Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভারত-রাশিয়ার ফাঁদে পা দিয়েছি

‘কয়লায় বিদ্যুৎ আত্মঘাতী’ : বাপার সংবাদ সম্মেলনে ড. ইফতেখারুজ্জামান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখার উদ্দিন বলেছেন, শুধু বায়ু ব্যবহার করে দেশে ২১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। আমরা সেদিকে নজর না দিয়ে ভারত ও রাশিয়ার মতো দেশগুলোর ফাঁদে পা দিয়েছি। যেখানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব সেখানে রামপালের মতো বিদ্যুৎকেন্দ্র আমরা করছি। গতকাল বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, দেশর ধ্বংস করে বিদ্যুৎ চাই না। বিদ্যুৎকেন্দ্র চাই বিকল্প উপায়ে; নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারে মাধ্যমে। সরকার কয়লা ব্যবহার করে যে উপায়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করেছে তা হবে আত্মঘাতী। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিদ্যুৎ আমাদের দরকার। বিদ্যুৎ না থাকলে সবকিছু অচল হয়ে যায়। তবে জীবন-জীবিকা অচল করে, প্রকৃতি ধ্বংস করে, জনগণের জীবন বিপন্ন ও জনজীবন নষ্ট করে বিদ্যুৎ চাই না। কয়লাভিত্তিক যে বিদ্যুৎকেন্দ্র করার প্রক্রিয়া এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে আমাদের সবকিছু ধ্বংস হয়ে যাবে। এখনো সময় আছে, সরকার যাতে এসব প্রকল্প থেকে সরে আসে। তিনি আরো বলেন, সরকার প্যারিস চুক্তিতে বলে এসেছে ২০২০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ১০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। আর মাত্র এক বছর আছে। এখন পর্যন্ত তার অর্জন মাত্র চার ভাগ। যেখানে ২০৫০ সালের মধ্যে ৫০ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে। সেটা যদি হয়ে যায়, তাহলে এদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কোনো দরকার পড়বে না।

ইফতেখার উদ্দিন বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি রেখে কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন মাদকের নেশার মতো। সেই নেশায় পড়েছি আমরা; যা ভয়াবহ হবে আমাদের জন্য। এদেশের ৪২ মিলিয়ন মানুষ যখন বৈশ্বিক জলবায়ুর ঝুঁকিতে, সেখানে আমরা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতে নির্ভর করছি। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক কোনো পরিবেশ প্রতিষ্ঠান যদি যাচাই করে ছাড়পত্র দেয় যে, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিবেশবান্ধব তাহলে আমরা আর প্রতিবাদ করব না। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর জন্য বাংলাদেশ শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় পড়বে তা আমরা বারবার বলে আসছি। আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোও একই কথা বলে আসছে। এক প্রশ্নের জবাবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলোর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। এখানে জিওগ্রাফিক্যাল রাজনীতি বা কোনো ব্যবসায়িক গ্রæপের ব্যাগ হাসিলের কোনো যোগসাজশ আছে কি না তা সরকারই ভালো জানে।

সংবাদ সম্মেলনে বাপা’র সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল মতিন বলেন, দুই বছর আগে সরকারকে বেশ কয়েকটি গবেষণাপত্র দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকার আমাদের ডাকেনি কিংবা যোগাযোগ করেনি। আর এর মাধ্যমে প্রমাণ হয় যে, সরকার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প করবেই। রামপালের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে যে পরিমাণ ছাই নির্গত হবে তা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে। নরসিংদী থেকে কলকাতা পর্যন্ত সেই ছাই দেখা যাবে।

বাপার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শারমীন মুরশিদ বলেন, কয়লা ব্যবহারের ফলে ৯০ ভাগ এসডিজির গোল পূর্ণ হবে না। আগামী ৩০ বছরের মধ্যে দেশের ২০ ভাগ জমি পানিতে তলিয়ে যাবে। আরো ৩০ ভাগ মরুভূমি হয়ে যাবে। ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল বলেন, কয়লা থাকলে দূষিত হবে। এটাই প্রাকৃতিক নিয়ম। তাই কয়লা সমগ্র বিশ্বে উঠে যাচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশ কয়লাভিত্তিক প্রকল্প তৈরি করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পৃথিবীর সবচেয়ে দূষিত পদার্থ হচ্ছে কয়লা।



 

Show all comments
  • Moin Hossain ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:৫০ এএম says : 0
    কে শোনে কার কথা
    Total Reply(0) Reply
  • মিনহাজ উদ্দিন রিমন ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:৫২ এএম says : 0
    চরম সত্য কথা। কিন্তু সরকার তো কানেই দেবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • মশিউর ইসলাম ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:৫৩ এএম says : 0
    এই ফাঁদ থেকে পা আর সরকার তুলতে পারবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ তোফায়েল হোসেন ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:৫৩ এএম says : 0
    উন্নত দেশগুলোর খপ্পর থেকে বাঁচা খুব্ কঠিন। এজন্য শক্তিশালী সরকার দরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • নীল আকাশ ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৬:৫৪ এএম says : 0
    দেশের পরিবেশ নষ্ট হয় এমন যে কোনো কাজ থেকে সরকারকে বিরত থাকার অনুরোধ।
    Total Reply(0) Reply
  • মো: আব্দুর রহিম ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ১১:১৭ এএম says : 0
    আমাদের বোধদয় কবে হবে ? রাজনীতিটা পরিশুদ্ধ না হলে কোন সরকারই রাষ্ট্রের স্বার্থে বিদেশী ভক্ষকদের বিরুদ্ধে সাহসী ভুমিকা রাখতে পারবে বলে মনে হয়না ।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ৭ নভেম্বর, ২০১৯, ৮:১৬ পিএম says : 0
    We need to liberate our beloved country from the criminal government------we must use force------if don't use force--nothing will happen ----we just talk and writing on the newspaper---- ?????
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ