পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাল্টে গেছে দেশের রাজনীতির দৃশ্যপট। এক সময় অভিযোগ ছিল, রাজনীতিকরা দলের নেতৃত্ব ধরে রাখতে ‘সন্ত্রাসী’ লালন-পালন করতেন। এখন সন্ত্রাসীরাই নিজেদের অপরাধ সম্রাজ্য ধরে রাখতে ‘নেতাদের’ প্রতিপালন করেন। এই প্রেক্ষাপটে ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগ ও দলটির অঙ্গসংগঠনগুলোর জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সম্মেলন উপলক্ষে সারাদেশে উদ্দীপনার মধ্যে নতুন মুখের সন্ধান চলছে। সময়ের প্রয়োজনেই দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব চাচ্ছেন পরিচ্ছন্ন, বিতর্কমুক্ত এবং সম্ভাবনাময় নেতাদের সামনে আনতে। কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূলপর্যায়ে চলছে পরিচ্ছন্ন ইমেজের নতুন মুখের অনুসন্ধান। এতে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-এমপি থেকে শুরু করে দলের প্রভাবশালী আলোচিত, বিতর্কিত সিনিয়র নেতাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে পদ হারানোর ভয়ে। কৃষক লীগের সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ‘অপরিচিত মুখ’ নির্বাচিত করার মাধ্যমে সে বার্তা দেয়া হয়েছে। এর আগে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সম্মেলনকে সামনে রেখে বিতর্কিত ও হাইব্রিডদের তালিকার বাইরে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতারা নতুন কমিটিতে স্থান পাবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে বিভাগ, জেলা, উপজেলা পর্যন্ত পরিচ্ছন্ন নেতাদের তালিকা করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা এবং প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব ব্যাক্তিদের মাধ্যমে এই তালিকা প্রস্তুত করা হয়। বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, জঙ্গিবাদ, ভূমি দখলকারী, মাদব ব্যবসায়ী, চাকরি বাণিজ্য এবং অপকর্মের সঙ্গে জড়িত বিতর্কিতদের তালিকা যেমন করা হয়েছে; তেমনি দীর্ঘ ১১ বছর দল ক্ষমতায় থাকার পরও দলের নিবেদিতপ্রাণ অথচ পরিচ্ছন্ন ইমেজ ধরে রেখেছেন, এমন নেতাদের তালিকাও করা হয়েছে। এ ছাড়াও সারাদেশের দলের ভেতরে দল ‘মন্ত্রী লীগ’ ও ‘এমপি লীগ’ নেতাদের তালিকাও করা হয়েছে। পরিচ্ছন্ন ইমেজের নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের মাধ্যমে ব্যর্থতা ও বিতর্ক মুছে আগামীতে নব উদ্যমে দলকে গতিশীল করা হবে। গত ৬ নভেম্বর কৃষক লীগের কাউন্সিল হয়ে গেছে। আজ শ্রমিক লীগের কাউন্সিল। ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং ২৩ নভেম্বর হবে যুবলীগের কাউন্সিল।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঐতিহাসিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গঠিত আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে ২০ ও ২১ ডিসেম্বর। গতকালও আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলন সামনে রেখে নেতাকর্মীদের মধ্যে কোনো ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা বরদাশত করা হবে না বলে সতর্ক করে দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি আগাম বার্তা দিয়ে বলেছেন, কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করতে হবে। আমাদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে, সেই প্রতিযোগিতা হবে সুস্থ। আমি নেত্রীর (শেখ হাসিনা) পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই, কোনো ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। সারাদেশে শাখাসহ জেলা-উপজেলা, থানা-ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো নতুনভাবে করা হচ্ছে।
কাউন্সিল উপলক্ষে চলমান শুদ্ধি অভিযানে প্রায় ৫ হাজার অনুপ্রবেশকারী ও বিতর্কিত নেতার তালিকা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ইতোমধ্যে অনেক বিভাগের অনুপ্রবেশকারীদের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। ৮ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা তালিকা ধরে ধরে তৃণমূল সম্মেলনে কমিটি করছেন। মূলত টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশের ঢল নেমেছিল বিভিন্ন সময়ে। অনুপ্রবেশকারীদের নাম প্রকাশের পর যেসব নেতা অন্য দলের নেতাদের আওয়ামী লীগে এনেছেন, তাদের তালিকা প্রকাশের দাবি ওঠে। সম্প্রতি গণভবনে ৬ জন নেতাকে নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি কেন্দ্রীয় নেতাদের এসব অনুপ্রবেশকারীকে দলের পদ-পদবি থেকে বাদ দেয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আগামীতে যেন অনুপ্রবেশ না ঘটে, সে ব্যাপারে সতর্ক করেন। দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের হাতে বিতর্কিতদের নামের তালিকা তুলে দেন। ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা জেলায় জেলায় তালিকা পাঠাচ্ছি। বিতর্কিত কেউ যাতে বিভিন্ন পর্যায়ের সম্মেলনে কমিটিতে স্থান করে নিতে না পারেন, সেভাবেই দিকনির্দেশনা দেয়া আছে। তবে গতকাল ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ভিন্ন দল থেকে আওয়ামী লীগে আসা সবাই অনুপ্রবেশকারী নয়। জাতীয় কাউন্সিল সামনে রেখে সারাদেশে জেলা ও উপজেলা কমিটি গঠনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে।
শ্রমিক লীগের সম্মেলন আজ
আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের সম্মেলন আজ শনিবার। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অতঃপর বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে নতুন নেতা মনোনীত করা হবে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সংগঠনটির সিনিয়র নেতাদের মধ্যে পদ হারানোর ভীতি থাকলেও নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনার কমতি নেই। কারা আসছেন শ্রমিক লীগের নেতৃত্বে? এ নিয়ে চলছে গুঞ্জন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও সরগরম।
১৯৬৯ সালের ১২ অক্টোবর প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় শ্রমিক লীগ। ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সম্মেলনে সভাপতির দায়িত্ব পান নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক নেতা শুক্কুর মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক হন জনতা ব্যাংক ট্রেড ইউনিয়নের নেতা সিরাজুল ইসলাম। কাউন্সিল উপলক্ষে শ্রমিক লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে আসতে নেতাদের মধ্যে চলছে লবিং-তদবির। পদপ্রত্যাশীরা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের অফিস-বাসাবাড়িতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও ধানমন্ডি আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে কর্মী-সমর্থকদের শোডাউনের চিত্র এখন নিত্যঘটনা।
শুদ্ধি অভিযান, ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য এবং গত ৬ নভেম্বর কৃষক লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে ‘নতুন মুখ’ ঘোষণার পর নেতাদের ধারণা পরিচ্ছন্ন এবং নিবেদিনপ্রাণ নেতারাই আসছেন নতুন নেতৃত্বে। তবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য ৮ থেকে ১০ জন নেতা তৎপরতা চালাচ্ছেন। সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন বর্তমান কার্যকরী সভাপতি ফজলুল হক মন্টু, সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান আকন্দ, সরদার মোতাহের উদ্দিন, নূর কুতুব আলম মান্নান, আমিনুল হক ফারুক, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী, মোল্লা আবুল কালাম আজাদ, বর্তমান সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামের নাম সভাপতি পদে আলোচনা হচ্ছে। নানা কারণে বিতর্কিত শাহজাহান খানও চেষ্টা করছেন সভাপতি পদের জন্য। যদিও উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেয়ায় তাকে শোকজ করা হয়েছিল। আর সাধারণ সম্পাদক পদের আলোচিত নামগুলো হচ্ছেÑ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব মোল্লা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, খান সিরাজুল ইসলাম, মু. শফর আলী, প্রচার সম্পাদক কে এম আযম খসরু, দফতর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, অর্থবিষয়ক সম্পাদক সুলতান আহমেদ, উন্নয়ন ও কল্যাণবিষয়ক সম্পাদক কাউসার আহমেদ পলাশ প্রমুখ।
১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কাউন্সিল
৭ বছর পর আগামী ১৬ নভেম্বর হতে যাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন। এর আগে ১১ ও ১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সংগঠনটির গুরুত্বপূর্ণ দুই শাখা ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সম্মেলন। নেতৃত্বের পালাবদল ঘিরে পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে দৌড়ঝাঁপ। সম্মেলন ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠনটির নেতাকর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়েছে। চাঁদাবাজি, দখলদারিত্বসহ নানা কারণে যারা দুর্নাম কুড়িয়েছে, এসব বিতর্কিত নেতা এবার বাদ পড়বেন, এমন আলোচনা সর্বত্রই চলছে।
১৯৯৭ সালে হাজী মকবুল হোসেনকে আহ্বায়ক করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রথম কমিটি গঠন করা হয়। ২০০২ সালে প্রথম কাউন্সিলে সভাপতি নির্বাচিত হন আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাধারণ সম্পাদক হন পঙ্কজ দেবনাথ। ২০১২ সালে দ্বিতীয় কাউন্সিলে মোল্লা মো. আবু কাওছারকে সভাপতি এবং পঙ্কজ দেবনাথকে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু এই দুই নেতার বিরুদ্ধে ক্যাসিনো কান্ডসহ ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বিতর্কিত দুই নেতা মোল্লা কাওছার ও পঙ্কজ দেবনাথের নামে রয়েছে ‘রেড সিগন্যাল’। এদের একজন পলাতক অন্যজন গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন। তবে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় ও ঢাকার দুই শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য দৌড়ঝাঁপ করছেন প্রায় দুই ডজন নেতা। সংগঠনটির দেখভালের দায়িত্বে থাকা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন ইঙ্গিত দিয়েছেন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, বিতর্কিত কর্মকান্ড, ইমেজ নষ্ট, এমন কেউ এবার নেতৃত্বে আসতে পারবেন না।
সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে তারা হচ্ছেনÑ সিনিয়র সহ-সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহ, বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক খায়রুল হাসান জুয়েল, শেখ সোহেল রানা টিপু, সাজ্জাদ শাকিব বাদশা, আব্দুল আলীম বেপারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন সাচ্চু, সহ-সভাপতি মতিউর রহমান মতি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন। এ ছাড়াও ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় রয়েছে কামরুল হাসান রিপন, আনিসুজ্জামান রানা, ইসহাক মিয়া, মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল, ইসহাক মিয়া, তারিক সাঈদ, আবুল কালাম আজাদ, ওমর ফারুক, ফরিদুর রহমান ইরান, শফিকুল ইসলাম শফিক, মো. গোলাম রাব্বানী প্রমুখের নাম।
যুবলীগের নেতৃত্বে কারা আসছেন?
বর্তমানে দেশের সবচেয়ে আলোচিত সংগঠনের নাম আওয়ামী যুবলীগ ও ছাত্রলীগ। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্যাসিনোসহ নানা বিতর্কিত অপকান্ডের কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন দু’টির নাম সবার মুখে মুখে। ছাত্রলীগের কাউন্সিল হয়ে গেছে। চাঁদাবাজির অভিযোগে সংগঠনটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকে পদচ্যুত করে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দু’জনকে বসানো হয়েছে। আর ক্যাসিনো কান্ডে কয়েকজন নেতা গ্রেফতার এবং তাদের বাসায় বিপুল পরিমাণ মদ, ইয়াবা, সোনাদানা, টাকা-পয়সা উদ্ধারের পর আলোচনায় উঠে এসেছে যুবলীগের নাম। ২৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সেই আওয়ামী যুবলীগের কাউন্সিল। ক্যাসিনো কান্ড ও বিতর্কিত কর্মকান্ডের কারণে সংগঠনের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীকে ‘শাস্তি হিসেবে’ যুবলীগের সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। অবৈধ অর্থ উপার্জন সন্দেহে তার এবং তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে। এমনকি ওমর ফারুক চৌধুরীর বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
সংগঠনটির কাউন্সিল উপলক্ষে গত ২০ অক্টোবর গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুবলীগের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে চয়ন ইসলামকে আহ্বায়ক এবং হারুনুর রশীদকে সদস্য সচিক করে সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠন করা হয়। পাশাপাশি সংগঠনটির নেতাদের বয়সসীমা ৫৫ বছর নির্ধারণ করা হয়।
২৩ নভেম্বর যুবলীগের সম্মেলনের মাধ্যমে সংগঠনটির নেতৃত্বে কারা আসছেন এ নিয়ে চলছে জল্পনা। শুদ্ধি অভিযানে যুবলীগের কয়েকজন রাঘব বোয়াল পাকড়াওয়ের পর সেই আলোচনা এখন পুরো রাজনৈতিক মহলজুড়ে। ক্যাসিনো কান্ডে ওমর ফারুক চৌধুরী, ইসমাইল হোসেন সম্রাটদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অন্ধকারে চলে গেছে। তারা যুবলীগের নেতৃত্বে আসতে পারছেন না এমন আলোচনা সর্বত্রই। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদেও আসতে পারে নতুন মুখ। যুবলীগের সাবেক নেতাদের প্রত্যাশা তরুণ, যুববান্ধব ও সৎ, ছাত্র ও যুব রাজনীতির অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ কর্মীবান্ধব নেতৃত্ব।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের এই অঙ্গসংগঠনের চেয়ারম্যান হিসেবে বেশ কয়েকজনের নাম আলোচনা হচ্ছে। প্রথম দিকে শেখ মারুফের নাম শোনা গেলেও গণভবনে তাকে প্রবেশ করতে না দেয়ায় সে নাম পেছনে পড়ে গেছে। বর্তমানে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হচ্ছেন যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণির ছেলে শেখ ফজলে শামস পরশ ও তার ছোট ভাই ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, বর্তমান কমিটির সদস্য শেখ ফজলে ফাহিম (শেখ সেলিমের ছেলে), বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, ফারুক হোসেন, মুজিবুর রহমান চৌধুরী, আতাউর রহমান, অ্যাডভোকেট বেলাল হোসেন ও ডা. মোখলেছুর রহমান হিরু। এ ছাড়াও কেউ কেউ বলছেন, যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজমকে নতুন কমিটিতে সভাপতি করে সংগঠনটির হারানো ইমেজ ফিরিয়ে আনা হতে পারে। সাধারণ সম্পাদক পদে যাদের নাম আলোচনায় হচ্ছে তারা হলেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হাসান তুহিন, অর্থ সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র হালদার, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু, সহসম্পাদক তাজউদ্দীন আহমেদ। নেতৃত্বে কারা আসেন তা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ জানেন না।
গত সাপ্তাহে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির সম্পাদকমন্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে নেতৃত্ব প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নেত্রী (শেখ হাসিনা) তার নিজস্ব কিছু লোক ও গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট সব মিলিয়ে খোঁজ নিয়ে বিতর্কিতদের তালিকা করেছেন। আমি নিজেও জেলার নেতাদের সঙ্গে বিতর্কিতদের তালিকা নিয়ে কথা বলেছি। তালিকায় থাকা বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশকারীরা কাউন্সিলে কোনো ধরনের জায়গা না নিতে পারে, সেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, জঙ্গিবাদ, ভূমি দখলকারী, মাদক ব্যবসায়ী, অপকর্মে জড়িত ও বিতর্কিতরা আওয়ামী লীগে স্থান পাবেন না।’ অতএব বোঝাই যাচ্ছে আওয়ামী লীগ রয়েছে নতুন মুখের সন্ধানে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।