পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, জেলে না পাঠিয়ে টাকা আদায় করতেই খেলাপিদের জন্য ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এতে অনেকই ধারনা করছেন যে ভালো মন্দ এক হয়েছে যাচ্ছে। কিন্তু ভালো মন্দ কখন এক হবে না। যারা ২ শতাংশ দিবে তারা আর ব্যবসা করতে। কারণ তাদের ব্যবসা করতে হলে আবার ঋণের প্রয়োজন হবে। আর যারা ভালো তাদেরতো কোন এক্সট্রা ডিপোজিট বা ঋণ লাগবে না। তবে সকলে যদি আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে তাহলে সবাই দিতে পারবে। খেলাপিদের ঋণ পুনঃতফসিলের বিশেষ সুযোগে ২ শতাংশ কোন বিষয় না। ২ শতাংশ শর্ত মেনেই তারা ঐক্যমত পোষণ করবে যে তারা আমাদের সঙ্গে আছে। তারা এই শর্ত বাস্তবায়ন করার জন্য এগিয়ে আসবে। আমরা এক্ষেত্রে একটি কাজ করতে চাচ্ছি সেটা হলো কাউকে জেলে না পাঠিয়ে টাকা আদায় করতে। যারা ব্যাংক থেকে টাকা নিয়েছে তাদের সকলকে টাকা দিতে হবে। যেভাবেই হোক এ টাকা আমরা আদায় করবোই। এটা রাষ্ট্রের সকল মানুষের টাকা। তবে আমরা সময়টা একটু বাড়িয়ে দিয়েছি।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, হাই কোর্টের রায়টি যখন আসবে তখন আমরা কার্যকর করবো। কার্যকর করতে গেলে আমাদেরকেও সবাইকে একটু সময় দিতে হবে। রায়ে কিছু পরিবর্তন হবে। আমাদের কিছু বাড়তি চাহিদা আছে। আগে রায় আসুক। রায়ের আগে কিছু বলা ঠিক হবে না। বেশি জায়গা পরিবর্তন না মোটামুটি ভাবে ঠিক আছে। কোর্ট আর আমাদের মাঝে কোন রকম বিরোধ নেই। আমরা একই পক্ষ। আমরা যে কাজটি করতে যাচ্ছি সেটি দেশের মানুষের জন্য জনকল্যাণের জন্য। দেশে ব্যবসা বাণিজ্যবান্ধব আইন আমরা করতে যাচ্ছি। এখানে অনেক ইস্যু রয়েছে তা একসাথে করে ব্যাংকিং খাতটাকে দাঁড় করানোটাই হলো আমাদের উদ্দেশ্যে। এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কথা বর্তা হচ্ছে। আসলে আমদেরও কোথায় কোথায় ভুল আছে সেগুলো গুরুত্ব দিয়ে কাজ করতে হবে।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ব্যাংক ঋণে সুদের হার ১০ এর উপড়ে যাবে না। এটা ৯ দশমিক ৭৫ হবে। অথ্যাৎ সিঙ্গেল ডিজিট হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহারে ও বাজেটে সেটা উল্লেখ আছে। যাই হোক আমরা ব্যাংক ঋণে সিঙ্গেল ডিজিট সুদ আদায় করবো। এটা বাস্তবায়নের জন্য আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে ব্যাংক, ঋণ গ্রহিতা, সরকার ও দেশের মানুষ যেন না ঠকে। সে কাজ করতে হলে একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ সবাইকে সম্পৃক্ত করে এ কাজটি করতে হবে।
ব্যাংকগুলো এখনও কোন কমপাউন্ট সুদের হার করতে পারেনি এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখানে আমরা এখন পর্যন্ত কিছু করতে পারি নি। তবে ব্যাংকগুলো করবে। যখন আমরা রায়ের কপি হাতে পাব। তখন বলা হবে কমপাউন্ট সুদের হার করতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানবে না। এমন কোন ব্যাংকের অস্তিত্ব বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না। যদি না মানে সেজন্য আমরা আইনে পরিবর্তন নিয়ে আসতেছি। প্রয়োজনে মার্জার করা হবে এ ধরনে পরিবর্তন নিয়ে আসতেছি। সুতরাং সরকারের সিদ্ধান্ত মানবে না এটা হতেই পারে না। তবে যারা মানবে তাদেরকে আমাদের সাহায্য করতে হবে। এজন্য আমাদের যে সুযোগ সুবিধাগুলো আছে তা দিয়ে সহযোগিতা করবো।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, দুঃখের বিষয় হলো গতবছরই তারা ব্যাংখ ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার কথা বলেছিল। এজন্য তারা সরকারের কাছে কিছু শর্ত দিয়েছিল সরকার তা পুরণ করেছে। এরমধ্যে অনেকেই সিঙ্গেল ডিজিটে আসছে। আবার কেউ কেউ আসে নি। তাদেরকে আসতে হবে না হলে তাদের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। এক্ষেত্রে কাওকে ছাড় দেয়া হবে না। আইন সবার জন্য সমান। তারা ব্যবসা করলে লাভ করবে কেউ কম কেউ বেশি করবে। কিন্তু রেইট সকলের এক হতে হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এ অবস্থানে আসতে এদেশের মানুষের অনেক অবদান রয়েছে। আমাদের তাঁতি, শ্রমিক, কৃষক, শিক্ষক, কামার, কুমার, জেলে, সাংবাদিক সকলেরই অবদান রয়েছে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। আমরা সৌভাগ্যবান কারণ সুন্দর সময়ের মধ্যদিয়ে এগোচ্ছি। আমাদের এগিয়ে যাওয়ার রাস্তাগুলো হচ্ছে সংস্কার। বিভিন্ন খাতে আমাদের সংস্কার মুখি পদক্ষেপ নিতে হবে। যেমনÑপুজিবাজার, ব্যাংকিংখাত, ননব্যাংকিং খাত, এনবিআর, শিক্ষাসহ সকল ক্ষেত্রে সংস্কার লাগবে। আমরা যদি সংস্কার না আনি তাহলে পিছিয়ে থাকবো। অন্যান্য দেশ এ সকল কাজ ২৫ বছর আগে করেছে। আমরা কিছুতেই কোন জায়গায় হাত দিতে পারি নাই।
ব্যাংকিং কমিশনের বিষয়ে কি ভাবা হচ্ছে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকিং কমিশন যে আমরা করবো সেটা বাজেটেও বলেছি। সুতরাং আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের আন্ডারেই ব্যাংকিং কমিশন করবো। শিগিরই করা হবে।
২৪২৯৬ কোটি টাকায় পাঁচ ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে আরো কার্যকর এবং সুপরিসর করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বিমানবন্দটির স¤প্রসারণে মোট ব্যয় হবে ২০ হাজার ৫৯৮ কোটি টাকা। বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে অ্যাভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি)। এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবসহ মোট ৫টি ক্রয় প্রস্তাব সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যার মোট মূল্য ২৪ হাজার ২৯৬ কোটি ১৮ লাখ ৬৮৭ টাকা।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, জাপানের ওডিএ লোন এবং সরকারি অর্থায়নে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর স¤প্রসারণের একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এজন্য মোট ব্যয় হবে ২০ হাজার ৫৯৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৪ হাজার টাকা।
বৈঠকে রূপপুর পরমাণু বিদুৎকেন্দ্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৩ হাজার ৪৪৯ কোটি ৫ লাখ টাকার ফিজিক্যাল প্রটেকশন সিস্টেম (পিপিএস) প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকে ২০১৯-২০১০ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রথম লটে ২৫ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। এছাড়া সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ দুই লাখ টন ইউরিয়া নিরবিচ্ছিন্নভাবে আমদানির লক্ষ্যে লটভিত্তিক মূল্য ৫০ কোটি টাকার উর্ধ্বে গেলেও, আলাদা অনুমোদনের পরিবর্তে বিশেষ বিবেচনায় এ বছরের অন্যসব লটের অনুমোদনের ক্ষমতা শিল্পমন্ত্রীকে দেয়ার একটি প্রস্তাব অনুমোদন হয়। প্রথম লটে ২৫ হাজার টন বাল্ক গ্রানুলার ইউরিয়া সারের প্রতি টনের দাম ২৬৫ দশমিক ২৫ ডলার। সে হিসেবে বাংলাদেশি টাকায় মোট ব্যয় হবে ৫৪ কোটি ২৯ লাখ ২৯ হাজার টাকা।
বৈঠকে ‘চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি’ এর একটি সাব কম্পোনেন্টের অন্তর্ভুক্ত ‘সিস্টেমেটিক ইংলিশ টিচিং ফর প্রাইমারি টিচার্স’ এর আওতায় ট্রেনিং অব দি মাস্টার ট্রেইনার্স ইন ইংলিশ সেবা ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪৬ কাটি ৬৮ হাজার ৬৯ লাখ টাকা।
এছাড়া বৈঠকে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বের্ডের ‘খুলনা জেলার ভুতিয়ার বিল এবং বর্ণাল সলিমপুর কোলাবাসুখালি বন্য নিয়ন্ত্রণ, নিস্কাশন প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়)’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্ট (বিডিপি) লিমিটেড এর মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে বাস্তবায়নাধীন আঠারোবাড়ী নদীর ৪৯ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার ও ৮ ডেন্টের ১টি ড্রেনেজ রেগুলেটর নির্মাণকাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৪৭ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।