Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শাহপরীর দ্বীপে প্রতিরক্ষা বাঁধ খুশিতে এলাকাবাসী

৪০ হাজার মানুষের জান মাল রক্ষার চেষ্টা

জাকের উল্লাহ চকোরী, কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : ৬ নভেম্বর, ২০১৯, ১২:০০ এএম

টেকনাফের দুঃখখ্যাত শাহ পরীর দ্বীপে বহু বছর পর ১২১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা বাঁধ। এতে রক্ষা পাবে দ্বীপে বসবাসরত ৪০ হাজার মানুষ, ১০ হাজার একর ফসলী জমি, চিংড়িঘের, লবন মাঠ, গ্রামীণ রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও দ্বীপের একমাত্র চলাচল যোগ্য রাস্তাটি। ইতিপূর্বে অরক্ষিত বাঁধ দিয়ে সাগরের লোনা পানি প্রবেশ করায় কোটি কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে শাহ পরীর দ্বীপের মানুষের। বর্তমানে শক্তিশালী বাঁধ নির্মিত হওয়ায় তারা মহাখুশি।
পাউবো’র নির্বাহী প্রকৌশলী তয়ন কুমার ত্রিপুরা জানান, পোল্ডার নং ৬৮ এর সী- ডাইক অংশে ৩ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙ্গে লন্ড-ভন্ড হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এ বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হলে সুফল পাবে অবহেলিত দ্বীপবাসী।

কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের সদর উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম জানান, ১৯৬৮-৭০, ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘুর্ণিঝড় এবং ২০১২ সালের জুন মাসে সৃষ্ট নি¤œ চাপের ফলে ভারী বর্ষণ ও সমুদ্রের ঢেউয়ের প্রচন্ড আঘাতে শাহপরীর দ্বীপে ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে খান-খান হয়ে যায়। প্রতিনিয়ত জোয়ার ভাটা চলে পুরো দ্বীপ এলাকায়। এতে জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও চিংড়িঘের লবন মাঠ, ফসলী জমি ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। সরকার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে অরক্ষিত ও ক্ষতিগ্রস্ত অংশে প্রতিরক্ষামূূলক কাজসহ সী-ডাইক পুন: নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। যা বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

কক্সবাজার পাউবো’র টেকনাফ শাখা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান জানান, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড দরপত্র আহবান করলে ডক ইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়াকর্স লি: বাংলাদেশ নৌ বাহিনী সোনাডাঙ্গা নারায়নগঞ্জ কাজটি পায়। পরে তারা সাব ঠিকাদার হিসেবে এসএস ইঞ্জিনিয়ারিং এর মালিক শাহাব উদ্দিনকে কাজটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব প্রদান করেন। সাব ঠিকাদারকে বাঁধ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশোধিত সময় বেঁধে দেয়া হয় ২০২০ সালের ২০ জুন।

শাখা কর্মকর্তা আরো জানান, এখানে ৩ দশমিক০০৮ কিলোমিটার ভাঙ্গা বাঁধের মধ্যে ২ দশমিক ৮৮৫ কিলোমিটার এলাকায় নির্মিত হবে প্রতিরক্ষা মূলক বাঁধ। বাঁধের সমুদ্র সাইটে বসানো হবে ১লাখ ২২ হাজার শক্তিশালী পাথরের তৈরি সিসি বøক। এ ছাড়া বাঁধের সামনের অংশে সাগরে ডাম্পিং করা হবে ৭৪ হাজার পাথরের তৈরি শক্তিশালী সিসি বøক। যা সমুদ্রের প্রচন্ড ঢেউয়ের আঘাত থেকে রক্ষা করবে পুরো বাঁধটিকে। বাঁধের প্রস্থ হবে ৬ মিটার ও উচ্চতা হবে ৭ মিটার। একই সাথে ১৫০ মিটার এলাকায় নির্মিত হবে মাটির বাঁধ। অবশিষ্ট এক কিলোমিটার বাঁধ প্রকল্পের আওতায় বাইরে থাকায় ওই অংশ টুকুও প্রতিরক্ষামুলক কাজের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন দ্বীপবাসি।

বর্তমানে কাজের ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। বাকি কাজ আগামী বর্ষার আগে শেষ না হলে দ্বীপবাসির দু:খ থেকে যাবে এ অভিমত দ্বীপের সচেতন জনগনের।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ