পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আম্বার গ্রুপের চেয়ারম্যান শওকত আজিজ রাসেলের কাছে চাঁদা দাবি ও তার পরিবারকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠা বিতর্কিত পুলিশ সুপার (এসপি) হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধে এখনই কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে অভিযোগ না পাওয়ায় আপাতত বদলি শাস্তিতেই থাকছেন পুলিশের বহুল আলোচিত এই কর্মকর্তা।
পুলিশ সদর দফতরের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, এসপি হারুনের বিরুদ্ধে এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত এবং বিভাগীয় শাস্তির বিষয়টি সামনে আসবে।
পুলিশ সদর দফতরের ডিআইজি (মিডিয়া) এস এম রুহুল আমিন সাংবাদিকদের বলেন, ওই ব্যবসায়ী (রাসেল) তার কাছে চাঁদা দাবির বিষয়টি গণমাধ্যমে জানিয়েছেন। পুলিশ সদর দফতরে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ কেউ এখনো দেয়নি। অভিযোগ রিসিভ হলে সেটা অবশ্য তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তাকে (হারুন) জাস্ট বদলি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ব্যবসায়ী এখনই কোনো অভিযোগ না দিলেও গণমাধ্যমে আসা অভিযোগের ভিত্তিতে এসপি হারুনের বিরুদ্ধে তদন্ত করা উচিত। কারণ অভিযোগ গুরুতর হলে অনেক সময় স্ব-উদ্যেগে ব্যবস্থা নেয়া যায়। এতে অসুবিধার কিছু নেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হয়ে একজনের পরিবার-পরিজনকে উঠিয়ে নিয়ে যাবে এটা তো বড় অপরাধ। পুলিশ বাহিনীর ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল করতে দ্রুত তদন্ত করা প্রয়োজন বলে ওই কর্মকর্তা মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে এসপি হারুন পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে প্রকাশ্যে নিরপরাধ মানুষকে তুলে এনে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসিয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের পণ আদায় করতেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ কাজে হারুন ব্যবহার করতেন ডিবি পুলিশকে। নানা অপকর্মের কারণে বিতর্কিত এসপি হারুনের বদলির পর ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। ভুক্তভোগীদের বর্ণনা মতে, হারুন টাকা ছাড়া কিছুই বুঝতো না। নিরপরাধ মানুষকে তুলে নিয়েই দাবি করা হতো মোটা অংকের টাকা। যা পরিশোধ করা ছিল অনেকের সাধ্যের বাইরে।
এসপি হারুনের মুক্তিপণ আদায়ের শিকার সিদ্ধিরগঞ্জের সাধারণ ব্যবসায়ী শাহজাহান। দুই মাস আগে এক সন্ধ্যায় নাসিকের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী হোসেন আলার সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী এলাকার কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ডিবি পুলিশের একটি টিম ব্যবসায়ী শাহজাহানকে তুলে নিয়ে আসে। ডিবি পুলিশের এসআই আলমগীর ওই টিমের নেতৃত্বে ছিলেন। ওই সময় কাউন্সিলর আলা তার কার্যালয়েই উপস্থিত ছিলেন।
কাউন্সিলর আলা বলেন, শাহজাহান তার পরিচিত। সে বালুর ব্যবসা করে। দুই মাস আগে এক সন্ধ্যায় আমার কার্যালয় থেকে ডিবি পুলিশ শাহজাহানকে তুলে নিয়ে যায়। ডিবি অফিসে নিয়ে শুরু হয় শাহজাহানের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। ইয়াবা দিয়ে চালান দেওয়া, ডাকাতির মামলায় শ্যোন এরেষ্ট করা অথবা ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে তার কাছে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। উপায়ন্তর না দেখে ওই ব্যবসায়ী ২০ লাখ টাকা দিতে সম্মত হন। পরে কাউন্সিলর আলাকে ডেকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয় এবং শাহজাহান ২০ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়েছে বলে ডিবির এসআই আলমগীর তাকে জানায়। ওই সময় আলা শাহজাহানের কাছে জানতে চাইলে শাহজাহান তাকে জানায়, পুলিশ তাকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে তাই টাকা দিতে রাজি না হয়ে কোন উপায় নেই। পরে কাউন্সিলর আলার উপস্থিতে সেই রাতে নগদ ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করা হলেও শাহজাহানের মুক্তি মেলেনি। পরদিন সকালে আরও ২২ লাখ টাকা (মোট ৩৯ লাখ ৫০ হাজার) দিয়ে মুক্তি মেলে শাহজাহানের। এ ঘটনার পর থেকে ব্যবসায়ী শাহজাহান অনেকটা মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। কিন্তু এ ঘটনার বিচার কারও কাছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। শুধু শাহজাহান নয়, শাহজাহানের মতো অনেককেই তুলে এনে মোটা অংকের টাকা আদায় করতো হারুনের অনুসারী পুলিশ কর্মকর্তারা।
অভিযোগ রয়েছে এসপি হারুন, উৎসব পরিবহনের পরিচালনা পরিষদের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নিয়েছেন। উৎসব পরিবহন নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দ্ব›দ্ব থাকায় একপক্ষ এসপির স্মরণাপন্ন হয়। একপক্ষের কাছ থেকে ৩০ লাখ টাকা নিয়ে অপর পক্ষের কাছ থেকেও ৩০ লাখ টাকা চাওয়া হয়। কিন্তু ওই পক্ষটির সঙ্গে শেষে ১০ লাখ টাকায় রফা হয়। ৬ লাখ টাকা দেওয়াও হয় হারুনের ঘনিষ্ঠ এক এসআই পদমর্যাদার কর্মকর্তার কাছে। কিন্তু কথা মতো কাজ না করায় উৎসব পরিবহনের ওই পক্ষটি এসপিকে দেয়া ৬ লাখ টাকা ফিরিয়ে নিয়ে যায়। এটিই সম্ভবত একমাত্র ঘটনা যেখানে হারুনকে দেওয়া ঘুষ ফিরিয়ে নেয়ার সাহস দেখিয়েছে কেউ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।