পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আজ ১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস। ১৯৮৭ সালের এই দিনে তখনকার স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে আন্দোলনে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট এলাকায় প্রাণ হারান তিনি। বুকে পিঠে ‘গণতন্ত্র মুক্তি পাক, স্বৈরাচার নিপাত যাক’ স্লোগান লেখা তার ছবিটি আজও পৃথিবীর সকল স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে মানুষের প্রতিবাদের এক অনন্য প্রতীক। গণতন্ত্র মুক্তির জন্য তিনি মরে হয়েছেন অমর। তার মৃত্যু ঘটনাটি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকে আরও বেগবান করে তোলে এবং স্বৈরশাসক এরশাদের পতন ঘটে।
মৃত্যুর পর তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট এলাকার নাম শহীদ নূর হোসেন স্কয়ার করা হয় এবং ১০ নভেম্বরকে শহীদ নূর হোসেন দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল দিবসটি উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আওয়ামী লীগ সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন এবং তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাতের আয়োজন করেছে। এদিকে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সকাল ৮টায় শহীদ নূর হোসেন স্কয়ারে (জিরো পয়েন্ট) পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে।
পৈত্রিক ভিটায় স্মৃতি রক্ষার দাবি গ্রামবাসীর
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, নব্বইয়ের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনের জন্মভিটা পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার নিভৃত পল্লী সাপলেজা ইউনিয়নের ঝাঁটিবুনিয়া গ্রামের বাড়িতে স্মৃতি রক্ষার দাবি জানিয়েছেন তার স্বজন ও গ্রামবাসীরা। দুর্ভাগ্য এই যে পৈত্রিক ভিটায় তার স্মৃতি সুরক্ষায় আজও গড়ে ওঠেনি কোন স্মৃতি স্তম্ভ।
নূর হোসেনের চাচাত ভাই স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম মো. রুহুল আমীন হাওলাদার নূর হোসেনের পৈত্রিক ভিটায় বসবাস করেন। তিনি জানান, নূর হোসেনের বাবা দেশ স্বাধীনের আগে কাজের সন্ধানে গ্রাম ছেড়ে ঢাকায় যান। সেখানে তিনি অটো রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নূর হোসেনের জন্ম ঢাকায়। তারা চার ভাই ও এক বোন। নূর হোসেন দ্বিতীয় সন্তান। তার অপর ভাইয়েরা হলেন আলী হোসেন, দেলোয়ার হোসেন, আনোয়ার হোসেন ও বোন শাহানা বেগম। সকলেই ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।
জানা গেছে, ঢাকায় মঠবাড়িয়ার কয়েকজন তরুণ মিলে শহীদ নূর হোসেনের স্মৃতি রক্ষায় ‘জাগো লক্ষ নূর হোসেন’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তোলেন। এছাড়া নূর হোসেনের গ্রাম ঝাঁটিবুনীয়া ও পূর্ব সাপলেজা গ্রামের কতিপয় তরুণ মিলে গড়ে তোলেন নূর হোসেন স্মৃতি পরিষদ। সংগঠন দুটি শহীদ নূর হোসেন দিবসে স্মরণসভার আয়োজন ছাড়া কিছুই করতে পারছে না।
নূর হোসেন স্মৃতি পরিষদের অন্যতম উদ্যোক্তা মো. নূরুল আমীন রাসেল বলেন, ১৯৯২ সালে আমরা গ্রামের তরুণরা মিলে সংগঠনটি গড়ে তুলি। কিন্ত সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতা ও স্থানীয় উদ্যোক্তাদের তেমন সাড়া না পেলেও আমরা তরুণরা মিলে দিবসটি কোনমতে পালন করে আসছি। তবে শহীদ নূর হোসেনের পৈত্রিক ভিটায় একটি স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ ও একটি পাঠাগার নির্মাণের দাবি জানাই।
মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, শহীদ নূর হোসেন গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রতীক। সে মঠবাড়িয়ার বরেণ্য সন্তান। তার স্মৃতি রক্ষায় পৈত্রিক ভিটে মাটিতে কোন কিছু গড়ে ওঠেনি। আমি মঠবাড়িয়াবাসীর পক্ষ হতে তার পৈত্রিক ভিটে মাটিতে স্মৃতি রক্ষার দাবি জানাচ্ছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।