পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘বাংলা বন্ড’ চালু বিশ্ব অর্থনীতিতে বাংলাদেশের একটি বড় পদক্ষেপ। একটি ঐতিহাসিক দিন। এ বন্ড চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবাসী বিনিয়োগ আরও সহজ হবে। গতকাল সোমবার লন্ডন স্টক মার্কেটে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা টাকা বন্ডে লিস্টিং অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী। ‘রিং দ্য বেল’ নামের ওই অনুষ্ঠান উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলা বন্ড চালুর পেছনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান বেশি, এমনকি বাংলা বন্ড নামকরণটিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া’। আইএফসি ও লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক দিন। এটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে উৎসর্গ করছি।’
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আইএফসির এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট নেনা স্টেলকোভিক, ব্রিটেনে বাংলাদেশ হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনীম, বিডার চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ ও আইএফসি পরিচালকরা।
লন্ডনের সময় সকাল সাড়ে ৯টায় লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ সেমিনার রুমে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের বিনিয়োগে উৎসাহ দেয়ার জন্য লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে চালু হয়েছে ‘বাংলা টাকা বন্ড’। এ বন্ডের আকার হবে ১০০ কোটি ডলার। কিন্তু প্রাথমিকভাবে বাজার থেকে তোলা হবে এক কোটি মার্কিন ডলার বা ৮৪ কোটি টাকা। প্রবাসীরা ডলারে এ বন্ড কিনলেও প্রথমবারের মতো তা টাকায় রূপান্তর করে দেশের বিভিন্ন অবকাঠামোগত প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইএফসি) হবে এ বন্ডের ইস্যু ম্যানেজার।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এটির মাধ্যমে আমাদের দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের সম্ভাবনার পথ চলার একটি ধাপ শুরু হলো, যা আমাদের ২০৪১ এর স্বপ্ন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে সহায়তা করবে। এই প্রথম বাংলাদেশের টাকা কোনো আন্তর্জাতিক ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে। টাকা লন্ডন স্টক মার্কেটে লেনদেন হবে। যে কেউ এ বন্ড কিনতে পারবে। ডলার দিয়ে এ বন্ড কিনতে হবে। সেই ডলার টাকায় কনভার্ট হয়ে তা বিনিয়োগ করা হবে। আইএফসি বাংলাদেশে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগ করেছে। এই এক বিলিয়ন ডলার ‘টাকা বন্ড’ ছাড়ার মাধ্যমে তাদের বিনিয়োগ আরও বাড়বে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে এই বন্ডের মেয়াদ হবে ৩ বছর। পরে তা বাড়িয়ে ৫ বছর এবং সর্ব্বোচ্চ ১০ বছর করা হতে পারে। ভারতের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, প্রথমে তিন বছর মেয়াদী রুপি বন্ড ছাড়া হয়েছিল। পরে মেয়াদ বাড়িয়ে ৫ বছর করা হয়। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১০ বছর। প্রবাসী ভারতীয়রা এই বন্ডে বিপুল হারে বিনিয়োগ করেছেন। বাংলাদেশও ২০১১ সাল থেকে এ ধরনের বন্ড ছাড়ার পরিকল্পনার কথা বলে আসছিল। পরে আইএফসি বাংলাদেশ সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাঠায় এবং তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অর্থমন্ত্রণালয় একই বছর ৪ অক্টোবর এক চিঠিতে ‘টাকা বন্ড’ ছাড়ার অনুমোদনের বিষয়টি জানায়। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) যাচাই কমিটির অনুমোদন সাপেক্ষে আইএফসির ওই প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। ওই কমিটির কাছে প্রাণ গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠান প্রাণ এগ্রো ও নাটোর এগ্রো লিমিটেডের জন্য এ বন্ড ছাড়ার প্রস্তাব করে আইএফসি। চলতি বছরের এপ্রিলে আইএফসির প্রস্তাবে সাড়া দেয় বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। এই বন্ডের মাধ্যমে বাজার থেকে যে অর্থ পাওয়া যাবে, সেখান থেকে প্রাণ এগ্রো ও নাটোর এগ্রো ৮০ কোটি টাকা করে ঋণ পাবে। সুদের হার নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এ ঋণ সমান কিস্তিতে তিন ও পাঁচ বছরে তাদের পরিশোধ করতে হবে। বাংলাদেশে এই প্রথমবারের মতো ‘টাকা বন্ড’ ছাড়া হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে এই বন্ডের মাধ্যমে যে অর্থ উত্তোলন করা হবে তা আইএফসির অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হবে।
আইএফসি বাংলাদেশে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও আর্থিক খাতে বিনিয়োগ করেছে। নতুন ১ বিলিয়ন ডলারের টাকা বন্ডের মাধ্যমে তাদের বিনিয়োগ আরও বাড়বে।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।