পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহানবী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্বয়ং নিজের মীলাদ উদযাপন করেছেন। তিনি আল্লাহ তা‘আলার শোকর আদায় করতে গিয়ে স্বীয় বেলাদতের খুশিতে খাসি যবেহ করেছেন এবং জিয়াফতের ব্যবস্থা করেছেন। নিম্নে এর প্রমাণসমূহ উপস্থাপন করা হল। (১) বায়হাকী (৩৮৪-৪৫৮ হি.) হযরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, মহানবী (সা.) নবুওয়াত ঘোষণার পর নিজের আকীকা আদায় করেছেন। [(ক বায়হাকী : আস্সুনানুল কুবরা, খ--৯ পৃষ্ঠা-৩০০, বর্ণনা সংখ্যা-৪৩। (খ) মুকাদ্দাসী : আল আহাদিসুল মুখতারাহ, খ--৫, পৃষ্ঠা-২০৫, বর্ণনা সংখ্যা-১৮৩৩। (গ) ইমাম নাবাবী : তাহজিবুল আসমায়ে ওয়াল লুগাতি, খ--২, পৃষ্ঠা-৫৫৭, বর্ণনা সংখ্যা-৯৬২। (ঘ) আস্্কালীন : ফাৎ্হুল বারী, খ--৯, পৃষ্ঠা-৫৯৫। (ঙ) আস্্কালানী : তাহজীবুত তাহজীব, খ--৫, পৃষ্ঠা-৩৪০, বর্ণনা সংখ্যা-৬৬১।
(চ) মুজজি : তাহজিবুল কামাল ফী আসমাইর রিজাল : খ--১৬, পৃষ্ঠা-৩২, বর্ণনা সংখ্যা-৩৫২৩]। (২) জিয়া মুকাদ্দাসী : (৫৬৯-৬৪৩ হি:) হযরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেছেন যে, মহানবী (সা.) নবুওয়াত লাভের পর স্বীয় আকীকা আদায় করেছেন। [(ক) মুকাদ্দাসী : আল আহাদিসুল মুখতারাহ, খ--৫, পৃষ্ঠা-২০৫, বর্ণনা সংখ্যা-১৮৩২। (খ) তিবরানী : আল মুজামুল আওসাত, খ--১, পৃষ্ঠা-২৯৮, বর্ণনা সংখ্যা-৯১৪। (গ) রুয়ানী : মুফনাদুস সাহাবাহ, খ--২, পৃষ্ঠা-৩৮৬, বর্ণনা সংখ্যা-১৩৭১।]। (৩) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেছেন : যখন হুযুর নবী আকরাম (সা.)-এর জন্ম হল, তখন হযরত আবদুল মুত্তালিব নিজের তরফ হতে একটি পাঁঠা ছাগল আকীকার জন্য যবেহ করলেন। [(ক) ইবনে আসাকির : তারিখু দামেশক আল-কবীর, খ--৩, পৃষ্ঠা-৩২; (খ) হালাবী : ইনসানুল উয়ুন ফী সীরাতিল আমীনিল মামুন, খ--১, পৃষ্ঠা-১২৮]। (গ) সুয়ুতী : কিফায়াতুত তালেবিল লাবীব ফী খাসায়েসীল হাবীব : খ--১, পৃষ্ঠা-১৩৪]। (৪) হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে আরও বর্ণিত, অবশ্যই হযরত আবদুল মুত্তালিব সপ্তম দিন হুজুর নবী আকরাম (সা.)-এর আকীকার দাওয়াত অনুষ্ঠান করেন। [(ক) ইবনে আবদুল বার, আত্তাম হিদু লিমা ফিল মুয়াত্তা মিনাল মায়ানিয়ে ওয়াল আছানিদে, খ--২১, পৃষ্ঠা-৬১; (খ) ইবনে আবদুল বার : আল ইস্তিয়াবু ফী মা’রিফাতিল আসহাব, খ--১, পৃষ্ঠা-৫১; (গ) ইবনে হাব্বান: আস্্সকিাত, খ--১, পৃষ্ঠা-৪২, (ঘ) কুরতুবী : আল জামেউ লিআহকামিল কোরআন, খ--২, পৃষ্ঠা-১০০; (ঙ) ইবনে কাইয়েম : যাদুল মায়াদ ফী হাদয়ি খাইরিল ইবাদ, খ--১, পৃষ্ঠা-৮১]।
এতে তো ইমামদের মধ্যে কোনই মতভেদ নেই যে, মহানবী (সা.)-এর আকীকা তার দাদা আবদুল মুত্তালিব সপ্তম দিন আদায় করেছিলেন। স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজের আকীকাকে চল্লিশ বছর পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছিলেন কীভাবে? কেননা, সুষ্পষ্ট হাদীস হতে জানা যায় যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আকীকা আদয় না করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত শিশু বন্ধক থাকে। হযরত ছামুরা বিন জুন্্দুব (রা.) হতে বর্ণিত আছে যে, মহানবী (সা.) এরশাদ করেছেন : শিশু নিজের আকীকার কারণে বন্ধক থাকে, তার দিক হতে সপ্তম দিনে যবেহ করা চাই।’ [(ক) তিরমিজী : আল জামেউস সহীহ, খ--৪, পৃষ্ঠা-১০১, কিতাবুল আদাহী, বাবু মিনাল আকিকাতিন, বর্ণনা সংখ্যা-১৫২২, (খ) সুনানে আবু দাউদ : খ--৩, পৃষ্ঠা-১০২, কিতাবুদ দাহায়া, বাবু ফিল আকিকাতি, বর্ণনা সংখ্যা-২৮৩৭; (গ) সুনানে ইবনে মাজাহ : খ--২, পৃষ্ঠা-১০৫৬; কিতাবুজ জাবাইহ, বাবুল আকিকাতি, বর্ণনা সংখ্যা-৩১৬৫]।
এ পর্যায়ে প্রশ্নের উদয় হয় যে, তাজদারে কায়েনাত (সা.) স্বীয় নবুয়ত প্রাপ্তির পর কোন ধরনের আকীকা করেছিলেন? এর উত্তর হচ্ছে এই যে, হুযুর নবী আকরাম (সা.) নবুওয়াত প্রাপ্তির পর স্বীয় বেলাদত এবং মীলাদের আনন্দ ও খুশী এবং শোকর আদায়কল্পে খাসি যবেহ করেছেন এবং জিয়াফতের আয়োজন করেছেন। কারণ, আকীকা দুই বার হয় না। কোন কোন লোক বলেন যে, এটা শুধু আকীকাই ছিল যা তিনি স্বীয় নবুওয়াতের ঘোষণার পর করেছিলেন। যদি আমরা এটাকে শুধু আকীকা বলেই চিন্তা করি, তাহলে এ প্রশ্নের উদয় হয় যে, আকীকা আসলে কী? আকিকা মূলত জন্মের উপর শুকর ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ মাত্র। এটাকে বেলাদতের খুশীর উৎসব বলা হোক অথবা মীলাদ উৎসব বলা হোক অর্থ একই দাঁড়ায় যে, জন্ম লাভের ঘটনার উপর আনন্দ প্রকাশ করা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।