পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পেঁয়াজের প্যাঁচে দ্যাশের ১৬ কোটি মানুষ যেন ফাঁইস্যা গেছে। কারেন্টের জালে আটকা খাওয়ার পর ভেটকি মাছ যে তরিকায় দাঁত কেটকি মারে, পেঁয়াজে দামে দ্যাশেল পাবলিক অহন সেই দশা’। গতকাল শনির আখড়ায় পেঁয়াজ কিনতে আসা এক ভোক্তার উক্তি। তিনি ৪০ টাকা দিয়ে আড়াইশ গ্রাম পেঁয়াজা কিনে গুনতে শুরু করলেন সবার সামনেই। গুণে দেখলেন ৮টি মাঝারি সাইজের পেঁয়াজ। অবশ্য গত ২ নভেম্বর পেঁয়াজ না কিনে আড়তদারদের শিক্ষা দেয়ার জন্য ভোক্তাদের প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি।
বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয় কক্সবাজার, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সাতক্ষীরা, ঢাকায়। পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ মনিটরিং টিমও কাজ করছে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দাবি টেকনাফ ও কক্সবাজারের যেসব আমদানিকারকের কাছ থেকে তারা পেঁয়াজ কেনেন, তাদের সাথে আড়তদারদের পরিচয় নেই। মূলত ফড়িয়া বা এজেন্টের মাধ্যমেই তারা পেঁয়াজ কেনেন। আমদানিকারক ও এজেন্টদের বেঁধে দেওয়া বেশি দরে পেঁয়াজ কিনতে ও বিক্রি করতে তারা বাধ্য হচ্ছেন।
রাজধানী ঢাকার খুচরা বাজারে গত কালও পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি দরে। টিসিবির ট্রাকে পেঁয়াজ বিক্রি, বাণিজ্য মন্ত্রীর বক্তব্য, প্রশাসনের নানানমুখি পদক্ষেপ কোনো কিছুই রেশ পেঁয়াজের গায়ে লাগছে না। ৩০ টাকা কেজি দরের পেঁয়াজ পাঁচগুণ বেশি দর দেড়শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে; সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের ভোক্তাদের পকেট কাটছে; কিন্তু বাজারে কোনো ইতিবাচক ফল দেখা যাচ্ছে না।
ভারতের পর মিয়ানমারও মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানির ঘোষণা দেয়া হয়েছে; কিন্তু ভোক্তাকে পাঁচগুণ বেশি দরে রঁসুই ঘরের সবজি গোত্রের মশলা জাতীয় পণ্য পেঁয়াজ কিনতেই হচ্ছে। এ অবস্থায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে খাতুনগঞ্জের আড়তদারদের সঙ্গে বৈঠক করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সেলিম হোসেন বলেছেন, আগামী দুই-তিনদিনের মধ্যে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে। দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা পেঁয়াজ নিয়ে এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ভুক্তভোগী ভোক্তাদের প্রশ্ন সত্যিই কি পেঁয়াজের দর কমবে? ৩০ টাকার পেঁয়াজ ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও ক্রেতাদের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে। এর আগে বাণিজ্য মন্ত্রী ও বাণিজ্য সচিব পেঁয়াজ নিয়ে অনেক প্রতিশ্রæতি দিয়েছেন। পরবর্তীতে বাণিজ্যমন্ত্রী সুর পাল্টিয়েছেন।
গতকাল খাতুনগঞ্জের সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী কাম আমদানিকারকদের কাছ থেকে আর কাগজ ছাড়া পেঁয়াজ না কেনার অঙ্গীকার করেছেন। পাইকারি বাজারে কাগজ ছাড়া পেঁয়াজ কেনাবেচা কার্যত কালোবাজারি। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আড়তদারদের সাথে সভা শেষে এসব সিদ্ধান্ত জানানো হয়। সভায় পেঁয়াজের বাজার তদারকি করতে একটি মনিটরিং টিম গঠনেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সেলিম হোসেন, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম সভায় অংশ নেন।
সভা শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব সেলিম হোসেন বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে যেন পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার নিচে থাকে সে ব্যবস্থা তারা নেবেন। এক সপ্তাহের মধ্যে এস আলম ও মেঘনা গ্রুপ পেঁয়াজ নিয়ে আসবে। সংকট আর থাকবে না। এসব পেঁয়াজ আসলে ৬০-৭০ টাকায় হয়তো নেমে আসবে। দেশে পেঁয়াজের কোনো মজুদ সঙ্কট নেই দাবি করে তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম আর বাড়বে না। কক্সবাজার, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, সাতক্ষীরা, ঢাকাসহ যেসব স্থানে পেঁয়াজ আমদানি হয় সেখানকার জেলা প্রশাসন কাজ করছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিশেষ মনিটরিং টিমও কাজ করছে। পাইকারি ও খুচরায় ডকুমেন্ট ছাড়া কোনো পেঁয়াজ বিক্রি করবে না বলে তারা অঙ্গীকার করেছেন। তিনি বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে দেশি পেঁয়াজ উঠবে আর ভারতের পেঁয়াজও চলে আসবে। তখন দাম ৪০ টাকার নিচে নেমে যাবে। এ সময়ের মধ্যে যারা বড় ব্যবসা করতে চাইবে তারা ক্ষতির মুখে পড়বে।
খাতুনগঞ্জের হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিচ বলেন, ২-৩ দিন পরই ক্রেতারা খুচরা পর্যায়ে ১০০ টাকার ভেতরে পেঁয়াজ কিনতে পারবে। আড়তদাররা যাতে ৮০-৮৫ টাকায় বিক্রি করতে পারে এবং কাগজের মাধ্যমে পেঁয়াজ কিনতে পারে সেজন্য আমরা আমদানিকারকদের সাথে কথা বলে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেট, রাজশাহী, রংপুর, বগুড়া, দিনাজপুরসহ অধিকাংশ জেলায় পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। রাজধানী ঢাকায় ঁেপয়াজের বাজারে কার্যত কোনো সুখবর নেই। বাজার নিয়ন্ত্রণের কোনো কার্যকর আদ্যোগ চোকে পড়নি। তবে গতকাল চট্টগ্রামে মিশর ও চীন থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি করায় খাতুনগঞ্জের মাহিন এন্টারপ্রাইজ নামের এক আড়তদারকে (কমিশন এজেন্ট) ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন। বলেন, মিশর ও চীনের পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা আমদানি মূল্য হলে পাইকারিতে ৫০ টাকায় বিক্রি করার কথা। কিন্তু মাহিন এন্টারপ্রাইজে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছিল। একইসঙ্গে তারা কোনো আমদানির কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। পেঁয়াজের বাজারকে তারা পেপারলেস করে ফেলতে চেয়েছে। এটি বন্ধে খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি জানান, টেকনাফ ও কক্সবাজারে পেঁয়াজের বাজারে অভিযান অব্যাহত আছে।
তবে গতকাল ঢাকার মতিঝিলের একটি ছোট্ট হোটেলে দেখা গেল নোটিশ টানানো ‘খাওয়ার সময় পেঁয়াজ চাহিয়া লজ্জা দিবেন না’। এক কেজি পেঁয়াজের দাম যদি দেড়শ টাকা হয় তাইলে এই নোটিশ না টাঙ্গায়া উপায় আছে? হোটেলওয়ালা লজ্জা দিতে মানা করছে। কিন্তু নিজের রসুঁই ঘর! ##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।