয়া না হয়। কমিশন আইনের ১১(৩) বা ২৮ ধারার নিয়ম অনুসারে যথাযথ ক্ষমতা প্রয়োগ করে আদেশ প্রদানকারীদের নাম ও পরিচয় লিখতে হবে।
গৃহকর্মী খাদিজার বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনকে ৬০ দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেন, এ সময় খাদিজা ও পরিবারের বক্তব্য শুনে খাদিজার মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলে কমিশনের ১৯ ধারা অনুসারে অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারকে সুপারিশ করতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে শিশু গৃহকর্মী খাদিজাকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে মানবাধিকার সংগঠন ‘চিলড্রেন চ্যারিটি ফাউন্ডেশন’র পক্ষ থেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেয়া হয়।
এ ঘটনার ৫ বছর কেটে গেলেও কোনও ব্যবস্থা না নেয়ায় ২০১৮ সালের ২২ ডিসেম্বর হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়। ওই রিটের শুনানি শেষে গত ৯ জানুয়ারি মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ নিতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।