পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভারতের অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের রায় দিয়ে দেশটির আদালত হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষাবলম্বন করেছে। এই রায় আবারো প্রমাণ করলো ভারত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের মুখোশ পরে ঐ ভূখন্ড থেকে অন্য সকল ধর্মকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট ভেঙে ফেলা বাবরী মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের রায় দিয়ে শুধু ভারতের মুসলমানদের নয় মুসলিম উম্মাহকে ক্ষতবিক্ষত করেছে। ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের জায়গা রাম মন্দির নির্মাণের রায়ে মুসলমানরা ন্যায়বিচার পায়নি। বাবরী মসজিদ রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিভিন্ন ইসলামী দলের নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন।
ইসলামী ঐক্য আন্দোলন : ইসলামী ঐক্য আন্দোলন এর কেন্দ্রীয় আমীর ড. মাওলানা মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী ও সেক্রেটারী জেনারেল ড. মাওলানা মুহাম্মদ এনামুল হক আজাদ এক যৌথ বিবৃতিতে একপেশে রায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এ রায় সাম্প্রদায়িক রায়। এই রায়ে ব্রাক্ষণ্যবাদী মোদি ভারতকে রাম রাজত্বে পরিণত করার নীলনকশা পূর্ণ করলো। বিশ্বের দেড়শত কোটি মুসলমান এ রায় প্রত্যাখ্যান করেছে। এ রায়ের মাধ্যমে ভারতের ৩০ কোটি মুসলমানকে ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করেছে।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস : বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, রায় ভারতের মুসলিমসহ সারা দুনিয়ার মুসলমানদের হৃদয়ে আঘাত করেছে। তিনি আরো বলেন, মসজিদ নির্মানের জন্য ৫ একর জমি দিয়ে মুসলমানদের সাথে তামাশা করা হয়েছে। ১৯৯৩ সালে শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক (রহ.) এর নেতৃত্বে বাবরী মসজিদ ধ্বংসের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক লংমার্চ হয়েছিলো। প্রয়োজনে বাংলাদেশের তৌহিদী জনতাকে সাথে নিয়ে আবারো তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলে ভারত সরকারকে চাপ প্রদান করা হবে। তিনি গতকাল শনিবার বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন। তিনি আজ রোববার বাদ আছর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেইটে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন দলের নায়েবে আমীর মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা কোরবান আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল।
বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি : বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির সভাপতি মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী রায়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের স্বপ্নই বাস্তবায়িত হয়েছে। বাবরী মসজিদের ওপরই রাম মন্দির গড়া উচিৎ বলে হিন্দুরা হুঙ্কার ছেড়ে আসছে আগে থেকেই।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, রায়ে কাল্পনিক চরিত্র রামের স্বীকৃতি একটি মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠিত করার অপপ্রয়াস বৈ আর কিছুই নয়।
তিনি আরো বলেন, বাবরী মসজিদের স্থানে রাম মন্দির প্রতিষ্ঠার রায়ে বিস্মিত হওয়ার কিছুই নেই। কেননা বাবরী মসজিদ জমির বিবাদ নিয়ে চলা মামলা নিষ্পত্তির আগেই বাবরি মসজিদের ওপর রাম মন্দির নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে বিজেপি নেতা সাক্ষী মহারাজ। এমনকি মসজিদের জায়গায় মন্দির নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিল ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপির এই সাংসদ।
জনসেবা আন্দোলন : বাংলাদেশ জনসেবা আন্দোলনের চেয়ারম্যান মুফতী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম বলেছেন. বাবরী মসজিদ পৃথিবীর মুসলমানদের ঐতিহ্য রক্ষা করে চলেছে। বাবরী মসজিদের স্থানে মন্দির বানানোর ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টের রায় সা¤প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্র মাত্র।
খেলাফত মজলিস : ভারতের অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদের জায়গা রাম মন্দির নির্মাণের জন্যে হিন্দুদের প্রদানের রায়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে এ রায় প্রত্যাখ্যান করে খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেছেন, রায়ে মুসলমানরা ন্যায়বিচার পায়নি। নেতৃদ্বয় বলেন, এ রায়ে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের মনোভাব ও পরিকল্পনারই প্রতিফলন ঘটেছে। বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় ভারতীয় সুপ্রীম কোর্টের রায় পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান এবং ১৯৯২ সালে ৬ ডিসেম্বর উগ্রবাদী কর্তৃক ভেঙে ফেলা অযোধ্যার ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ স্বস্থানে পুনঃনির্মাণের জোর দাবি জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর : রায়ে গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ ও সেক্রেটারী মাওলানা মুহাম্মাদ আরিফুল ইসলাম বিবৃতিতে বলেন, মুসলমানদের জাতিগতভাবে নির্মূল করে হিন্দুত্ববাদী ভারত প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে বাবরি মসজিদের স্থানে রামমন্দির নির্মাণের রায় দেয়া হয়েছে। এ রায় বিশ্বের প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ ঘটিয়েছে।
ইসলামী যুব আন্দোলন : ইসলামী যুব আন্দোলন-এর কেন্দ্রীয় সভাপতি কে এম আতিকুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, এই রায়ে ঐতিহাসিক ও প্রত্মতাত্বিক বিষয় মিথ্যাচার করে আদালত হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষাবলম্বন করেছে। এই ঘটনাটি আবারো প্রমাণ করল, ভারত ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদের মুখোশ পরে বৃহত্তর ঐ ভূখন্ড থেকে অন্য সকল ধর্মকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।